বাংলায় ইনফো: বাংলা ভাষায় সবচেয়ে জনপ্রিয় বাংলা ব্লগ সাইট

খুব সহজে খাস জমি রেকর্ড করার নিয়ম জেনে নিন

যে জমিগুলো ব্যক্তি বা কোন সংস্থা মালিকানাধীন থাকে না সে সমস্ত জমি কে খাস জমি বলা হয়। মামনি আমাদের দেশে অনেক খাস জমি রয়েছে যেগুলো কোন ব্যক্তি মালিকানা নেই বা সংস্থা মালিকানা নেই। আপনারা চাইলে এসব খাস জমি বন্দোবস্ত করার আবেদন করে সহজে জমিগুলো আপনার নামে রেকর্ড করে নিতে পারবেন।

কিভাবে খাস জমি রেকর্ড করতে হয়? খাস জমি চেনার উপায় ? সরকারি খাস জমির বৈশিষ্ট্? খাস জমি রেকর্ড করার নিয়ম সরকারি খাস জমির লিজ নেওয়ার নিয়ম, এবং জমি খাস হলে করণীয় ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। তাই অবশ্যই সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ুন।

খাস জমি চেনার উপায় 

খাস জমির চেনার বেশ কিছু উপায় রয়েছে। তবে কাজ জমি চেনার জন্য সঠিক উপায় হচ্ছে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন ভূমি অফিসে গিয়ে ৮ নাম্বার রেজিস্টার তল্লাশি করা। আপনার সংশ্লিষ্ট এলাকার ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যে ৮ নাম্বার রেজিস্টার রয়েছে সে রেজিস্টারের শুধুমাত্র খাস জমিগুলোই অন্তর্ভুক্ত থাকে। 

 সরকারি খাস জমির বৈশিষ্ট্য 

সরকারি খাস জমি রেকর্ড করার নিয়ম-এ কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এই বৈশিষ্ট্য গুলো জানতে পারলে সহজে বোঝা যায় জমিটি খাস কিনা। তাহলে চলুন বৈশিষ্ট্যগুলো জেনে নেওয়া যাক। 

  • খাস জমি ব্যবহারের অধিকার শুধুমাত্র সরকারের থাকবে। 
  • খাস জমির কোন ব্যক্তি মালিকানা থাকবে না। 
  • খাস জমির কোন সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। 
  • খাস জমি কোন সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের নামে থাকে না। 
  • খাস জমিগুলো সরকারি যে কোন প্রয়োজনে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। 
  • খাস জমিগুলো সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের তত্ত্বাবধানে থাকে। 
  • কাজ জমির কোন প্রকার কর বা খাস না পরিশোধ করার দরকার হয় না। 

সরকারি খাস জমির লিজ নেওয়ার নিয়ম 

সরকারি খাস জমির লিজ নেওয়ার ক্ষমতা একমাত্র সংশ্লিষ্ট ডিসি মহোদয়ের রয়েছে। তিনি পারেন এই খাস সম্পত্তি সাধারণ মানুষের মাঝে লিজ দিতে। সরকারি খাস কৃষি জমি লিজ নেয়ার জন্য আপনার জেলা ডিসি অফিসে যোগাযোগ করতে হবে এবং জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছে আবেদন করতে হবে। আবেদন করার পরে অফিসিয়াল কিছু কার্যক্রম থাকে সেগুলো পর্যায়ক্রমে ডিসি অফিস, এসি ল্যান্ড অফিস এবং ভূমি অফিস থেকে সম্পন্ন হওয়ার পরে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সরকারি খাস সম্পত্তি আপনাকে বন্দোবস্ত প্রদান করবে। 

সরকারি খাস জমির লিজ নেওয়ার নিয়ম

এরপর সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক মহোদয় আবেদনকারী সকল ডকুমেন্টস পর্যালোচনা করে যখন নিশ্চিত হবেন যে এই ব্যক্তিকে সরকারি কাজ কৃষি জমি লেজ দেওয়া হচ্ছে তখন আপনাকে নির্দিষ্ট পরিমাণ সালামি গ্রহণ করে একটি কবুলিয়ত বা পাট্টা প্রদান করবেন। এগুলো প্রদান করার পর সেটার একটি কপি অবশ্যই সংশ্লিষ্ট সাব- রেজিস্ট্রি অফিসে প্রেরণ করতে হবে। এরপর সব রেজিস্টার যখন এই কবুলিয়ত বা পাট্টাটি পাবেন তখন আপনার উপস্থিতিতে সেটা আপনার নামে রেজিস্ট্রি করে দেওয়া হবে। 

