আমাদের ব্যস্ত জীবনে নিজের শরীর কে সুস্থ রাখতে ডায়েট কে কন্ট্রোল করে চলা একটি খুব ই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
কিভাবে ডায়েট কন্ট্রোল করবো ? সেটি জানার আগে আমরা আগে একটু জেনে নি ডায়েট টা আসলে কি ?
ডায়েট কিংবা খাদ্য হল একজন ব্যক্তির বা অন্য যেকোনো জীবের দ্বারা খাওয়া খাবারের সমষ্টি। ডায়েট শব্দটি স্বাস্থ্য বা ওজন ব্যবস্থার একটি নির্দিষ্ট পরিমান পুষ্টি গ্রহণ করার ব্যবহার কে বুঝায়।
আমাদের শরীর কে সুস্থ রাখতে পুষ্টিযুক্ত খাদ্য আমাদের দৈনিন্দিন জীবনের বা ডায়েট চার্ট এ রাখা দরকার। আমরা খাবার তো খাবো কিন্তু তারসাথে আমাদের ডায়েট কন্ট্রোল এর উপর ও খেয়াল রাখতে হবে।
আমার সবাই জানি ডায়েটিং হল শরীরের ওজন কমাতে, বজায় রাখতে সাহায্য করে। আমরা যাতে ডায়াবেটিস এবং স্থূলতা থেকে শরীর কে বাঁচিয়ে রাখতে ও বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করতে পারি। তাই নিয়ন্ত্রিত উপায়ে খাবার খাওয়ার অভ্যাস আমরা শুধু ডায়েট কন্ট্রোল এর মাধ্যমেই করতে পারবো।
আজকে আমরা আপনাদের কে এমন কয়েকটি উপায় বলে দিবো যারদ্বারা আপনারা আপনাদের ডায়েট কে খুবই সহজ ভাবে কন্ট্রোল করতে পারবেন।
ডায়েট চার্ট এর প্রয়োজনীয়তা কতটুকু
আপনাকে মনে রাখতে হবে ডায়েট মানেই না খেয়ে থাকা নয়। ডায়েট মানে পরিমিত পরিমাণে সুষম খাবার গ্রহণ করার প্রক্রিয়া। ডায়েটে পুষ্টিকর খাবার সঠিক পরিমাণে গ্রহণ না করলে সেটা আমাদের শরীরের অনেক প্রভাব পড়বে।
আমাদের সর্ব প্রথম ই দরকার একটি সঠিক ডায়েট চার্ট। আমাদের বয়স, ওজন, উচ্চতা এবং কতটুকু ওজন কমাতে হবে সেই অনুযায়ী ডায়েট চার্ট তৈরি করতে হবে।
আমরা এখানে যে শুধু মাত্র পুরুষ ও মহিলার জন্য ডায়েট চার্ট তৈরী করেছি তা কিন্তু নয় বরং ছোট বাচ্ছাদের জন্য ও একটি চার্ট তৈরী করে দিয়েছি যা আপনাদের জন্য অনেক উপকারী হবে বলে আসা করছি। কারণ ডায়েট সবার জন্য ই সমপ্রয
আমাদের সব সময় চেষ্টা করতে হবে লবণবর্জিত খাদ্য গ্রহণ করা। খাবার মেপে মেপে খাওয়ার প্রয়োজন নেই। আপনি মোটামুটি একটা হিসাব করে খেলেই যথেষ্ট।
মৃদু পানীয় যেমন শরবত, কোকা-কোলা, ফান্টা ইত্যাদি, সব ধরণের মিষ্টি, তেলে ভাজা , চর্বিযুক্ত মাংস, তৈলাক্ত মাছ, বাদাম, শুকনা ফল, ঘি, মাখন, সর ইত্যাদি না খাওয়াই ভালো । কারণ শর্করা ও চর্বি জাতীয় খাদ্য ক্যালরির প্রধান উৎস।
নিয়মিত ব্যায়ামের পাশাপাশি ওজন কমাতে পরিশ্রম এবং আমাদের খাদ্য তালিকায় পরিবর্তন আনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
