আপনারা যারা আমাদের বাংলাদেশ থেকে ও পৃথিবীর অন্যতম দেশ কানাডা যেতে চান তাদের সবার সরকারিভাবে কানাডা যাওয়া উচিত কেন না। আপনি যদি সরকারিভাবে কানাডা যাওয়ার উপায়-এ যেতে পারেন তাহলে আপনি সকল দিক থেকে সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। তবে সরকারি ভাবে কানাডায় যেতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই সরকারিভাবে কানাডা যাওয়ার উপায় গুলো জানতে হবে।
তাই আজকের পোষ্টের সরকারিভাবে কানাডা যাওয়ার উপায় 2024 কি কি ডকুমেন্টস লাগে, কানাডা ভিসা ক্যাটাগরি , কানাডা ভিসা পাওয়ার উপায়, কানাডা কৃষি ভিসা, কানাডা স্টুডেন্ট ভিসা, কানাডা ভিসা প্রসেসিং এজেন্ট ইন বাংলাদেশ ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। তাই অবশ্যই সম্পূর্ণ পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন
সরকারিভাবে কানাডা যাওয়ার উপায় ?
যারা সরকারিভাবে কানাডা যাওয়ার উপায়-এ পৃথিবীর অন্যতম দেশ কানাডায় যেতে চান তাদের জন্য এমন অনেক উপায় আছে যেগুলোর মাধ্যমে আপনি সরকারিভাবে কানাডায় যেতে পারবেন। আর সেই উপায়গুলোর নিচে দেওয়া হলো যেমন-
- ইনভেস্টমেন্ট ইমিটেশন প্রোগ্রাম
- প্রাদেশিক মনোনীত প্রোগ্রাম
- এলএমআইএ ওয়ার্ক ভিসা
- ফ্যামিলি প্লাস স্পন্সারশিপ
- এক্সপ্রেস এবং টিপ্রোগ্রাম
আপনি উপরে উল্লেখিত এই পাঁচটি উপায়ে সরকারিভাবে কানাডায় যেতে পারবেন। তবে যদি আপনি সরকারিভাবে কানাডায় যেতে চান তাহলে আপনার নিকট বেশ কিছু ডকুমেন্টস এর প্রয়োজন হবে। যেগুলো নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলো।
কানাডা ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
সরকারিভাবে কানাডা যাওয়ার উপায়-এ কানাডায় যেতে কি কি ডকুমেন্টস লাগে? যখন আপনি বিভিন্ন প্রয়োজনে কানাডায় যাবেন তখন আপনার নিকট বেশ কিছু ডকুমেন্টস এর প্রয়োজন হবে। তবে আপনার ক্ষেত্রে কোন কোন ডকুমেন্টস প্রদান করতে হবে সেটা সম্পূর্ণ আপনার কানাডা যাওয়ার উদ্দেশ্যের উপর এবার করবে।
যেমন আপনি যদি সরকারিভাবে কানাডা যাওয়ার উপায় কানাডায় যান তাহলে আপনার যেসব কাগজপত্র লাগবে তার থেকে ভিন্ন ডকুমেন্টস এর প্রয়োজন হবে যখন আপনি স্টুডেন্ট ভিসায় কানাডায় যাবেন। তাই আজকে আপনাদের ভিন্ন ভিন্ন ভিসার ডকুমেন্ট এর তালিকা নিচে প্রদান করা হলো যেমন –
কানাডায় ভিজিট ভিসায় কি কি কাগজপত্র লাগে
আপনার নিকট একটি বৈধ পাসপোর্ট থাকতে হবে যার মেয়াদ কমপক্ষে ৬ মাস থাকতে হবে। যদি আপনি ৬ মাসের বেশি থাকতে চান তাহলে আপনাকে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে।
কানাডায় স্টুডেন্টসের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
- একটি বৈধ ভিসা থাকতে হবে যার মেয়াদ সর্বনিম্ন ৬ মাস থাকতে হবে।
- স্টাডি ফরমেট এর আবেদন পত্রের কপি লাগবে।
