বাংলাদেশ থেকে প্রতিনিয়ত অনেক মানুষ ফিজিতে বিভিন্ন কাজের উদ্দেশ্যে রওনা দিচ্ছে। তাই যারা ফিজি কাজের উদ্দেশ্যে যাচ্ছেন তাদের অবশ্যই খরচ কত হবে সে তথ্য জেনে নেওয়া উচিত। তাই আজকের পোষ্টে ফিজি কাজের ভিসা ২০২৪, ফিজি কাজের ভিসার জন্য কি কি লাগবে,ফিজি ওয়ার্ক ভিসা আবেদন করার নিয়ম,ফিজিতে কোন কাজের চাহিদা বেশি ইত্যাদি নিয়ে বিস্বারিত আলোচনা করা হয়েছে।
ফিজি কাজের ভিসা ২০২৪ আপডেট
ফিজিতে অনেক কাজের ভিসায় যাওয়া যায় এবং বর্তমানে অনেক বাংলাদেশি শ্রমিক ফিজিতে কাজ করে যাচ্ছেন। ফিজিতে প্রধান কাজ হলো জেলে বা মাছ ধরা তবে এগুলো ছাড়াও কৃষি, গার্মেন্টস, মেকানিক্যাল,ইলেকট্রিশিয়ান, ওয়েল্ডার, কনস্ট্রাকশন ইত্যাদি কাজের চাহিদাও অনেক বেশি রয়েছে। তাই এসব কাজের ভিসা সহজে পাওয়া যায়। তবে বাংলাদেশ থেকে ফিজিতে ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় যাওয়ার জন্য অবশ্যই আপনাকে ফিজির কনস্যুলেট থেকে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে।
বাংলাদেশ থেকে সহজেই ফিজি ওয়ার্ক ভিসা পাওয়া সম্ভব। এছাড়াও ফিজিতে ২ ধরনের কাজের ভিসা পাওয়া যায় একটি হলো ১ বছর বা স্বল্প মেয়াদী কাজের ভিসা এবং আরেকটি হলো ৩ বছর বা দীর্ঘ মেয়াদি কাজের ভিসা।আপনারা যেকোনো একটি কাজের ভিসা নির্বাচন করে বাংলাদেশ থেকে ফিজিতে কাজের উদ্দেশ্যে যেতে পারবেন।
ফিজি কাজের ভিসার জন্য কি কি লাগবে
ফিজিতে কাজের ভিসায় যাওয়ার জন্য যে সকল প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট লাগবে তা হলো-
- কমপক্ষে ৬ মাস মেয়াদী বৈধ পাসপোর্ট;
- ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি;
- জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি;
- এডুকেশনাল এবং কাজের দক্ষতার সার্টিফিকেট;
- নিয়োগকর্তার পাঠানো কাজের আমন্ত্রণপত্র;
- ফিজি ওয়ার্ক পারমিট;
- ফিজি ভিসার আবেদন ফরম;
- আবেদনকারীর হেলথ ইন্সুরেন্স এবং মেডিকেল রিপোর্ট;
- ব্যাংক স্টেটমেন্ট এর কপি;
উপরের উল্লেখিত প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টসগুলো ফিজি এম্বাসিতে আবেদন ফরম জমা দেওয়ার সময় একত্রে জমা দিতে হবে এবং অবশ্যই তথ্যগুলো নির্ভুল হতে হবে।
ফিজি ওয়ার্ক ভিসা আবেদন করার নিয়ম
বাংলাদেশ থেকে ফিজিতে কাজের ভিসায় যাওয়ার জন্য আপনাকে প্রথমেই ওয়ার্ক পারমিট সংগ্রহ করতে হবে, এবং ফিজির নিকটস্থ কনস্যুলেটে যোগাযোগ করতে হবে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ আবেদন ফরম জমা দিয়ে ভিসা প্রসেসিং এর জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
চলুন ধাপে ধাপে জেনে নেয়া যাক কিভাবে ফিজি কাজের ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে।
ধাপ ১- ওয়ার্ক পারমিট সংগ্রহ করুন
ফিজিতে কাজের ভিসার মাধ্যমে যাওয়ার জন্য আপনাকে সর্বপ্রথম সঠিকভাবে ওয়ার্ক পারমিট আবেদন করে ওয়ার্ক পারমিটটি সংগ্রহ করতে হবে। এই ওয়ার্ক পারমিট হলো বিদেশে কাজের উদ্দেশ্যে যাওয়ার অনুমতিপত্র যা আবেদন করার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দেশ থেকে প্রবাসি কর্মীকে প্রদান করা হয়ে থাকে।
ধাপ ২ – ফিজির নিকটস্থ কনস্যুলেটে যোগাযোগ করুন