প্রত্যেকদিনের ডায়েট খাবার
- সকাল বেলার খাবার – দুধ ছাড়া চা বা কফি দুধ ছাড়া , দুটো আটার রুটি, এক বাটি সবজি সিদ্ধ এক বাটি , কাঁচা শসাএক বাটি শসা ওজন কমাতে সাহায্য করে।
- মধ্য দুপুরের খাবার – একটি ডিমের সাদা অংশ ও টক জাতীয় ফল।
ডিম শুধু পেটই ভরায় না এতে প্রচুর পরিমানে প্রোটিন থাকে, এটি ওজন কমাতেও সাহায্য করে থাকে। একটি ডিমে ক্যালরির মাত্রা ১০০-রও কম হয়। ডিম আপনার সারাদিনের এনার্জি ধরে রাখতে সক্ষম।
ফল এ প্রচুর পরিমানে ফাইবার থাকে তাই এটা আমাদের শরীরের মেদ ঝরাতে সাহায্য করে।
- দুপুরের খাবার – ৫০-৭০ গ্রাম ভাত। মাছ বা মুরগির ঝোল এক বাটি। এক বাটি সবজি অথবা শাক, সালাদ, এক বাটি ডাল ও ২৫০ গ্রাম টক দই। স্যালাডকে খাদ্য তালিকায় রাখতেই হবে।
- বিকালের খাবার – চা বা কফি দুধ ছাড়া, মুড়ি বা বিস্কুট দুটি বা এক বাটি চিয়া বীজ।
ওজন কমানোর জন্য এই বীজ টি অনেক জনপ্রিয়। এই বীজটি দীর্ঘ সময়ের জন্য শুধু পেটই ভরিয়ে রাখে না, বরং খিদে নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে। ফাইবারে পরিপূর্ণ এই বীজটি।
- রাতের খাবার – আটার রুটি দুটো , এক বাটি সবুজ সবজি , এক বাটি ডাল, এক বাটি রায়তা।
আরও পড়ুন: মধু কি? পরিমান মতো আমরা মধু কেন খাবো ? ২০২৩ এর ১০টি কারণ
আপনার খাওয়া নিয়ন্ত্রণের সহজ ৭টি উপায়
১.চিউ গাম রাখুন দোকানের তালিকায়
একটি গবেষণা করে দেখা গেছে যে চিউইং গাম চিবানোর সময় লোকেদের খিদের অনুভব কম হয়। কম জাঙ্ক-ফুডের ক্ষুধা অনুভব করে।
ফলস্বরূপ, তারা চিপসের মতো মতো স্ন্যাক খাবার কম কিনে এবং শাকসবজির মতো আরও স্বাস্থ্যকর খাবার কিনছে। আপনারা নিশ্চয় শুনেছেন যে ক্ষুধার্ত হলে খাবার কেনা উচিত নয়। তাই এখানে বিকল্প হিসেবে চিউ গাম রাখতেই পারেন।
২ .প্রথমে স্বাস্থ্যকর জিনিস পরিবেশন করুন
আপনি যেখানেই খাবার খান না কেন প্রথমেই আপনার প্লেট এ স্বাস্থ্যকর খাবার প্লেট এ রাখুন। কারণ একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে বুফে তে প্রথমেই কোনও বেশি মাত্রায় ক্যালোরি থাকা খাবার গুলো পরিবেশন করা হয়ে থাকে। যার ফলে আমাদের প্লেটে আগেই চর্বিযুক্ত মাংস এর স্তূপ হয়ে যায়। সুতরাং আপনাকে প্রথমেই ভাবতে হবে যে স্বাস্থ্যকর খাবার দিয়ে আপনার থালা কে সাজাতে হবে।
.৩.নগদ টাকা দিয়ে আপনার দুপুরের খাবার কিনুন
