মাল্টায় রেস্টুরেন্ট ও কর্মী হোটেল ম্যানেজমেন্ট কর্ম এবং এ ধরনের অন্যান্য পর্যটন সম্পর্কিত কাজগুলো চাহিদা অনেক বেশি হয়ে থাকে। একজন রেস্টুরেন্ট ওয়ার্কারের বেতন ৯০ হাজার থেকে ১ লক্ষ এবং একজন শেফ এর বেতন ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
তাই অনেকের মাল্টা ওয়ার্ক পারমিট বিচার যাওয়ার জন্য সে দেশে সবচেয়ে চাহিদা সম্পন্ন কাজগুলো সম্পর্কে জানতে চায়। তাই আজকের পোস্টে মাল্টা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা, মাল্টা ভিসার ওয়ার্ক পারমিট ভিসার আবেদন করার নিয়ম, মাল্টায় কোন কাজের চাহিদা বেশি, মাল্টায় যেতে কি কি ডকুমেন্টস লাগে ও মাল্টা থেকে ইতালি যাওয়ার উপায় ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
মাল্টা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা আপডেট ২০২৪
আগে মাল্টায় ভিসা আবেদনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন এজেন্সিতে যেতে হতো কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশের জন্য মাল্টা ভিসা চালু করা হয়েছে। গত ২৯ মে ২০২২ থেকে দিল্লির মাল্টা হাইকমিশনে ওয়েবসাইটে নোটিশ দিয়ে বলা হয়েছে পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত ওই হাইকমিশনের বাংলাদেশ নাগরিকরা ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন না।
অনেক বাধার পর বাংলাদেশের মাল্টা দূতাবাস চালু হয়েছে। বাংলাদেশে মাল্টায় ভিসা কার্যক্রম VFS Global চালু করেছেন গত ২০২২ সালে আগস্টের প্রথম সপ্তাহ থেকে।
মাল্টা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
সর্বপ্রথম মাল্টা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়ার জন্য নিয়োগ কর্তার কাছে আবেদন করতে হবে। যখন আবেদন গ্রহণযোগ্য হবে তখন নিয়োগ করতে প্রতিষ্ঠানের কাছে সনদ প্রদান করবে। তারপর ওয়ার্ক পারমিট সংগ্রহ করে ভিসা করতে পারবেন।
ওয়ার্ক পারমিট ভিসা একবার ইস্যু হলে ভিসাধারী ব্যক্তি শুধুমাত্র একজন নির্দিষ্ট নিয়োগকর্তার অধীনে কাজ করতে পারবেন। তবে একই ফর্ম্যাট ব্যবহার করে অন্য কোন নিয়োগকর্তার কাজ করতে পারবেন না। ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেতে আবেদনকারীর বয়স সর্বোচ্চ ১৮ থেকে ৪৫ হতে হবে। মাল্টায় ওয়ার্ক পারমিট ভিসা এর জন্য VFS Global কনসুলেট কিংবা বিভিন্ন এজেন্সিতে ১.৫ থেকে ২ লক্ষ টাকা হয়ে থাকে।
মাল্টা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা আবেদন করার নিয়ম
মাল্টা ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য তিন ভাবে আবেদন করা যায় যেমন-
- সরকারি মাধ্যমে।
- বেসরকারি এজেন্সির মাধ্যমে।
- মাল্টায় অবস্থানকৃত আত্মীয় রেফারেন্সের ভিসায়।
সরকারিভাবে আবেদন করার জন্য সরাসরি ভিএফএস গ্লোবাল এর কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে আবেদন করতে পারেন। অথবা VFS Global এ গিয়ে Apply for a visa এই অপশনে গিয়ে অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুক করে ভিসার আবেদন করতে পারেন। ভিসার আবেদন করার পর অনলাইন থেকে সম্পূর্ণ আবেদন ফরম ডাউনলোড করতে হবে। এরপর আবেদনের প্রিন্ট কপি, জাতীয় পরিচয়পত্র, ছবি পাসপোর্ট ইত্যাদি কাগজপত্র ডিএফএস গ্লোবাল এর কার্যালয়ে জমা দিতে হবে। এছাড়াও ভিসা প্রসেসিং ফি/ ম্যান পাওয়ার /ওয়ার্ক পারমিট ফি পর্যায়ক্রমিকভাবে পরিশোধ করতে হবে। সরকারিভাবে বিচার সকল খরচ মিলিয়ে ৩.৫ থেকে ৪ লক্ষ টাকা নেয়া হয়।