- কানাডা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ভর্তির অফার লেটার থাকতে হবে।
- প্রতিষ্ঠান বেদে আপনার নির্দিষ্ট ব্যাংক ব্যালেন্স দেখাতে হবে।
- আপনার মেডিকেল সার্টিফিকেট থাকতে হবে।
- কানাডায় জব ভিসার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
- ছয় মাস মেয়াদে পাসপোর্ট থাকতে হবে।
- ওয়ার্ক পারমিট এর আবেদন কপি থাকতে হবে।
- নির্দিষ্ট কাজের দক্ষতার সনদ থাকতে হবে।
- একটি মেডিকেল রিপোর্ট থাকতে হবে।
- নির্ধারিত পরিমান ব্যাংক ব্যালেন্স থাকতে হবে।
- কানাডায় অবস্থিত চাকরিদাতার অফার লেটার থাকতে হবে।
তো বিভিন্ন কারণে কানাডায় যেতে যেসব কাগজপত্র এর প্রয়োজন হয়। তবে এগুলোর বাইরে ও আরো কিছু কাগজপত্রের প্রয়োজন হতে পারে। যেমন- বৈবাহিক সার্টিফিকেট, জন্ম নিবন্ধন সার্টিফিকেট ইত্যাদি।
কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
ওয়ার্ক পারমিট ভিসাই কানাডায় যেতে হলে আপনাকে অবশ্যই জব অফার পেতে হবে। তবে যেকোনো ধরনের জব অফার পেলে হবে না। এমন জব অফার পেতে হবে যেটা আসলেই কানাডা খুব চাহিদা আছে কিন্তু মানুষ নেই। কিন্তু বাংলাদেশের যে ফেসবুক, বা বিভিন্ন পত্রিকায় বিভিন্ন বিজ্ঞাপন হয় যে ১ লক্ষ শ্রমিক নিচ্ছে এরকম গুলোতে যাওয়া যায় না। এগুলো হলো ভুয়া বিজ্ঞাপন।
তবে বি এবং সি ক্যাটাগরি জব গুলোতে আসা যায় তবে ডি ক্যাটাগরি জবগুলোতে আসা যায় না। ডি এর উপরে যে ক্যাটাগরি গুলো রয়েছে সেগুলোতে যাওয়া সম্ভব। তবে যদি আপনার ওই কাজের উপর ভালো অভিজ্ঞতা থাকে এবং কানাডাতেও এটির চাহিদা থাকে। কানাডাতে যদি
চাহিদা না থাকে তাহলে আপনি জব অফার পেলেও ইস্যু হবে না। যদি আপনার কোন এম্প্লয়ার আপনাকে কোন জব অফার দেয় তাহলে সে এম্প্লয়ারকে ইস্যু করার জন্য সরকারের কাছে আবার আবেদন করতে হবে।
কানাডা যাওয়ার খরচ কত ?
কানাডা যাওয়ার ভিসার খরচ কত হবে তার নির্ভর করবে আপনার ভিসার ধরন এবং কাজের উপর। আপনি যদি সরকারিভাবে কানাডা যাওয়ার উপায়-এ কানাডা যান তাহলে আপনার খরচ পরবে কম। আজকে আপনাদের সাথে স্পন্সরশি ভিসায় কানাডায় যাওয়ার খরচ কত হবে তা নিয়ে বলবো।
কানাডাতে স্পন্সারশিপ ভিসা নিয়ে গেলে সকল খরচ কোম্পানি বহন করবে। থেকে যে কর্মী তেমন একটা খরচ হবে না। তবে কর্মী নিজস্ব ডকুমেন্টসগুলো তৈরি করতে কোম্পানি যদি আপনাকে ভিসা কস্ট না দেয় তাহলে আপনাকে ভিসা কস্ট তৈরি করতে হবে। ভিসার কস্ট কত হতে পারে সর্বোচ্চ ৫০ থেকে ১ লক্ষ টাকা। এটা আপনার ভিসার ক্যাটাগরির ওপর নির্ভর করবে।
এবং অন্যান্য খরচ মিলিয়ে আপনার ২ থেকে ৩ লাখ টাকা খরচ হয়। এছাড়া কানাডায় যেতে আপনার অফিসিয়ালি আর কোন খরচ হবে না। তবে আনঅফিসিয়ালি কিছু নিজস্ব ডকুমেন্ট তৈরি করতে যেসব খরচ হবে ওইগুলোই হবে।
কানাডা কৃষি ভিসা