এখানেও সমীক্ষার ফলাফল এ বুঝা গেছে যে আপনি যখন কার্ড দিয়ে অর্থপ্রদান করেন তখন জাঙ্ক ফুড ও ডেজার্ট কেনা আরও সহজ হয়ে পড়ছে। কিন্তু আপনি যখন খবর গুলো নগদ অর্থ দিয়ে কিনতে যাবেন তখন একবার হলেও একবার হলেও জাঙ্ক ফুড জাতীয় খাবার থেকে বিরত থাকবেন। এই সমীক্ষা একটি বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীর মধ্যে করা হয়েছিল। এবং এটি প্রমাণিত।
৪.টিভিতে রান্নার অনুষ্ঠান দেখা বন্ধ করুন
এটি তো খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার আপনি যদি ওজন কমানোর চেষ্টা করেন, তাহলে টিভিতে খাবার দেখলে আপনি তখনই সেই খাবার খেতে চাইবেন। খাদ্য-বিহীন প্রোগ্রামিং, কিংবা গবেষণা শো ইত্যাদি দেখার চেয়ে লোকেরা খাদ্য-সম্পর্কিত শো দেখার সময় ডায়েটে লোকেরা বেশি পরিমান খাবার খায়।
৫.নীল ও ছোট প্লেট ব্যবহার করুন
গবেষণায় দেখা গেছে আপনার খাবারের রঙ এবং আপনি নিজেকে কতটা খাবার পরিবেশন করেন তার মধ্যে পার্থক্য করতে পারে। জানি আপনি বিশ্বাস নাও করতে পারেন কিন্তু এটা সত্য যে আপনার খাবার প্লেটের রঙের সাথে যদি মিশে যায় তখন আপনি তত বেশি খবর গ্রহণ করতে পারবেন। তাই ভিন্ন রঙে প্লেট ব্যবহার করলে আপনার খাবারের প্রবণতা কিছুটা হলেও কমবে। সেইভাবে ছোট প্লেট ও নীল রঙের পাত্রে খাবার গ্রহণ করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।
৬.লালসা করার আগে বিরাম নিন
বিরক্ত বোধ বা ক্লান্ত ও উত্তেজনার কারণে খাওয়া আপনার নিয়ন্ত্রণের বাইরে হতে পারে । তখন একটু বিরুতি নিন । যখন খিদে পাবে তখন 5 থেকে 10 মিনিটের জন্য অন্য কিছুতে নিজেকে আটকে রাখুন। দেখুন আপনি এখনও খেতে চাচ্ছেন কিনা ? একটু হলেও আপনার তখনের খিদে কিছুটা ম্লান হবে এটা নিশ্চিত।
৭ .ধীরে ধীরে খান ও জল পান করুন
আপনি যদি ক্যালোরি কমাতে চান ধীরে ধীরে খাওয়া শুরু করুন। ছোট কামড় ও খাবার ধীরে ধীরে চিবিয়ে খান । একটু বেশি সময় নিয়ে খান। এবং খাওয়ার সময় অবৈশ্যই জল পান করুন। ক্যালোরি কমাতে এই সহজ পদক্ষেপগুলি খুবই কার্যকরী ফলাফল দিয়েছে।
আরও পড়ুন: ২০২৩ এ ত্বকের যত্নে কিছু প্রয়োজনীয় টিপস এন্ড টিকস।
এছাড়া আরো কিছু উপায়ের মাধ্যমে ডায়েট কন্ট্রোল করতে পারি
ভাত ছাড়া ডায়েট কন্ট্রোল বা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ
যদিও বাঙালির প্রধান খাদ্য হচ্ছে ভাত। তাও আজকাল ব্যস্ত সময়ের জন্য অথবা কাজের ক্ষেত্রে ঘরের বাইরে থাকার কারণে অনেকেই আমরা ভাত ছাড়া ডায়েট কন্ট্রোল এর উপায় খুঁজতে থাকি। আমরা এর এ কিছু উপায় নিয়ে এখন আলোচনা করবো যে ডায়েট গুলো মহিলা কিংবা পুরুষ সবার জন্যই সমোপযোগী।
- আস্ত ডিম
