ব্যাংক লোনের মাসিক কিস্তি হিসাব করার নিয়ম জানুন

অনেকেই আমরা বিভিন্ন মেয়াদী ব্যাংক লোন নিয়ে থাকি। লোন নেওয়ার সময় ব্যাংক আমাদের জানিয়ে দেয় প্রতি মাসে কত টাকা করে কিস্তি দিতে হবে। আর আমরা সে অনুপাতে সময় মত কিস্তি পরিশোধ করে থাকি। আজকের এ পোষ্টের মাধ্যমে ব্যাংক লোনের মাসিক কিস্তি হিসাব করার সহজ নিয়ম, ব্যাংক লোনের সুদের হার, ব্যাংক লোনের পরিশোদের নিয়ম, সহজ কিস্তিতে লোন ও কম সুদে ব্যাংক লোন নেওয়ার বিস্তারিত তথ্য দেওয়া চেষ্টা করবো।

তাই যারা ব্যাংক লোনের মাসিক কিস্তির হিসাব জানতে চান তারা অবশ্যই শেষ পর্যন্ত এই পোস্টটি পড়ুন। তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক ব্যাংক লোনের মাসিক কিস্তি হিসাব করার সহজ নিয়ম।

ব্যাংক লোনের মাসিক কিস্তি হিসাব

মাসিক কিস্তি হিসাব করার জন্য ক্যালকুলেটর ও এক্সেল এর মাধ্যমে হিসাব করতে পারেন। তবে এক্সেলে হিসাব করলে আপনাকে অবশ্যই সঠিক ভাবে সূত্র ব্যবহার করতে হবে এবং সূত্র মনে রাখতে হবে।

এক্সেল এর মাধ্যমে ব্যাংক লোনের মাসিক কিস্তি হিসাব

ধরুন আপনি ব্যাংক থেকে লোন নিলেন ১০০০০০০ (১০ লক্ষ টাকা) লোনের সুদের হার হচ্ছে ৯% এবং লোনটি ৫ বছর মেয়াদী তাহলে মাসিক কিস্তির হিসাব করার জন্য যে সূত্রটি ব্যবহার করতে হবে সেটি হচ্ছে –

অর্থাৎ = -PMT (৯%÷১২,৫×১২,১০০০০০০)

যেহেতু এক্সেল এর মধ্য সূত্র ব্যবহার করতে হবে তাই সূত্রের মাঝে সরাসরি সুদের হার, লোনের মেয়াদ ও লোনের পরিমাণ লিখে দেওয়া যাবে না। প্রতিটি সেল মাউসের মাধ্যমে সিলেক্ট করতে হবে। অপরদিকে সর্বমোট কত টাকা পরিশোধ করতে হবে সেটি বের করার জন্য যে সূত্রটি প্রয়োগ করতে হবে তা হলো = লোনের মেয়াদ ×১২ মাসিক কিস্তি।

উপরের উল্লেখিত ছবিতে দেখুন ৫ বছরের জন্য ১০ লক্ষ্য টাকা লোন নেওয়া হলে এবং তার সুদের হার যদি ৯% হয় তাহলে প্রতিমাসে ২০৭৫৮. ৩৬ টাকা করে কিস্তি দিতে হবে। আর এভাবে সম্পূর্ণ কিস্তিতে পরিশোধ করতে হবে আপনাকে ১২৪৫৫০১.৩১৪ টাকা। অর্থাৎ পাঁচ বছরের জন্য লোন নিলে আপনাকে প্রায় আড়াই লক্ষ্যর মতো সুদ দিতে হবে।

ব্যাংক লোনের মাসিক কিস্তি হিসাব

এক লক্ষ টাকা লোন নিতে চাই

এক লক্ষ টাকা যখন আপনি ঋণ নিবেন তখন আপনাকে সপ্তাহে ১০টাকা করে আপনি যখন মাত্র ১৫ সপ্তাহে কিস্তি চালাবেন তখন আপনার এক লক্ষ টাকা পরিশোধ হয়ে যাবে।

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ডিপিএস করার নতুন নিয়ম ২০২৪

ধরুন গ্রামে যেকোনো একজন মানুষ একটু এভাবে মানুষ বলতে পারেন তার এখন এক লক্ষ টাকা লাগলো। আবার সে মানুষটা দেখা যাচ্ছে যে গ্রামে বিভিন্ন মাতব্বর তাকে যারা সুদের উপরে টাকা দিয়ে থাকে। তখন ওই অভাবি মানুষটা একটা পয়সাওয়ালা মানুষের কাছে গিয়ে বলল আমার এক লক্ষ টাকা প্রয়োজন তখন ও পয়সা ওয়ালা মানুষটি তাকে বলল এক আমি এক লক্ষ টাকা দিব আর এক লক্ষ টাকা আপনি কিস্তিতে পরিশোধ করে দিবেন। তখন ওই অভাবে মানুষটা তো অনেক খুশি