বাংলাদেশের অনেক মানুষ হয়ে আছে যারা কানাডায় কৃষি ভিসায় যেতে চাই। কানাডায় কৃষি ভিসার জন্য আপনারা দুটি উপায়ে আবেদন করতে পারবেন। একটি হলো সরকারিভাবে এবং আরেকটি হলো এজেন্সির মাধ্যমে। তবে কানাডায় কৃষি ভিসা নিয়ে যাওয়ার জন্য আপনাকে সর্বপ্রথম কৃষি ভিসার চাকরির নিয়োগ কারী প্রতিষ্ঠানে আবেদন করতে হবে। এরপর সম্পূর্ণ প্রসেসিং এরপর আপনার আবেদন অনুমোদিত হলে আপনি সেই ভিসায় কানাডায় যেতে পারবেন।
কানাডা কৃষি ভিসা বেতন নির্ধারণ করা হয় কাজের দক্ষতা অনুযায়ী। যদি আপনার কাজের দক্ষতা ভালো থাকে তাহলে বেতন বেশি পাবেন আর যদি কৃষিকাজের উপর দক্ষতা কম থাকে তাহলে বেতনও কম পাবেন। কানাডায় কৃষি কাজের উপর দক্ষ কর্মীরা বাংলাদেশী টাকায় ৮০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা বেতন পেয়ে থাকেন।
কানাডা কৃষি ভিসার জন্য যেসব কাগজপত্র প্রয়োজন
- আপনার নিকট এক বছর মেয়াদী বৈধ পাসপোর্ট থাকতে হবে।
- কানাডায় নিয়োগকারী চাকরির অফার লেখা থাকতে হবে।
- কাজের চুক্তিপত্র থাকতে হবে।
- কানাডায় আবেদন ফর্ম থাকতে হবে।
- আবেদনকারী মেডিকেল সার্টিফিকেট থাকতে হবে।
- আবেদনকারীর পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট থাকতে হবে
- আবেদনকারীর সদ্য ব্যাকগ্রাউন্ডের দশ কপি রঙিন পাসপোর্ট সাইজের ছবি থাকতে হবে।
কানাডা স্টুডেন্ট ভিসা
উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের কাছে সবচেয়ে অন্যতম আকর্ষণীয় দেশ হচ্ছে কানাডা। উন্নত জীবনযাপন চাকরিও পড়াশোনা জন্য কানাডা বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় দেশ। কানাডায় ডিগ্রী বিশ্বের প্রথম সারির দেশগুলোর সঙ্গে তুলনীয়।
এই দেশে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন শিক্ষা ব্যবস্থা পড়াশোনার পাশাপাশি খন্ডকালীন কাজের সুযোগ সুবিধা এবং পড়াশোনা শেষে স্বল্প সময়ের মতো অভিবাসী হবার সুযোগ ছাড়াও নানা সুবিধার জন্য কানাটাকে বলা হয়ে থাকে উচ্চশিক্ষার স্বর্গরাজ্য। এবিসি শিক্ষার্থীরা ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে কানাডা স্টুডেন্ট ভিসার আবেদন করতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে কানাটা ভ্রমনের নির্ধারিত তারিখের তিন মাস আগে পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন।
কানাডার স্টুডেন্ট ভিসার জন্য সম্পূর্ণ প্রসেসিং সম্পূর্ণ করার পর আপনার খরচ হবে ১৫০ কানাডিয়ান ডলার বা , ৬১০ টাকা।এছাড়া ও স্টাডি পারমিট এর জন্য আবেদন করার পর নিকটস্থ ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার থেকে বায়োমেট্রিক্স ইনফর্মেশন অর্থাৎ ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও ছবি তুলে পাঠাতে হবে। এর জন্য ১৪ হাজার থেকে ১৭ হাজার টাকার মত খরচ হতে পারে।
কানাডা ভিসা প্রসেসিং এজেন্ট ইন বাংলাদেশ