উচ্চ কোলেস্টেরল হওয়ার ভয় আমাদের সবার ই আছে। একটি আস্ত ডিম ডায়েট এর জন্য উপযোগী। এটি আপনার শরীর কে সুস্থ ও প্রোটিন সমৃদ্ধ রাখতে সাহায্য করে।
ডিম অবিশ্বাস্যভাবে পুষ্টিযুক্ত খাদ্য । এর প্রায় সব পুষ্টিগুণ কুসুমে পাওয়া যায় এতে কোলিন এবং ভিটামিন ডি থাকে। যদিও ডিমের সাদা অংশ প্রতিটিতে 4-6 গ্রাম প্রোটিন থাকে।
যেহেতু ডিমে প্রোটিন এবং চর্বি বেশি থাকে ,তাই আপনাকে ভাতের বদলে সঠিক পূর্ণতা দিতে সাহায্য করে।
কারণ আপনার শরীরের অভ্যন্তরীণ পূর্ণতা যদি থাকে তখন আপনার খিদের প্রতিক্রিয়া আপনাকে একটি স্বাস্থ্যকর ওজনে পৌঁছাতে বা বজায় রাখতে সহায়তা করতে পারবে।
আপনার শরীরে খাদ্যের পূর্ণতা থাকলে আপনি অতিরিক্ত খাবার খেতে বিরত থাকবেন। তাই ডিম খেলে আপনার ওজন কমানোর লক্ষ্যগুলিকে পূর্ণ করতে সাহায্য করবে। আপনার শরীরের মধ্যে দিনে স্বাস্থ্যকর পুষ্টির প্যাকিং এর তৈরী হবে।
- পাতাযুক্ত সবুজ শাক
পাতাযুক্ত সবুজ শাকগুলি ফাইবার এবং মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টগুলির একটি ভাণ্ডার তাই এটি প্রায় সবসময়ই আপনার ডায়েটে একটি দুর্দান্ত সংযোজন স্থাপন করে।
আপনার খাদ্যতালিকায় শাক-সবুজ যোগ করা বাঞ্চনীয়। কারণ তৃপ্ত বোধ করতে এবং কম পুষ্টিকর খাবারের লোভ কমাতে আপনাকে এটি সাহায্য করবে। আপনার শরীরের খিদের প্রক্রিয়া এবং পূর্ণতার সংকেতগুলিতে প্রতিক্রিয়া জানাতে সাহায্য করবে। স্বাস্থ্যকর ওজন কমানোর লক্ষ্যে আপনাকে সহায়তা করবে।
শাক -সবজি ভাতের বিকল্প হতেই পারে কারণ এতে রয়েছে বেশ কয়েকটি বৈশিষ্ট্য।যা একটি স্বাস্থ্যকর ওজন পৌঁছানোর বা বজায় রাখার জন্য জরুরি। উদাহরণ হিসেবে যদি বলি তারা ফাইবার ও পুষ্টিগুলি প্যাক করে রেখে আপনাকে পরিতৃপ্ত ,হাইড্রেটেড রাখতে সাহায্য করে।
শাক-সবজিতে ভিটামিন কে বেশি থাকে যা আমাদের ডেইলি ডায়েট এর জন্য উপযোগী। (281)
- স্যালমন ফিশ
এই সামুদ্রিক মাছ টি চর্বিযুক্ত মাছ ও অবিশ্বাস্যভাবে পুষ্টিকর এবং খুব সন্তোষজনক। উচ্চ মানের প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর চর্বি এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি দিয়ে ভরপুর এই মাছ যা আপনার শরীরকে তৃপ্ত রেখে আপনাকে একটি স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখতে অনেক সহায়তা করে।
সালমন ওমেগা -3 ফ্যাটি অ্যাসিডে পূর্ণ , যা শরীরে প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। কারণ স্থূলতা এবং বিপাকীয় রোগে প্রদাহ একটি প্রধান ভূমিকা পালন করে।
