এডভোকেট উকিল ব্যারিস্টার হওয়া অনেকেরই স্বপ্ন থাকে। এডভোকেট উকিল ব্যারিস্টার একজন ব্যক্তি চাইলেই হতে পারবেনা। তবে অনেকেই উকিল হওয়ার জন্য কোন বিষয় নিয়ে পড়তে হবে তা জানেন না। আপনার যদি উকিল এডভোকেট ব্যারিস্টার হওয়ার স্বপ্ন বা ক্যারিয়ার হিসেবে নিতে চান তাহলে আপনাকে আজ থেকে প্রস্তুতি শুরু করতে হবে। এডভোকেট উকিল হওয়া যেমন একটি স্বাধীন পেশা তেমনি এইটি হওয়ার জন্য আপনাকে সর্বাধিক চলমান বিষয়ের উপর জ্ঞান রাখতে হবে।
তাই আজকে যারা এডভোকেট উকিল ব্যারিস্টার হওয়ার স্বপ্ন দেখেন তাদের জন্য এডভোকেট ব্যারিস্টার উকিল হওয়ার জন্য কোন বিষয় নিয়ে পড়তে হবে ,এডভোকেট ব্যারিস্টার উকিল হওয়ার শিক্ষাগত যোগ্যতা , উকিল এডভোকেট ব্যারিস্টার হতে কত টাকা লাগে , বাংলাদেশে আইনজীবী হওয়ার নূন্যতম বয়স , সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হওয়ার যোগ্যতা ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে এই আর্টিকেলের মধ্যে। তাই অবশ্যই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ার চেষ্টা করবেন।
উকিল হওয়ার জন্য কোন বিষয় নিয়ে পড়তে হবে/এডভোকেট ব্যারিস্টার উকিল হওয়ার শিক্ষাগত যোগ্যতা
আপনি যদি আইনজীবী হতে চান তাহলে সর্বপ্রথম আপনাকে আইন বিষয়ে ডিগ্রী অর্জন করতে হবে।
১. বাংলাদেশের স্বীকৃত যে কোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আপনাকে ৪ বছরের অনার্স এলএলবি অথবা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২ বছরের এলএলবি পাস কোর্স সম্পূর্ণ করতে হবে।
২. তার পরবর্তীতে বাংলাদেশের বার কাউন্সিল নিবন্ধন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। ১০০ নম্বরের বহুনির্বাচনী প্রশ্ন, ১০০ নম্বরের লিখিত ও ৫০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষায় আলাদা আলাদা পাশ করার পর একজন ব্যক্তি একজন আইনজীবী ও এডভোকেট বার কাউন্সিলের এন্ডরোলমেন্ট হয়।
এছাড়াও এলএলবি পাস কোর্সে ভর্তি হওয়ার জন্য একজন শিক্ষার্থীকে যে কোন বিষয়ের ওপর ৪ বছর মেয়াদী অনার্স পাস কোর্সের সার্টিফিকেট বা ৪ বছর মেয়াদী ডিগ্রী পাস কোর্সের সার্টিফিকেট থাকতে তাহলে বুঝতেই পারছেন উকিল হওয়ার জন্য কোন বিষয় নিয়ে পড়তে হবে ।
উকিল এডভোকেট ব্যারিস্টার হতে কত টাকা লাগে
দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে আইন বিভাগের পড়ার খরচ একেক রকম হয়ে থাকে।
১. পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ৪ বছরের সাধারণত ৪০-৯০ হাজার টাকা খরচ হয়।
২. প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ৩ লক্ষ থেকে ৪ লক্ষ টাকা খরচ হয়।
৩. জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ৪০ – ৬০ হাজার টাকা খরচ হয়।
বাংলাদেশে আইনজীবী হওয়ার নূন্যতম বয়স
বাংলাদেশে আইনজীবী হওয়ার ন্যূনতম বয়স ২১ বছর। এর উপরে আপনি যেকোনো বয়সে বার কাউন্সিলের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ নিতে পারবেন। কিন্তু ৪০ বছরের বেশি হলে বার কাউন্সিল এর বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা কম পাওয়া যায়। তবে সব বার কাউন্সিলে এমন তা কিন্তু নয়।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হওয়ার যোগ্যতা
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হওয়াটা সকল এডভোকেটরেই স্বপ্ন হয়ে থাকে। আপনি যদি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হতে চান তাহলে
আপনার কিছু যোগ্যতা থাকতে হবে। নিচে নির্মুক্ত যোগ্যতাগুলো আপনার প্রয়োজন।
১. ৪ বছর মেয়াদি আইনের স্নাতক বা ২ বছর মেয়াদী ডিগ্রী পাস কোর্স।
২. বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের এডভোকেট হতে হবে।
৩. বাংলাদেশের কোন নিম্ন আদালতে সর্বনিম্ন ২ বছরের চর্চা করার অভিজ্ঞতা অথবা এলএলবি ডিগ্রীসহ সুপ্রিম কোর্টের একজন সিনিয়র আইনজীবীর অধীনে ২ বছরের কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
৪. দেওয়ানী মামলা সর্বনিম্ন ২৫ টি এবং ফৌজদারি মামলার ২৫ টি মামলায় কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
৫. Bangladesh legal Practitioners and bar council rules, 1972 (65)2) এর অধীনে মৌখিক ও লিখিত পরীক্ষায় ৫০% নাম্বার পেয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে।
এডভোকেট ও ব্যারিস্টার এর মধ্য পার্থক্য কি?