কানাডা ভিসার জন্য বিশ্বে যেকোন প্রান্ত থেকে অনলাইনে আবেদন করতে পারেন। কানাডার ভিসা প্রসেস সময় ২০ থেকে ২৫ কর্মদিবস। প্রসেসিং ফি, ভিসা ফি, বায়োমেট্রিক্স ফি সব মিলিয়ে ১৯,৫০০ টাকা। আগে যাদের ১০ বছরের মধ্যে বায়োমেট্রিক দেওয়া আছে তাদের নতুন করে বায়োমেট্রিক দিতে হবে না।
কানাডা ভিসা প্রসেসিং এর জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট
- ৬ মাস মেয়াদে বৈধ পাসপোর্ট থাকতে হবে।
- ব্যাংক স্টেটমেন্ট সার্টিফিকেট থাকতে হবে।
- ট্রেড লাইসেন্স থাকতে হবে।
- চাকরিজীবীদের জন্য কানাডায় নিয়োগ কারী অফিস লেটার থাকতে হবে।
- শুধু তোলা ১ কপি রঙিন ও সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড ছবি থাকতে হবে।
- ন্যাশনাল আইডি কার্ডে ফটোকপি।
- টিআইএন সার্টিফিকেট।
কানাডা ভিসা সংক্রান্ত যেকোন তথ্যের জন্য যোগাযোগ
কানাডিয়ান হাই কমিশন, বাংলাদেশ
ঠিকানা: জাতিসংঘ সড়ক, বারিধারা, ঢাকা -12 12, বাংলাদেশ।
ইমেইল এড্রেস: [email protected]
ওয়েবসাইট এড্রেস: www.international.gc.ca/country-pays/bangladesh/index.aspx
অফিস এর সময় সোমবার থেকে রবিবার: 08: 00 – 12: 30 (ওয়াক- ইন)
শেষ মন্তব্য
আজকের পোস্ট আপনাদের সরকারিভাবে কানাডা যাওয়ার উপায় ২০২৪, কানাডা ভিসা পাওয়ার উপায় ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য আলোচনা করেছি। আশা করি আপনারা কানাডা ভিসার সম্পূর্ণ প্রসেসটি বুঝতে পেরেছেন। এছাড়াও পিজি কাজের ভিসা সম্পর্কে জানতে চাইলে এই পোস্টটি ভিজিট করতে পারেন। এমন আরো ভিসা সংক্রান্ত নতুন নতুন তথ্য পেতে বাংলা ইনফোর সাথে যুক্ত হন ধন্যবাদ।
সরকারিভাবে কানাডা যাওয়ার উপায় 2024, কানাডা ভিসা পাওয়ার উপায় সংক্রান্ত আরো কিছু জানতে চাইলে নিচের উল্লেখিত ভিডিওটি দেখতে পারেন।
সরকারিভাবে কানাডা যাওয়ার উপায় নিয়ে কিছু জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন।
FAQ’s
১. বাংলাদেশ থেকে কানাডার ভিসা পেতে কতদিন লাগে?
সাধারণত ডিজিটাল ভিসা প্রক্রিয়াকরণের প্রায় ৪থেকে ১২ সপ্তাহের মধ্য যেখানে ছাত্র এবং কাজের ভিসার জন্য ২ মাস পর্যন্ত সময় লাগে।
২. বাংলাদেশের কানাডা ভিসা ফি কিভাবে দিতে হয়?
মেইলের মাধ্যমে বাংলাদেশী টাকায় “কানাডা হাইকমিশন” কে প্রদেয় স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক ড্রাফটের মাধ্যমে পরিষেবা সার্চ গুলি পরিশোধ করতে হবে।
৩. কানাডার ১৬ মাসের কোর্স কি ২ বছর?
কানাডায় সাধারণত দুই ধরনের ফিজি ডিপ্লমা কোর্স রয়েছে। একটি ১ বছর বা দুই সেমিস্টার বা চার মাস মেয়াদের। যেখানে দ্বিতীয়টির সময়কাল ২ বছর বা ৪ সেমিস্টার বা ১৬ মাস।
৪. কানাডায় প্রতিবছর কতজন কর্মী নেওয়া হয়?
কানাডা প্রতিবছর প্রায় তিন লক্ষ কর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়।
৫. কানাডা ভিসা প্রসেসিং ফি কত?
কানাডা ভিসা প্রসেসিং ফি ১৫ হাজার টাকা।