এরপর এজেন্সির মাধ্যমে আবেদন করতে চাইলে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস নিয়ে আপনার নিকটস্থ এজেন্সিতে যোগাযোগ করতে হবে। সেখানে বাকি কার্যক্রম এজেন্সি কর্মকর্তারায় পরিচালনা করবে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে ভিসার খরচ অনেক বেশি হয়ে থাকে।
মাল্টায় যদি আপনার কোন আত্মীয় স্বজন থাকে তাহলে রেফারেন্স লেটার দিয়ে ভিসা সংগ্রহ করতে পারেন। তবে ভিজিট ভিসায় এর প্রাধান্য বেশি। ওয়ার্ক ফরমেট ভিসা ক্ষেত্রে আত্মীয় রেফারেন্স নিয়োগ কারী প্রতিষ্ঠানের কাছে আবেদন করলে সরকারি ভাবে মাল্টার ভিসা পাবেন। এক্ষেত্রে মাল্টায় যেতে খরচ পড়বে ৩ থেকে ৪ লক্ষ টাকা। ডিএসএস গ্লোবাল মাল্টা ভিসা আবেদন করার পর আবেদনকারীর ইমেইল ও ফোনের মাধ্যমে একটি ট্র্যাকিং কোড পাঠানো হবে। এই ট্র্যাকিং কোড দিয়ে ভিসার স্ট্যাটাস জানতে পারবেন। মাল্টায় কোন কাজের চাহিদা বেশি
মাল্টায় কোন কাজের চাহিদা বেশি
মাল্টায় যে সমস্ত কাজের চাহিদা অনেক বেশি সেগুলো তালিকা নিচে দেওয়া হলো:
- শেফ এসিস্ট্যান্ট
- রেস্টুরেন্ট ওয়েটার
- সুসি শেফ
- হাউস কিপার
- কিচেন পোর্টার
- মেসেজ থেরাপিস্ট
- ফুড ডেলিভারি
- এসি টেকনিশিয়ান
- প্লাম্বার শ্রমিক
- মেইনটেনেন্স ওয়ার্কার
- ড্রাইভার
- কনস্ট্রাকশন শ্রমিক
- কোম্পানির শ্রমিক ইত্যাদি
উপরোক্ত এই সকল কাজে মালটা ভিসা প্রসেসিং অনেকটাই সহজ। এবং উপার্জনের পরিমাণও অনেকটা বেশি।
মালটা কাজের ভিসা এক মাসের বেতন কত
সরকারিভাবে মাল্টায় কাজের বেতন ক্যাশ বাৎসরিক হিসেবে নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। কাজের ধরন অনুযায়ী মাল্টায় বেতনের পরিমাণ ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। মাল্টায়কাজের ভিসা এক মাসের বেতন কত তা নিচে তালিকা দেওয়া হলো –
পদবী | বেতন (মাসিক) |
রিসেপশনিস্ট | ৯০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা |
রেস্ট্যুরেন্ট ওয়েটার | ৮০-৯০ হাজার |
গার্মেন্টস শ্রমিক | ৭০-৯০ হাজার |
ক্লিনার | ৭০-৯০ হাজার |
ডাক্তার | ৪-৫ লক্ষ টাকা। |
সিভিল ইঞ্জিনিয়ার | ১.৫ লক্ষ থেকে ২ লক্ষের উপরে। |
হিসাবরক্ষক | ১-১.৫ লক্ষ টাকা। |
শেফ | ১-১.৫ লক্ষ টাকা |
ইলেকট্রিশিয়ান | ১ লক্ষ থেকে ১ লক্ষ ২০ হাজার |
কনস্ট্রাকশন ওয়ার্কার | ৭০ হাজার থেকে ১ লক্ষ |
ড্রাইভার | ৯০ হাজার থেকে ১ লক্ষ |
ডেলিভারি ম্যান | ৮৫ হাজার থেকে ১ লক্ষ |
মাল্টা যেতে কি কি ডকুমেন্ট লাগে
মাল্টা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা আবেদন থেকে শুরু করে ভিসা সংগ্রহ করা পর্যন্ত নিম্নোক্ত ডকুমেন্টস গুলো লাগে-
- সর্বনিম্ন ৬ মাস মেয়াদ সম্পন্ন পাসপোর্ট;
- জাতীয় পরিচয়পত্র;
- সদ্য তোলা সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড ওয়ালা রঙিন ছবি;
- ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় খেলে নির্দিষ্ট কাজে দক্ষতার প্রমাণপত্র;
- বিগত ছয় মাসে আপনার ব্যাংক একাউন্টের স্টেটমেন্ট;
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট;
- করোনা ভ্যাকসিনেশন সার্টিফিকেট;
- বিএমইটি রেজিস্ট্রেশন;
- মেডিকেল রিপোর্ট;
- ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় মাল্টা যেতে, নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের জব অফার লেটার;
- কোন আত্মীয় বা পরিবারের সদস্যের রেফারেন্সে মাল্টা যেতে একটি রেফারেন্স লেটার।