কবুলিয়াতের রেজিস্ট্রি হওয়ার পরে রেজিস্ট্রার কপি নিয়ে সংশ্লিষ্ট এসি ল্যান্ড অফিসে গিয়ে নামজারি আবেদন করতে হবে। নামজারির মাধ্যমে আপনার নামে খাস জমির রেকর্ড হওয়ার পরে আপনি জমিটির ৯৯ বছরের জন্য ভোগ দখল করতে পারবেন। 

এছাড়াও জমির খতিয়ান যাচাই করব কিভাবে জানতে চাইলে এই পোস্টটি ভিজিট করতে পারেন আশা করি উপকৃত হবেন। 

খাস জমি রেকর্ড করার নিয়ম

খাস জমি রেকর্ড করার নিয়ম

১৯৫০ সালে টেস্ট একুইজিশন এন্ড তেন্নসি অ্যাক্টের ৭৬ দ্বারা এক উপধারার খাস জমি রেকর্ড করার নিয়ম সম্পর্কে উক্ত ধারায় বলা হয়েছে যে কোন ভূমি যদি সরকারের হাতে নেস্ত হয় এবং সে জমির গুলি যদি সম্পূর্ণ সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন থাকে তাহলে সরকার এই ভূমিগুলো সরকার কর্তৃক প্রণীত পদ্ধতি অনুযায়ী বন্দোবস্ত দিতে পারেন অথবা অন্য কোনভাবে ব্যবহার করতে পারেন সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন হিসেবেই বোঝবে।

খাস খতিয়ান হচ্ছে যে খতিয়ান সরকারের পক্ষে জেলা প্রশাসক মালিক সেসব খতিয়ান কে খাস খতিয়ান বলা হয়। তো এই জমির খাস খতিয়ান কিন্তু আমাদের অনেকেরই কিন্তু হয়ে আছে। দেখা যাচ্ছে খতিয়ানের মালিক পূর্বে বিদেশ চলে গেছে বা মারা গেছে সাধারণত জমির ৩০ থেকে ৩৫ বছর পর্যন্ত যদি আপনার জমির খাসনা পরিশোধ না করেন বা কোন ধরনের খোঁজখবর না করেন তাহলে কিন্তু সে জমিটা খাস খতিয়ান এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়।

খাস জমি রেকর্ড করার নিয়মে এটি কিন্তু খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্যাপার আপনার জমির কিন্তু অবশ্য চাষাবাদ করতে হবে এবং জমির নিয়মিত খাসনা পরিশোধ করতে হবে। 

খাস জমির করণীয় কি? 

এবার খাস জমির করণীয় কি? 

এই বিষয়ে গত ২৯ শে জুলাই ২০২১ সালে প্রণীত প্রজ্ঞাপনে ৬ নং প্যারাগ্রাফের অনুচ্ছেদে বলা হয় যে প্রকৃত ভুল বা যথার্থ ভুল মানে এই যে আপনার খতিয়ানের বা আপনার নামের একটা ছোটখাট ভুল হয়েছে যেমন জয়ের জায়গায় জয়া এবং আকারের জায়গায় ও কার হয়ে গেছে এই নামে ছোটখাটো ভুল। এরপর জমির খতিয়ানের মধ্যে দাগ নাম্বারটা ভুল হয়ে গেছে একই দাগ নাম্বার ওই মৌজর মধ্যে দুইটা আছে। অর্থাৎ এই ছোটখাটো ভুলগুলোরকেই বলা হচ্ছে যে একুশ সালের প্রজ্ঞাপনে বলা হচ্ছে যে এই প্রকৃত ভুল বা যথার্থ ভুল ছোটখাটো ভুল যেগুলো আছে সেগুলো কিন্তু আপনি উপজেলা ভূমি অফিস মানে আপনার সহকারী কমিশনার বা উপজেলার ভূমি অফিসে গিয়ে আবেদন করলে এগুলো রেকর্ড সংশোধন করতে পারবেন। 