যারা আইনজীবী হিসেবে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলে তা তালিকাভুক্ত হন তাদেরকে আমরা এডভোকেট বলে থাকি। ঠিক তেমনি ভাবে যুক্তরাজ্যে আইনের কোর্স সম্পূর্ণ করে থাকেন তাদেরকে ব্যারিস্টার বলে থাকে।
ব্যারিস্টার হওয়ার জন্য প্রধানত দুইটি রুট থাকে প্রথমত একাডেমিক রুট দ্বিতীয়ত প্রফেশনাল রুট। একাডেমিক রুট এ ব্যারিস্টার হওয়ার জন্য প্রথমত আপনাকে ব্রিটিশ কোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনের উপর গ্রাজুয়েশন করতে হবে এরপর ওখানে কিছু নির্ধারিত বিশ্ববিদ্যালয়তে বা ট্রেনিং কোর্সের জন্য আবেদন করতে হবে। ওই বিশ্ববিদ্যালয় যদি আপনার এপ্লিকেশন গ্রহণ করে তারপর সেখানে নয় মাসের একটি বার ট্রেনিং কোর্স সম্পূর্ণ করতে হবে যেখানে কমপক্ষে ৬০% মার্কস পেয়ে আপনাকে পাস করতে হবে।
এর সাথে সাথে আপনাকে যেকোনো একটি ইউনিয়ন মেম্বার হতে হবে এবং সেখানে বারটি কোয়ালিফিকেশন বা ডিনারে অংশগ্রহণ করতে হবে বারটি কোয়ালিফিকেশন বা ডিনার টি successfully পাস করার পরে আপনার সংশ্লিষ্ট ইউএনএ আপনাকে অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হবে যেটাকে ওদের পরিভাষায় call to the bar বলা হয়ে থাকে।
এবং প্রফেশনাল রুট এর ক্ষেত্রে কেউ যদি বাংলাদেশে এডভোকেট হিসেবে তিন বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন হন তাহলে যুক্তরাজ্যের বার স্ট্যান্ডার্ড বোর্ড বা বিএসবিতে ব্যারিস্টার হওয়ার জন্য সরাসরি আবেদন করতে পারবেন। বার স্ট্যান্ডার্ড বোর্ড বা বিএসবি সে আবেদন গ্রহণ করে এরপরে লন্ডনে বিপিপি বিশ্ববিদ্যালয়তে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। সে রেস্টেশনের মেয়াদ থাকবে ২ বছর এই দুই বছরের মধ্যে কমপক্ষে চারবার পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে এবং যেকোনো বারে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে পাস করতে হবে।
এর সাথে সাথে লিংকন ইনসহ যে কোন একটি ইউনিয়নের সদস্য হতে হবে এবং ছয়টা ডিনার সেশন বা কোয়ালিফিকেশনে অংশগ্রহণ করতে হবে। সে ডিনার বা কোয়ালিফিকেশনে সম্পন্ন হওয়ার পরে এবং বিপিপি বিশ্ববিদ্যালয়তে অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় পাস করার পরে সংশ্লিষ্ট ইন আপনাকে ব্যারিস্টার হিসেবে অ্যাওয়ার্ড প্রদান করবে। যেটা আমি আগেই বলেছি তাদের পরিভাষায় call to the bar বলা হয়ে থাকে।
তবে প্রফেশনাল রুট এর ক্ষেত্রে একাডেমিক কোন ক্লাস হবে না। এখানে নিজে নিজেই পড়াশোনা করে সরাসরি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে।
এই পোস্টের শেষ মন্তব্য
আশা করি এডভোকেট ব্যারিস্টার উকিল হওয়ার জন্য কোন বিষয় নিয়ে পড়তে হবে তা আপনারা বুঝতে পেরেছেন। আপনি যদি এডভোকেট ব্যারিস্টার উকিল হতে চান তাহলে আপনাকে এই মুহূর্ত থেকে প্রস্তুতি নিতে হবে। আজকের আর্টিকেলে এডভোকেট ব্যারিস্টার উকিল হওয়ার জন্য কোন বিষয় নিয়ে পড়তে হবে তার সমস্ত তথ্য আপনাদের দিয়েছি।
এছাড়াও যারা নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন নিয়ে পড়াশোনা করতে চান বা নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন পড়ার খরচ জানতে চান তারা 2024 – এ নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন পড়ার খরচ কত? এই আর্টিকেলটি পড়তে পারেন সম্পূর্ণ বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এছাড়াও আরো নতুন নতুন তথ্য পেতে বাংলায় ইনফোর ভিজিটের আমন্ত্রণ জানিয়ে আজকের পোস্ট এখানেই শেষ করলাম। ধন্যবাদ সবাইকে।
এডভোকেট ব্যারিস্টার উকিল হওয়ার জন্য কোন বিষয় নিয়ে পড়তে হবে এই সংক্রান্ত আরো কিছু জানতে চাইলে ভিডিওটি দেখতে পারেন।
এডভোকেট ব্যারিস্টার উকিল হওয়ার জন্য কোন বিষয় নিয়ে পড়তে হবে এই সংক্রান্ত কিছু সাধারণ প্রশ্ন আপনাদের সামনে তুলে ধরা হলো।
FAQ:
১. এল এল বি কত বছরের?
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই বছরের এল এল বি পাস কোর্স সম্পূর্ণ হয়।
২. বাংলাদেশে ব্রিটিশ আইনের জন্য কোন বিশ্ববিদ্যালয় ভালো?
লন্ডন কলেজ অফ লিগ্যাল স্টাডিজ এলসি এলএস (দক্ষিণ) এল এল শিক্ষার্থীদের জন্য।
৩. বাংলাদেশে আইনজীবী হওয়ার নূন্যতম বয়স কত?
বাংলাদেশে আইনজীবী হওয়ার নূন্যতম বয়স ২১।
৪. জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আইন পড়ার খরচ কত হয়?
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আইন পড়ার খরচ ৪০ – ৬০ হাজার টাকা সামান্য কিছু কম বেশিও হতে পারে