সামুদ্রিক খাবার গুলোতে প্রচুর পরিমানে আয়োডিন থাকার ফলে এটি আমাদের শরীরের থাইরয়েড ফাঙ্কশন কে সঠিক ভাবে বজায় রাখতেও সাহায্য করে।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক লোক তাদের আয়োডিনের চাহিদা পূরণ করে না। সেই ক্ষেত্রে স্যালমন ফিশ অনেক উপকারী।
আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ মাছ আছে যেমন ম্যাকেরেল, ট্রাউট, সার্ডিন, হেরিং, টুনা এই ধরণের ফ্যাটি মাছ আপনার স্বাস্থ্যের জন্য দুর্দান্ত উপযোগী।
- ক্রুসিফেরাস সবজি
ব্রকলি, ফুলকপি, বাঁধাকপি এবং ব্রাসেলস স্প্রাউট এইগুলো হচ্ছে ক্রুসিফেরাস সবজি। এগুলিতে ফাইবার বেশি থাকে অন্নান্ন সবজি থেকে তাই এইগুলো ভরাট হওয়ার প্রবণতা বেশি রয়েছে।
এই ধরণের শাকসবজিতে শালীন পরিমাণে প্রোটিন থাকে। সাধারণ সবজির থেকে বেশি পরিমানে প্রোটিন থাকে।
যদি আপনি ওজন কমাতে চান তাহলে ক্রুসিফেরাস শাকসবজিকে আপনার খাবারে অন্তর্ভুক্ত করুন। এটি আপনার জন্য উপযুক্ত খাবার।
আপনার ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কমানোর জন্য এইগুলো সবজি অনেক উপকারী। তাই দেরি না করে আজ ই আপনার ডায়েট এ এইগুলো যুক্ত করুন।
- মুরগির ব্রেস্ট ও কিছু চর্বিহীন মাংস
ফল, শাকসবজি এবং গোটা শস্যের পাশাপাশি পরিমিত পরিমাণে অপ্রক্রিয়াজাত মাংস খাওয়া যেতেই পারে। মুরগির ব্রেস্ট এ প্রচুর পরিমানে প্রোটিন থাকে তাই এটি আপনার শরীরের অপুষ্টি কে দূর করতে সাহায্য করবে।
পুষ্টির দিক থেকে দেখতে গেলে , মুরগি এবং লাল মাংস উভয়ই প্রোটিন এবং আয়রন সমৃদ্ধ। যা পরিমান মতো খেলে আপনার ওজন কেও সঠিক পরিমানে রাখতে পারবে।
চামড়াবিহীন মুরগির ব্রেস্ট এবং চর্বিহীন লাল মাংস যেমন টেন্ডারলাইন বা ফ্ল্যাঙ্ক স্টেক প্যাক প্রোটিন এবং আয়রন দ্বারা পরিপূর্ণ। যা অন্যানো মাংসের থেকে তুলনায় কম স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে। এটি আপনার ওজন ব্যবস্থাপনা এবং হার্টের স্বাস্থ্যকে ভালো রাখতে সাহায্য করে তাই আপনি এইগুলো কে আপনার ডায়েট এ যোগ করতেই পারেন।
প্রতি সপ্তাহে কয়েকটি 3-আউন্স (85-গ্রাম) পরিমানের বেশি খাবেন না এবং এইসব মাংস গুলো কে কম আগুনে রান্না করে খাবেন কারণ আপনি কীভাবে মাংস প্রস্তুত করেন তা কিন্তু স্বাস্থ্যের ফলাফলকেও প্রভাবিত করতে পারে।
- মটরশুটি এবং শিম
মটরশুটি এবং অন্যান্য শিম ওজন কমানোর জন্য উপকারী হতে পারে। এর মধ্যে আরো আছে যেমন মসুর ডাল,কালো মটরশুটি, কিডনি বিন,সবধরণের ডাল ই প্রচুর পরিমানে প্রোটিন এবং ফাইবার বেশি থাকে।