বাংলাদেশ থেকে কাজের উদ্দেশ্যে ফিজিতে যাওয়ার জন্য প্রথমেই ফিজির নিকটস্থ কনস্যুলেটে যোগাযোগ করুন। অনলাইনে ফিজির এম্বাসির ওয়েবসাইটে বা আপনার নিকটতম কনস্যুলেটে কাজের ভিসার আবেদন করার জন্য যোগাযোগ করুন এবং ভিসা করার সব নিয়ম কানুন জেনে নিয়ে আবেদন ফরম সংগ্রহ করুন।
ধাপ ৩ – আবেদন ফরম পূরণ করুন
ফিজির কনস্যুলেট থেকে আবেদন ফরম সংগ্রহ করার পর আপনার সকল প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে তা পূরণ করুন।ফিজি কাজের ভিসার আবেদন ফরম তাদের অনলাইন ওয়েবসাইট থেকে পূরণ করা যাবে এবং অবশ্যই সকল তথ্য সঠিক হতে হবে।
ধাপ ৪ – প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট জমা দিন
আবেদন ফরম পূরণ করার পর এম্বাসী থেকে নির্ধারিত সকল প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস একসাতে আবেদন ফরমের সাথে জমা দিতে হবে। আবেদনকারীর বৈধ পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয়পত্র, ওয়ার্ক পারমিট, মেডিকেল রিপোর্ট, ব্যাংক স্টেটমেন্ট,কাজের দক্ষতার সার্টিফিকেট ইত্যাদি সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হবে এবং কোন ডকুমেন্টস বাদ দেওয়া যাবে না।
ধাপ ৫ – অনুমোদনের জন্য অপেক্ষা করুন
আবেদন ফরমের সাথে সকল প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস জমা দেয়ার পর ভিসার সকল খরচ জমা দিলেই আপনার ভিসার প্রসেসিং কার্যক্রম শুরু হবে এবং আপনাকে ভিসার অনুমোদন পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তবে কোন ধরনের জটিলতা না থাকলে ফিজির এম্বাসি থেকে কাজের ভিসা প্রসেসিং হতে সর্বোচ্চ ১৫ দিন সময় লাগে এবং ভিসা অনুমোদন পাওয়ার পর তা আবেদনকারীকে সংগ্রহ করার জন্য মোবাইলে এসএমএসের মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হয়।
ফিজি কাজের ভিসার খরচ
ফিজির অফিশিয়াল এম্বাসির মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে কাজের ভিসায় যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রায় ৫ লক্ষ টাকা থেকে ৬ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়। আবার কোন এম্বাসি বা দালাল ছাড়াই আপনি নিজে নিজে ভিসার সকল প্রসেস সম্পন্ন করলে আপনার প্রায় ২ লক্ষ টাকা থেকে ৪ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ হবে। ফিজি কাজের ভিসার মোট খরচের মধ্যেই আপনার যাতায়াতের খরচ, প্লেনের টিকিট, খাওয়া-দাওয়া সহ ফিজিতে যাওয়া পর্যন্ত অন্যান্য সকল ধরনের খরচ অন্তর্ভুক্ত থাকবে। তবে অনেক সময় বিভিন্ন এম্বাসি বা বিভিন্ন ধরনের এজেন্সি ভেদে ফিজি কাজের ভিসার খরচ কম বেশি হতে পারে।
এছাড়াও সৌদি আরবের কাজের ভিসার দাম কত তা জানতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন।
ফিজিতে কোন কাজের চাহিদা বেশি
ফিজিতে যেসব কাজের চাহিদা বেশি সেগুলো হলো:
- ওয়েল্ডিং
- মেকানিক্যাল
- পেইন্টিং
- কৃষি
- গার্মেন্টস
- ইলেকট্রনিক্স
- ক্লিনিং
- হোটেল বয়
- কনস্ট্রাকশন
- ড্রাইভিং ইত্যাদি।
উপরের উল্লেখিত কাজগুলোর চাহিদা ফিজিতে অনেক বেশি এবং বাংলাদেশ থেকে অধিকাংশ শ্রমিক এ সকল কাজ করার জন্যই ফিজিতে যান।
ফিজি কাজের বেতন কত?