খাস জমি বন্দোবস্ত করার শর্ত  

আপনি যদি কাজ জমি বন্দোবস্ত করার জন্য আবেদন করতে চান তাহলে আপনাকে ভূমিহীন হতে হবে অথবা আপনার ১০ শতকের কম জমি থাকতে হবে। আপনার যদি ১০ শতকেরও বেশি জমি থাকে তাহলে আপনি খাস জমির বন্দোবস্ত করার জন্য আবেদন করতে পারবেন না। 

যেসব জমিগুলোর কোন ব্যক্তির নাম কিংবা সরকারি সংস্থার নাম রেকর্ড করা নেই সেইসব জমি প্রতিটি মৌজার ১ নং খতিয়ানে উল্লেখ করা থাকে। এইসব জমি সাধারণত যারা প্রশাসকের নামের রেকর্ড করা হয়ে থাকে। আপনি যদি ভূমিহীন অথবা ১০ শতকের কম পরিমাণ জমি থাকে তাহলে আপনি কাজ জমি ৯৯ বছরের জন্য বন্দোবস্ত করার আবেদন করতে পারবেন। 

বন্দোবস্ত আবেদনের পর আপনারা আবেদন অনুমোদিত হলে নামজারি খতিয়ানের জন্য আবেদন করতে হবে। আপনি চাইলে অনলাইনে অথবা সরাসরি এসি ল্যান্ড অফিসে গিয়ে নামজারি আবেদন করতে পারবেন। এরপর বাকি কাজগুলো ভূমি অফিস করবে। তবে আপনাকে নামজারি করার জন্য নাম জারি ফি জমা দিতে হবে। নামজারি হয়ে গেলে নাম জারি খতিয়ান অনুসন্ধা করে দেখতে পারেন আপনার নামের রেকর্ড হয়েছে কিনা জমিটি। 

শেষ মন্তব্য 

আজকের এই পোস্টে আপনাদের সাথে কাজ খাস জমি রেকর্ড করার নিয়ম নিয়ে সম্পূর্ণ আলোচনা করেছি। এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়লে কিভাবে খাস জমি রেকর্ড করার নিয়ম তা সম্পর্কে জানতে পারবেন। আশা করি আজকের পোষ্টটি সম্পন্ন বুঝতে পেরেছেন। এছাড়াও খতিয়ান অনুসন্ধান ই -নামজারি যাচায় ২০২৪ সম্পর্কে জানতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন। এমন আরো নতুন নতুন তত পেতে  বাংলা ইনফোর সাথে থাকুন। ধন্যবাদ। 

খাস জমি রেকর্ড করার নিয়ম জেনে নিন সংক্রান্ত আরো কিছু জানতে চাইলে নিচের উল্লেখিত ভিডিওটি দেখতে পারেন। 

খাস জমি রেকর্ড করার নিয়ম জেনে নিন সাধারণ কিছু জিজ্ঞেসই তো প্রশ্ন। 

FAQ’s 

১. খাস জমির মালিক কে? 

খাস জমির মালিক সরকার নিজেই। প্রতিটি জেলার খাস জমিগুলো জেলা প্রশাসক মহোদয়ের অধীনে থাকে। 

২. জমির রেকর্ড করতে কত টাকা লাগবে?

১। আবেদনের জন্য কোর্ট ফি – ২০ টাকা। 
২। নোটিশ জারি ফি – ৫০ টাকা। 
৩। রেকর্ড সংশোধন বা হাল করন ফি – ১,০০০ টাকা। 
৪। প্রতি কবে মিউটেশন খতিয়ান সরবরাহ বাবদ ১০০ টাকা। 

৩. খাস জমি কত প্রকার? 

খাস জমি সাধারণত চার প্রকার হয়ে থাকে। 
প্রথমত, নদী-নালা রাস্তাঘাট ইত্যাদি। অর্থাৎ সরকারি যে সকল জায়গায় সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়ত ব্যবহার করে থাকেন। 
কৃষি ও অকৃষি জমি। 
যে জমিগুলো সরকার নানা ধরনের সরকারের প্রয়োজনের জনগণের নিকট থেকে অধিগ্রহণ করেছে বা ক্রয় করেছে 
নদী ভাঙ্গনের ফলে সৃষ্ট খাস জমি। 

Leave a Comment