আপনি কি সৌদি আরব যেতে চান? সৌদি আরব যেতে কত টাকা লাগে তা অনলাইন এ তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। বাংলাদেশ থেকে প্রতিনিয়ত অনেক মানুষ সৌদি আরবের রওনা দিচ্ছে বিভিন্ন কাজের উদ্দেশ্যে। আবার অনেকে আছে ওমরা পালনের উদ্দেশ্যে যাচ্ছেন। তাই যারা সৌদি আরবের উদ্দেশ্যে যাচ্ছেন তাদের অবশ্যই খরচ কত হবে সে তথ্য জেনে নেওয়া উচিত। তাই আপনারা যারা বিভিন্ন কাজের উদ্দেশ্যে অথবা ওমরা খোঁজ হজ করার উদ্দেশ্যে সৌদি আরব যাওয়ার জন্য বর্তমান বিচার খরচ কত হয়েছে সেই তথ্য জানতে চাইছেন তারা আমাদের আজকের পোষ্টের মাধ্যমে সৌদি আরব যেতে কত টাকা লাগে এবং সৌদি আরব সম্পর্কে খুঁটিনাটি তথ্য জানতে চাইলে আমাদের সম্পূর্ণ পোস্টটি অবশ্যই পড়ুন।
সৌদি আরব যেতে কত টাকা লাগে
বর্তমানে কাজের ভিসায় সৌদি আরব যাওয়ার জন্য ৩ লক্ষ থেকে ৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা লাগে। সৌদি আরব যেতে কত টাকা লাগে তা মূলত ভিসার ধরন, মেয়াদ ও কাজের ওপর নির্ভর করে সৌদি। সাধারণত সৌদি আরবে কাজের ভিসার মূল্য ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত। তবে বিভিন্ন দালাল /এজেন্সি ১ থেকে ৩ লক্ষ পর্যন্ত ভিসা দাম নিয়ে থাকে। এগুলো ছাড়াও মেডিকেল খরচ, ভ্যাকসিনেশন, বিমান টিকেট ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ মিলে সৌদি আরব যেতে ৪ থেকে ৪.৫ লক্ষ টাকা লাগে।
সৌদি আরবের কাজের ভিসার দাম কত
কাজের উপর ভিত্তি করে সৌদি আরবের যেতে কত টাকা লাগে তার নিম্মে আলোচনা করা হয়েছে –
কোম্পানির ভিসা
বর্তমান সময়ে সৌদি আরবে যাওয়ার জন্য ভালো কোন কোম্পানি ভিসা পাওয়া সবচেয়ে উপযোগী একটি ব্যাপার। বর্তমানে সৌদি আরবে নির্দিষ্ট কাজের দক্ষ ব্যক্তিদের উচ্চ বেতনে কোম্পানিতে নিয়োগ দেওয়া হয়। কোম্পানির ভিসার মূল্য ২হাজার থেকে ২ হাজার ৫০০ রিয়াল হয়ে থাকে। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে এজেন্ট বা দালালের মাধ্যমে এ ভিসায় যেতে হলে ৩-৪ লক্ষ টাকা খরচ পরবে।
মাজরার ভিসা
বিভিন্ন বাগানে এবং কৃষি কাজের জন্য এই ভিসায় সৌদি আরবে যেতে পারে। এই ভিসার প্রকৃত মূল্য ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৭০০ রিয়াল হয়ে থাকে। কিন্তু কফিল ছাড়া যাওয়া যায় না। তাই কফিল ভিসার দাম বাড়িয়ে দেয়। সম্পূর্ণ খরচসহ এই ভিসায় যেতে দিন থেকে ৩.৫ লক্ষ টাকা লাগে।
আমেল আইডি ভিসা
আমেল আইডি ভিসা নিয়ে সৌদি আরব যেতে হলে অবশ্যই কফিলের অনুমতি নিতে হবে। একজন সৌদি আরবের নাগরিক ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৫০০ রিয়াল দিয়ে আমেল নিয়োগ কারী প্রতিষ্ঠান থেকে আমেল আইডি ভিসা সংগ্রহ করে থাকেন। এরপর সেই ভিসা বেশি দামে প্রবাসীদের কাছে বিক্রি করেন। সৌদি আরবে আমেল আইডি ভিসায় যেতে প্রায় ৪ থেকে ৪.৫ লক্ষ টাকা খরচ হতে পারে।
চাওয়াক কাজ ভিসা
সৌদি আরবের নাগরিকের হোম ড্রাইভার হিসেবে এই ভিসায় যেতে পারে। তবে এই ভিসার ক্ষেত্রেও কফিল ছাড়া যাওয়া যাবে না। এজন্যই কফিল ভিসার দাম অনেকটা বাড়িয়ে দেয়। এই ভিসার প্রকৃত মূল্য ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৭০০ রিয়াল হয়ে থাকে। সম্পূর্ণ খরচসহ এই ভিসায় যেতে ৩ থেকে ৩.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়ে থাকে।