জানুয়ারী ২০২২ থেকে ফিজিতে সর্বনিম্ন বেতন প্রতি ঘন্টা ৪ ফিজিয়ান ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। এবং মাসে নুন্যতম ৮০০ থেকে ১ হাজার ফিজিয়ান ডলার আয় করা সম্ভব যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা ।
ফিজিতে বিভিন্ন কাজে কর্মীরা প্রতি মাসে প্রায় ৩০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৪০/৪৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন পেয়ে থাকেন। ফিজিতে সর্বনিম্ন বেতন একজন গার্মেন্টস কর্মী এবং ক্লিনারের যা ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা, শ্রমিক, কনস্ট্রাকশন, কৃষি, ড্রাইভিং ইত্যাদির ক্ষেত্রে বেতন ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা ,মেকানিক্যাল, ইলেকট্রিশিয়ান ইত্যাদি কাজের বেতন প্রায় ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। তবে বিভিন্ন পেশার উপর ভিত্তি করে কাজের মান এবং দক্ষতা যত বৃদ্ধি পাবে কর্মীদের কাজের বেতনও তত বৃদ্ধি পাবে।
শেষ মন্তব্য
আজকে পোষ্টে আপনাদের সাথে ফিজি কাজের ভিসা ২০২৪: ফিজি যেতে কত টাকা লাগে তা নিয়ে বিস্তারিত তথ্য আলোচনা করা হয়েছে এছাড়াও সৌদি আরবে কোন ভিসা ভালো এই এটি জানতে চাইলে এই পোস্টটি ভিজিট করুন এমন আরো নতুন নতুন তথ্য পেতে বাংলা ইনফোর সাথে যুক্ত হন। ধন্যবাদ।
ফিজি কাজের ভিসা ২০২৪: ফিজি যেতে কত টাকা লাগে সংক্রান্ত আরো কিছু জানতে চাইলে নিজের উল্লেখিত ভিডিওটি দেখতে পারেন।
ফিজি কাজের ভিসা ২০২৪: ফিজি যেতে কত টাকা লাগে এই সংক্রান্ত সাধারণ কিছু জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন।
FAQ’s
১. ফিজি দেশটি কোথায় অবস্থিত?
ফিজি দেশটি অস্ট্রেলিয়া (ওশেনিয়া) মহাদেশের একটি দেশ। এর রাজধানী শুভা।
২. দেশটির লোকসংখ্যা কত? কোন কোন জাতিগোষ্টির বসবাস রয়েছে ফিজিতে?
আনুমানিক লোক সংখ্যা ৯ লক্ষের মতো। জনগোষ্টির প্রায় ৫৫% ফিজিয়ান । এছাড়াও ৪০% ভারতীয় বংশোদ্ভূত ফিজিয়ান এবং বাকি ৫% অন্যান্য জাতিগোষ্ঠির।
৩. ফিজির আবহাওয়া কেমন?
বাংলাদেশের মতো ট্রপিক্যাল আবহাওয়া গরমের সময়ে সবোর্চ্চ ৩৫-৩৬ ডিগ্রি এবং শীতের সময় ১৫-২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়ে থাকে।
৪. ফিজির ভাষা কি?
প্রায় সবার ভষায় ইংরেজি এবং অনেকে হিন্দিতে কথা বলে।
৫. ভিসা কত প্রকার ও কি কি?
১. এমপ্লয়মেন্ট ভিসা
২. বিজনেস ভিসা
৩. প্রজেক্ট ভিসা
৪. প্রবেশ/”X” ভিসা
৫. টুরিস্ট ভিসা