পুষ্টি এবং তৃপ্ত দুটোই বাড়াতে পারে। কিছু প্রতিরোধ স্টার্চ থাকে যা আমাদের শরীর কে সুস্থ রাখতেও সাহায্য করে।
যেকোনো খাবার কিভাবে রান্না করছেন তার উপর ও কিন্তু অনেকটাই নির্ভর করে। সবসময় মটরশুটি শুকনো কেনার চেষ্টা করুন এবং প্রস্তুত করার আগে কয়েক ঘন্টা ভিজিয়ে রাখুন। যাদের মটরশুটি খেলে গ্যাস হয় তাদের জন্য এইভাবে রান্না করলে গ্যাসের উপসর্গ কম হবে।
- স্যুপ
স্যুপ একটি ভালো খাদ্য যা ভাতের বিকল্প হিসেবে আমরা অনেকেই খেয়ে থাকি। এই খাবার আপনার ক্ষুধা কে সন্তুষ্ট বোধ করা থেকে শুরু করে এবং আপনার শরীরকে পুষ্টি দেওয়া, একটি স্বাস্থ্যকর ওজনে আপনাকে পৌঁছানো এবং সেটিকে বজায় রাখার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
যেহেতু স্যুপগুলি সহজাতভাবে তরল, এবং তাই এটি আপনাকে হাইড্রেট রাখতে পারে। খাদ্যে পূর্ণতা এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করতে সাহায্য করে। এই ডায়েট স্বাস্থ্যকরভাবে ওজন কমানোর একটি উপায় হতে পারে।
সঠিক প্রস্তুতি হলো আসল স্যুপএ অ্যাভোকাডোতে মিশ্রিত করার চেষ্টা করুন, এটি আপনার স্যুপ এ ফাইবারের সংখ্যা বাড়াতে সাহায্য করবে।
আরও সমৃদ্ধ স্যুপ আপনি যদি চান তবে ভারী ক্রিম ব্যবহার করবেন না। কারণ এর ক্রিমিনেস বাড়ানোর উপায় রয়েছে, যা খাদ্যে কম স্বাস্থ্যকর স্যাচুরেটেড ফ্যাট যোগ করতে পারে।
আপনার শাকসবজি এবং গোটা শস্যের পরিমাণ বাড়ানোর জন্য স্যুপ একটি সুস্বাদু উপায়। স্যুপ অন্যান্য খাবারের তুলনায় কিছু লোকের খেতে বেশি সময় নেয়। ধীরে ধীরে খাওয়া ওজন কমানোর আরেকটি প্রক্রিয়া। তাই স্যুপ ছাড়া ডায়েট অসুম্পূর্ণ।
- ফল
বেশিরভাগ স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ দের এক মত যে ফল খুবই স্বাস্থ্যকর। জনসংখ্যার গবেষণায় দেখা গেছে যে যারা সবচেয়ে বেশি ফল এবং শাকসবজি খান তারা তুলনায় অন্যদের(যারা ফল ও শাক সবজি খান না ) থেকে বেশি স্বাস্থ্যকর হয়।
বেশিরভাগ ফলের অনেক বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা আপনাকে স্বাস্থ্যকর ওজন পেতে বা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
ফলে প্রাকৃতিক চিনি থাকে, তবে তাদের শক্তির ঘনত্ব কম থাকে এবং মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টে ভরপুর থাকে এবং তাদের মধ্যে থাকা ফাইবার উপাদান রক্ত প্রবাহে খুব দ্রুত চিনি নিঃসৃত হতে বাধা দেয়।
বেশিরভাগ ফল আপনার স্বাস্থ্যকর ওজন এর জন্য কার্যকর এবং সুস্বাদু ডায়েট হতে পারে।