সৌদি আরবের অন্যান্য ভিসার দাম
সৌদি আরবের অন্যান্য ভিসা গুলোর মধ্য যে ভিসাগুলো বর্তমানে বেশি উল্লেখযোগ্য সেই ভিসা গুলোর সম্পর্কে আমরা নিচে জানব।
হজ্জ ভিসা
২০২৩ সালে ওমরা হজ্জের ভিসার দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল ৩০০ রিয়াল এবং অন্যান্য খরচ সহ আরো ও ২০০ রিয়াল। অর্থাৎ সবমিলিয়ে ৫০০ রিয়াল যা বাংলাদেশী টাকায় ১৩ থেকে ১৫ হাজার টাকার মতো। কিন্তু ওমরা হজ্জের জন্য একজন ব্যক্তির ৫ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ২ লক্ষ টাকা খরচ হবে। এগুলো ছাড়াও বড় হজ্জের জন্য ২০২৩ সালে এজেন্সির মাধ্যমে একজন ব্যক্তির খরচ নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ লক্ষ ৭২ হাজার ৬৮১ টাকা পর্যন্ত। তবে সরকারি ভাবে এর থেকে কিছুটা খরচ কম হতে পারে।
বিজনেস ভিসা
সৌদি আরবের সরাসরি বিজনেস ভিসা পাওয়া অনেকটাই ব্যয়বহুল একটি ব্যাপার। সৌদি আরবে বিজনেস ভিসা তৈরি করার জন্য প্রায় ৬০ হাজার রিয়াল খরচ হতে পারে। যা বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ২০ থেকে ২৪ লক্ষ টাকা। তবে বিচার প্রকৃত মূল্য এত বেশি নয়, তবে এই ভিসা সরাসরি সংগ্রহ করা যায় না।
টুরিস্ট ভিসা
বর্তমানে সৌদি আরবের টুরিস্ট ভিসার মূল্য ৩০০ রিয়াল নির্ধারণ করা হয়েছে। যা বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ৮ হাজার টাকা। তবে সব খরচ মিলিয়ে ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকা খরচ হবে।
ফ্যামিলি ভিজিট ভিসা
আগে জনপ্রতি ফ্যামিলির ভিজিট ভিসার মূল্য ছিল ২ হাজার রিয়াল। কিন্তু তা বর্তমানে কমিয়ে ৩০০ রিয়াল করা হয়েছে। তবে তিন মাসের ফ্যামিলি ভিসার প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা খরচ হতে পারে।
সৌদি আরবের ফ্রি ভিসার দাম কত /সৌদি আরব যেতে কত টাকা লাগে
বর্তমানে অন্যান্য ভিসার থেকে ফ্রি ভিসার সুযোগ সুবিধা অনেকটাই বেশি। কিন্তু সৌদি আরবে যেতে হলে আপনাকে খরচ একটু বেশি করতে হবে। কেননা আপনি ফ্রি ভিসায় আপনার ইচ্ছামত যে কোন কাজ অথবা কোম্পানিতে চাকরি নিতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনাকে সঠিক তথ্য জানতে হবে। কেননা কিছু প্রতারক দালাল রয়েছে তারা ফ্রি বিচার কথা বলে অন্য ভিসা দিয়ে থাকে। বর্তমানে সৌদি আরবের ফ্রি ভিসা এখন বন্ধ রয়েছে। সৌদি আরবের একটি ফ্রি ভিসা পেতে সব মিলিয়ে খরচ হবে প্রায় ৫ লক্ষ টাকা থেকে ৬ লক্ষ টাকা।
সৌদি আরবে কোন ভিসা ভালো
অনেকে সৌদি আরবে যাওয়ার আগে যাওয়ার আগে কোন ভিসা ভালো সৌদি আরব যেতে কত টাকা লাগে তা অনলাইনে তথ্য খুঁজে থাকেন। সৌদি আরবে অনেক ধরনের ভিসা পাওয়া যায় তবে, সবগুলো ভিসার মধ্য সৌদি আরবের ফ্রি ভিসা সবচেয়ে বেশি উপযোগী। কেন না ফ্রি বিচায় আপনি যেকোনো কাজ করতে পারবেন ইচ্ছামত যে কোন কোম্পানি চাকরি সহ সব কাজ করা যায়।
সৌদি আরব ভিসা প্রসেসিং প্রক্রিয়া
ধাপ ১ – সর্বপ্রথম আপনাকে ঠিক করতে হবে আপনি কোন ধরনের ভিসাতে সৌদি আরবে যেতে চান। কারণ এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় সকল যাতায়াতকারীদের জন্য।