তখন যে পয়সাওয়ালা মানুষটি রয়েছে সে মানুষটি তাকে বলছে যে আপনি আমাকে সপ্তাহে ১০ টাকা করে দিবেন। তারপর ওই একটা কাগজে স্ট্যাম্প হল কাগজপত্র হলো। যে প্রথম সপ্তাহের ১০ টাকা দেওয়া হলে এরপরের সপ্তাহে ২০ টাকাদিবে, এর পরের সপ্তাহে ৪০ টাকা দিবে প্রত্যেকটা সপ্তাহে টাকাটা দ্বিগুন হয়ে যাবে। এভাবে আপনি আমাকে ১৫ সপ্তাহে কিস্তি দিবেন।

১৫ টা কিস্তি দিয়ে আমার টাকাটা পরিশোধ করবেন লাভ সহকারে। তখন অভাবে মানুষটা তো খুব খুশি যে সে টাকা পেয়েছে ১০ টাকা করে প্রতি সপ্তাহে পরিশোধ করবে। সে মানুষটার সম্পূর্ণ কথাটি বুঝে নাই। এরপর মানুষটি টাকাটা নিল। তারপর তার কাজে ব্যবহার করল। করার পরে যায় টাকাটা পরিশোধ করার পালা।

তো প্রথম সপ্তাহে এসে ১০ টাকা দিল এরপরের দ্বিতীয় সপ্তাহে ২০ টাকা দিল এরপর আসেন তৃতীয় সপ্তাহে সে ২০ টাকার দ্বিগুণ ৪০ টাকা দিল, চতুর্থ সপ্তাহে এসে সে ঋণ পরিশোধ করল ৪০ এর দ্বিগুণ ৮০ টাকা, পঞ্চম সপ্তাহে এসে তখন তিনি ৮০ টাকার দ্বিগুণ ১৬০ টাকা পরিশোধ করলেন, এরপর ষষ্ঠ যে সপ্তাহ আছে ১৬০ টাকার দ্বিগুণ ৩২০ টাকা পরিশোধ করলো, এর পরের সপ্তম সপ্তাহে ৩২০ টাকা দ্বিগুন ৬৪০ টাকা পরিশোধ করলেন,

এরপর অষ্টম সপ্তাহ যেটা রয়েছে ৬৪০ টাকা দ্বিগুণ ১২৮০ টাকা পরিশোধ করলেন। এরপর নবম সপ্তাহে তিনি ১২৮০ টাকার দ্বিগুণ ২৫০০ টাকা তিনি কিস্তি দিলেন, এখন দশ নাম্বার কিস্তিতে তো তিনি অনেক দিনে অনেক খুশি যে ১০টা কিস্তি চলে গেছে আর মাত্র পাঁচটা কিস্তি রয়েছে এখানে আর তেমন কঠিন কি। ১০ টাকার কিস্তিতে তিনিই ৯ নাম্বারে কিস্তি দিয়েছেন ২৫০০ টাকা।

আর এখন ১০ নাম্বার কিস্তিতে এসে তিনি দিয়েছেন ৫১২০। তিনি এতদিন নয় সপ্তাহ পর্যন্ত টাকা দিয়েছেন ১০২৩০ টাকা কিস্তি। আর দশ নাম্বার কিস্তি দিয়েছেন তিনি ৫১২০ টাক। মোট তিনি ১০ নাম্বার কিস্তি পর্যন্ত ঋণ পরিশোধ করেছেন ১৫৩৫০ টাকা। তাহলে এখন মানুষটা তো অনেক খুশি, যে ১০ টা কিস্তি চলে গেছে যে গায়ে লাগলো না। আর মাত্র পাঁচটা কিস্তি এখন আসেন মূল বিষয়টা হচ্ছে এখন এই পাঁচটা কিস্তির মধ্যেই। এ মানুষটা একটু অভাব অনটনের মধ্যে রয়েছে, তার একটু কষ্ট হয়ে যাচ্ছে কিস্তির সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে।

১১ নম্বর কিস্তিতে যখন তিনি দিতে গেলেন তখন তিনি ১০ নাম্বার যে কিস্তি দিয়েছেন তার কিন্তু দ্বিগুণ তাকে দিতে হবে। এবার আসেন তা তিনি এখন আস্তে আস্তে এবার বুঝতে পারছেন যে ১০ টাকার কিস্তি শুরু করে এখন কি অবস্থা হচ্ছে। ১২ নাম্বার কিস্তিতে তিনি দিলেন ২০৪৮০ টাকা। এখন ১৩ নম্বর কিস্তি যখন তিনি দিতে গেলেন তখন তিনি ২০৪৮০ টাকা দ্বিগুণ ৪০৯৬০ টাকা।