- বাদাম
গবেষণায় দেখা গেছে যে বাদাম খেলে স্বাস্থ্যের উন্নতি হয় এবং এমনকি ওজন হ্রাস করতে পারে। বাদাম চমৎকার স্ন্যাকস হিসেবে গণ্য কারণ এতে সুষম পরিমাণে প্রোটিন, ফাইবার এবং স্বাস্থ্যকর চর্বি থাকে।
বাদাম হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী এটি আপনাকে প্রোটিন, ফাইবার এবং অন্যান্য উদ্ভিদ যৌগ প্রদান করে।
গবেষণায় দেখা গেছে যে যারা বাদাম খায় তারা বেশি পুষ্টি পায়। যদি আপনার লক্ষ্য ওজন হ্রাস করা হয় তবে আপনার খাবারের সঠিক পরিমান মনে রাখবেন।
লবণবিহীন বাদাম খাওয়ার চেষ্টা করুন এবং প্রায় 15-20 মিনিট পরে আপনার কেমন লাগছে তা অনুভব করুন। এখনও আপনি যদিক্ষুধার্ত বোধ করেন, কম পরিমান লবন দিয়ে খাবার চেষ্টা করুন এবং নিজেকে হজম করার জন্য কিছুটা সময় দিন।
- কটেজ পনির
যেকোনো দুগ্ধজাত খাদ্যে প্রোটিন বেশি থাকে।
কটেজ পনির খাওয়া আপনার শরীরে প্রোটিনের পরিমাণ বাড়াতে এটি একটি দুর্দান্ত ভূমিকা পালন করে , যা আপনার পেশী তৈরি করতে এবং সেটিকে বজায় রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এটি খুব তৃপ্তিদায়ক এবং ক্যালসিয়ামে পূর্ণ খাদ্য।
অন্যান্য উচ্চ প্রোটিন দুগ্ধজাত খাদ্যের মধ্যে গ্রীক দই এবং স্কয়ার ও গুরুত্ব পূর্ণ। তাই আপনি আপনার ডায়েট এ এইগুলো ও যোগ করতে পারেন।
সর্বোপরি আমার মতে রোজকার ডায়েটের ওভারভিউ!
অনেক খাবার ই আছে যা সুস্বাদু, পুষ্টিকর এবং আপনাকে একটি স্বাস্থ্যকর ওজনে পৌঁছাতে বা বজায় রাখতে আপনার লক্ষ্যগুলির সহায়ক হতে পারে। এগুলি মূলত সম্পূর্ণ খাবার যেমন মাছ, চর্বিহীন মাংস, শাকসবজি, ফল, বাদাম, বীজ এবং লেবু।
এবং কিছু ন্যূনতম প্রক্রিয়াজাত খাবারও রয়েছে , যেমন প্রোবায়োটিক দই এবং ওটমিল, এইগুলিও কিন্তু আপনার ডায়েট এর জন্য চমৎকার পছন্ধ।
আমরা আজকে এই পোস্টটির মাধ্যমে আপনাদের কে সম্পূর্ণ একটি ডায়েট কন্ট্রোল গাইডেন্স দেওয়ার চেষ্টা করেছি। রোজকার ডায়েট কে কিভাবে মেইনটেইন করবেন ? কিভাবে নিজেকে ফিট ও সুন্দর রাখতে পারবেন ? কিভাবে নিজের ওজন কে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন ? এখানে আমরা পুরুষ / মহিলা ও বাচ্চাদের ডায়েট চার্ট ও আপনাদের জন্য যোগ করে দিয়েছি। । আশাকরি আপনাদের এই ডায়েট কন্ট্রোল গাইড টি অনেক উপকারে আসবে। আপনারা ডায়েট কন্ট্রোল নিয়ে যদি আরো কোনও প্রশ্ন থাকলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন আমরা সঠিক তথ্য দেওয়ার সম্পূর্ণ চেষ্টা করবো। ধন্যবাদ।