ধাপ ২ – দ্বিতীয় পর্যায়ে সৌদি আরবের লোক নিয়োগকারী কোম্পানির গুলোর সঙ্গে আপনার যোগাযোগ করতে হবে। তবে যোগাযোগ করার ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে বিভিন্ন সার্কুলার সংগ্রহ করতে হবে এবং সে অনুযায়ী আবেদন করতে হবে। এবং চাকরির পরীক্ষায় উপস্থিত হয়ে আপনাকে সেখানে তাদের সামনে ইন্টারভিউ দিতে হবে। তবে এক্ষেত্রে নতুন পাসপোর্ট বা পুরাতন পাসপোর্ট সঙ্গে নিয়ে আসতে হবে আপনার বয়স ১৮ এর ঊর্ধ্বে এবং ৩০ এর মধ্য হতে হবে এবং ছবি, শিক্ষাগত যোগ্যতা গুলো সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে।
ধাপ ৩- তৃতীয় পর্যায়ে আপনাকে অনলাইন থেকে ভিসা জন্য আবেদন ফরম সংগ্রহ করতে হবে।
ধাপ ৪- চতুর্থ পর্যায়ে আপনার কাগজপত্র অনুযায়ী সকল তথ্য সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে এবং সে আবেদন ফরমে খুব ভালো ভাববেন খেয়াল রাখতে হবে যাতে কোন তথ্য পূরণের সময় কোন ধরনের ভুল না হয়।
ধাপ ৫- এ পর্যায়ে আপনার পূরণকৃত ফর্মটি এবং প্রয়োজনীয় যা যা কাগজপত্র রয়েছে এবং পাসপোর্ট এর কপি এবং সত্যায়িত কাগজপত্রগুলোর সঙ্গে নিয়ে সরাসরি সৌদি আরবের ভিসার অফিসে উপস্থিত হতে হবে। যেখানে আপনি ভিসার সকল কাজ সম্পন্ন করতে পারবেন।
ধাপ ৬- এরপর অফিসে উপস্থিত হয়ে আপনি তাদের সঙ্গে কথা বলবেন এবং আপনার কাগজপত্র সেখানে জমা দিবেন এবং তারা আপনাকে বিচার প্রাথমিক ফি করতে বলবে এবং সে প্রাথমিক ফি প্রদান করে আপনাকে মানি রিসিভ গ্রহণ করতে বলা হবে।
ধাপ ৭ – আপনার বীর স্যার কাগজপত্র যদি সঠিক থাকে তাহলে কিছুদিনের মধ্যে তারা আপনাকে সাক্ষাৎকারের জন্য ডাকবে এবং আপনি সেখানে উপস্থিত হয়ে আপনার সাক্ষাৎকার প্রদান করবেন।
ধাপ ৮ – এরপর আপনাকে আপনার ভিসা ট্র্যাক করতে হবে অনলাইনের মাধ্যমে আপনি চাইলে আপনার পিকচার ট্র্যাক করতে পারেন আপনার ভিসার কাগজের অগ্রগতি কতদূর এবং সেখানে কোন ভুল আছে কিনা সেটা আপনার অনলাইনে মাধ্যমে জানতে পারবেন।
এই পোস্টের শেষ মন্তব্য
আপনারা যারা সৌদি আরব যাওয়ার কথা ভাবছেন এবং সৌদি আরব যাওয়ার প্রসেসিং সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলেন এবং সৌদি আরব যেতে কত টাকা লাগে জানতে চেয়েছেন আশা করি তারা সম্পূর্ণ প্রসেসিংটি বুঝতে পেরেছেন। এছাড়া ও সৌদি আরবে কোন কাজের চাহিদা বেশি জেনে নিতে এই পোস্টটি ভিজিট করুন। এমন আরো ইউনিক তথ্য পেতে বাংলা ইনফোর সাথে যুক্ত হন। ধন্যবাদ।
সৌদি আরব ভিসার দাম কত | সৌদি আরব যেতে কত টাকা লাগে ২০২৪ সংক্রান্ত আরো কিছু জানতে চাইলে নিজের উল্লেখিত ভিডিওটি দেখতে পারেন।
সৌদি আরব ভিসার দাম কত | সৌদি আরব যেতে কত টাকা লাগে ২০২৪ সংক্রান্ত সাধারণ কিছু জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন।
FAQ’s
১. সৌদি আরব সারাকো কোম্পানি বেতন কত?
বেতন- ১৩০০ রিয়াল + ওভারটাইম। ডিউটি- ১০ ঘন্টা + ওভারটাইম।
২. সৌদি আরবের সবচেয়ে বড় কোম্পানির নাম কি?
২০১৫ সালের ফোবর্স এর একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, এরামাকো বিশ্বের বৃহত্তম তেল ও গ্যাস কোম্পানিতে ঘোষিত হয়।
৩. সৌদি আরবে ইলেকট্রিক কাজের বেতন কত?
সৌদি আরবে ইলেকট্রিক কাজের মাসিক বেতন ৫ হাজার থেকে ৬ হাজার রিয়াল যা বাংলাদেশি টাকায় ১,১৪,৪৫০-১,৩৭,৩৪০ টাকা।