এবার ১৪ নাম্বার যে কিস্তিটা রয়েছে সেটা আরো দ্বিগুন হয়ে গেছে এখন সে আর ঋণ পরিশোধ করতে পারছেন না। এখন দেখা যাচ্ছে যে কিস্তির পরিমাণ কি পরিমান কিস্তি বেড়ে যাচ্ছে প্রথমত তিনি ভেবেছেন যে ১০ টাকা করে তিনি ১৫ সপ্তাহে ঋণ দিয়ে দিবেন এটা একদম সহজ ব্যাপার।

এরপর আসেন ১৪ নাম্বার যে কিস্তিটা তার এটাতে হচ্ছে মোট ৮১৯২০ টাকা। এরপর ১৫ নাম্বার কিস্তিতে তার টাকা ১,৬৩,৮৪০ টাকা। সর্বমোট তিনি এই পযন্ত ১৫ টা কিস্তির মতো ঋণ পরিশোধ করেছেন ৩৩২৭৯০ টাকা। তাকে প্রথমে লোভ দেখানো হয়েছে যে ১০ টাকা করে ১৫ কিস্তি দিলে সম্পূর্ণ ঋণ পরিশোধ করা হয়ে যাবে। কিন্তু সত্য সাপেক্ষে কাগজে লেখা প্রত্যেক সপ্তাহে হয়েছে যে সে ১০ টাকা দ্বিগুণ দিবে তাই তাকে বাধ্য হচ্ছে। এক লক্ষ টাকা সুদসহ লাভ সহকারে পনের সপ্তাহের মধ্যে ৩৩২৭৯০ টাকা হয়ে গেছে। এগুলো হচ্ছে যে গ্রাম অঞ্চলে যে সমস্ত সুদের ব্যবসায়ী গুলো হয়, এগুলো এভাবে মানুষকে ধ্বংস করে দেয়।

এই পোস্টের শেষ মন্তব্য

পরিশেষে বলা যায় যে এক্সেল এর মাধ্যমে ব্যাংক লোনের মাসিক কিস্তি হিসাব করা খুবই সহজ যদি আপনি সূত্র মনে রেখে সঠিকভাবে সূত্র প্রয়োগ করতে পারেন তাহলে আপনি খুব সহজে এক্সেল এর মাধ্যমে ব্যাংক লোনের মাসিক কিস্তি হিসাব বের করতে পারবেন। এই ছিল আজকের ব্যাংক লোনের মাসিক কিস্তি হিসাব করার নিয়ম।

এছাড়াও আপনি যদি ব্যাংক লোন নিতে চান তাহলে বাংলাদেশের টেকসই নিরস্তর সাধারণ জনগণদের উদ্বেগে যে ব্যাংক গঠিত সে ব্যাংক থেকে লোন নিতে পারেন। আর সে ব্যাংটি হলো আশা ব্যাংক। এটি পড়লে আপনারা আরো বিস্তারিত জানতে পারবেন। এছড়াও আশা ব্যাংক লোন পদ্ধতি জানতে চাইলে এটি দেখতে পাররেন আশা করি উপকৃত হবেন। এমন আরো তথ্য পেতে বাংলায় ইনফোর ভিজিটের আমন্ত্রণ জানিয়ে আজকের পোস্ট এখানে শেষ করলাম। ধন্যবাদ সবাইকে।

ব্যাংক লোনের মাসিক কিস্তি হিসাব সংক্রান্ত আরো কিছু জানতে চাইলে নিজের ভিডিওটি দেখতে পারেন।

ব্যাংক লোনের মাসিক কিস্তি হিসাব সংক্রান্ত সাধারণ কিছু প্রশ্ন আপনাদের সামনে তুলে ধরা হলো।

FAQ:

১. চেক নাম্বার কোনটি?

প্রতিটি চেকের পাতায় চেকের নিচে বাম দিকে একটি ছয় সংখ্যার একটি চেক নাম্বার থাকে সেটিই হলো চেক নাম্বার।

২. সোনালী ব্যাংকে কি সরকারি ব্যাংক?

সোনালী ব্যাংক হলো বাংলাদেশের প্রধান রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন শীর্ষস্থানীয় সরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক।

৩. লোন কত প্রকার ও কি কি?

সুবিধা অনুসারে লোন বিভাগে ভাগ করা যায় যেমন : ১. Secured (সুরক্ষিত লোন) ২.Unsecured (অনিরাপদলোন)।

Leave a Comment