বাংলাদেশ থেকে মাল্টা যেতে কত টাকা লাগে
বাংলাদেশ থেকে সরকারিভাবে মাল্টাযেতে প্রায় ৩ লক্ষ থেকে ৪ লক্ষ টাকা খরচ হয় আর বেসরকারিভাবে বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যমে ভিসার আবেদন করে মাল্টা যেতে প্রায় ৮ লক্ষ থেকে ১০ লক্ষ টাকা খরচ হয়। তবে এখন নির্ভর করে আপনার ভিসার ধরন ভিসা পাওয়ার মাধ্যমের উপর। বিভিন্ন উপায়ে মাল্টা ভিসার সংগ্রহ করা যায় যেমন –
- এজেন্ট ও এজেন্সির মাধ্যমে
- সরকারিভাবে মাল্টার প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে
- মালটাই অবস্থানকারী আত্মীয়স্বজনের রেফারেন্স এর মাধ্যমে
- দালালের মাধ্যমে
প্রত্যেকটি মাধ্যমে জন্য ভিসা প্রসেসিং একই হলেও সম্পূর্ণ খরচ মিলিয়ে টাকার পরিমান ভিন্ন হয়ে থাকে। তাই নিচে এজেন্সির মাধ্যমে মাল্টা ভিসার খরচ, সরকারের মাল্টা ভিসার খরচ, আত্মীয়র মাধ্যমে মাল্টা ভিসার প্রসেসিং খরচ, দালালের মাধ্যমে মাল্টা ভিসা খরচ ইত্যাদি প্রসেসিংগুলো মূল্য সহ নিচে দেওয়া হলো
এজেন্সির মাধ্যমে মাল্টায় ভিসা খরচ
এজেন্সির মাধ্যমে মাল্টায় ভিসার প্রসেসিং খরচসহ ওয়ার্ক ফরমেট বাবদ ১.৫ থেকে ২ লক্ষ টাকা খরচ হবে এবং অন্যান্য খরচ মিলিয়ে মাল্টা যেতে ৯ থেকে ১০ লক্ষ টাকা লাগবে।
সরকারিভাবে মাল্টা ভিসা খরচ
সরকারিভাবে মাল্টা ভিসা খরচ বাবদ ৩ থেকে ৪ লক্ষ টাকা লাগে। তবে এক্ষেত্রে সরকারিভাবে মাল্টা যেতে সময় বেশি লাগে।
আত্মীয়র মাধ্যমে ভিসা প্রসেসিং খরচ
মাল্টায় যদি আপনার কোন আত্মীয় থাকে তাহলে রেফারেন্স লেটার দিয়ে ভিসা সংগ্রহ করতে পারবেন। তবে এই ক্ষেত্রে ভিজিট ভিসার প্রাধান্য বেশি দিয়ে থাকেন। এক্ষেত্রে সব খরচ মিলিয়ে ৩ থেকে ৪ লক্ষ টাকা খরচ হবে।
দালালের মাধ্যমে মাল্টা ভিসা খরচ
দালালের মাধ্যমে মাল্টা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা আবেদন করলে প্রতারণা সম্ভাবনা থাকে অনেক বেশি। এক্ষেত্রে মালটা যেটা আপনার খরচ পড়বে ১০ থেকে ১২লক্ষ টাকা পর্যন্ত।
শেষ মন্তব্য
আজকের পোস্টে মাল্টা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা 2024: মাল্টা যেতে কত টাকা লাগে এই সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য আলোচনা করা হয়েছে। এছাড়াও সৌদি আরবে কোন ভিসা ভালো তা জানতে চাইলে এ পোস্টটি দেখতে পারেন। এমন আরো নতুন নতুন তথ্য পেতে বাংলা ইনফোর সাথে যুক্ত হন। ধন্যবাদ।
মাল্টা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা 2024: মাল্টা যেতে কত টাকা লাগে এই সংক্রান্ত আরো কিছু জানতে চাইলে নিচের উল্লেখিত ভিডিওটি দেখতে পারেন।
মাল্টা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা 2024: মাল্টা যেতে কত টাকা লাগে কিছু সাধারণ জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন।
FAQ’s
১. মাল্টা ওয়ার্ক পারমিট পাওয়া কি সহজ?
মাল্টায় সম্প্রতি কি এমপ্লয়ি ইনিশিয়েটিভ নামে উচ্চতম কর্মীদের জন্য একটি নতুন ওয়ার্ক পারমিট চালু করা হয়েছে এই ওয়ার্ক পারমিটটি পাঁচ দিনের মধ্য প্রক্রিয়া করা হয় এবং দ্রুত দেওয়া হয়।
২. মাল্টায় ২০২৩ এ একক ওয়ার্ক পারমিট পেতে কত সময় লাগে?
একটি একক ওয়ার্ক পারমিট প্রক্রিয়া করতে ২ থেকে ৩ মাস সময় লাগে।
৩. মাল্টায় চাকরি পাওয়ার উপায়?
মাল্টায় চাকরি পাওয়া সর্বোত্তম উপায় হলো অনলাইন চাকরির বোর্ড চেক করা এবং নিয়োগ সংস্থার সাথে যোগাযোগ করা।
৪. মাল্টায় টিসিএন কি?
টিসিএন মাল্টা সমস্ত তৃতীয় দেশের একটি সমর্থন গ্রুপ।