জাপান পৃথিবী অন্যতম একটি আধুনিক উন্নত প্রযুক্তির নির্ভর দেশ। এই দেশে কবি চাহিদা পূরণের জন্য প্রতিবছর পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে জাপান ওয়ার্ক পারমিট ভিসার শ্রমিক নিয়োগ দিয়ে থাকেন। তাই যারা জাপান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে জাপানে যেতে চান তাদের জন্য আজকের পোস্টে, জাপান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৪, জাপান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা, জাপানে কোন কাজের চাহিদা বেশি, জাপানে যাওয়ার জন্য বিএমইটি টেকনিক্যাল ইন্টার্ন পরীক্ষা, জাপানি ভাষা শিক্ষা কেন্দ্র ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। তাই অবশ্য সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ুন।
জাপান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৪
খুব সহজে নিচ্ছে জাপানের ওয়ার্ক ভিসা ২০২৪ সালে জাপান ওয়ার্ক ভিসার জন্য তাদের ইমিটেশন সিস্টেমকে অনেক সহজ করেছে। বর্তমানে জাপান ওয়ার্ক ভিসা একটি চালু রয়েছে। আরেকটি ভিসা সারা বছরই চালু থাকে। যে বিচারটি বর্তমানে যে ভিসাটি চালু রয়েছে তা বর্তমানে জাপান সরকার নাম দিয়েছেন ডিজিটাল মোমেন্ট। এবং সারা বছর চালু থাকে সে বিষয়টি হচ্ছে স্পন্সারশিপ ভিসা। এটি শুধু জাপান না পৃথিবীর যেকোনো ভিসা জন্য সারা বছরই চালু থাকে।
স্পন্সারশিপ ভিসাটি হলো আপনার যে কোন দেশ থেকে যেকোনো একটি কোম্পানিতে আপনার একটি চাকরি জোগাড় করতে হবে এবং সে কোম্পানি থেকে জব অফার বা জব লেটার নেওয়ার পরে এগ্রিমেন্ট লেটার নেওয়ার পরে জাপান এম্বাসিতে সেগুলো জমা দিয়ে ভিসা নিয়ে জাপানে বা যেকোনো দেশের ওই ভিসা বা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে যাওয়া সম্ভব। এটা হলো স্পন্সারশিপ ভিসা।
কিন্তু জাপান এই ধরনের স্পন্সারশিপ ভিসা সারা বছর চালু রাখলেও নতুন করে যে ওয়ার্ক ভিসার প্রসেসটি চালু করেছে সেটার নাম রেখেছে ডিজিটাল মোমেট। তবে এটি সবার জন্য না। কিন্তু এই ভিসাটির নাম বানিয়ে বিভিন্ন প্রতারক চক্র অলরেডি ধান্দাবাজি শুরু করে দিয়েছে।
কিন্তু এই ডিজিটাল মোমেন্ট জাপানের এই ভিসাটির মাধ্যমে আসলেই কি সবাই জাপানে যেতে পারবে? ডিজিটাল মোমেট এই ভিসায় কারা জাপানের যেতে পারবেন এবং যাওয়ার সুযোগ দিবে বা এখানেগিয়ে বসবাস করার জন্য বা কাজ করার জন্য। সে সম্পর্কে আপনাদের একটি পরিষ্কার ধারণা দিব। যাতে কোন প্রতারক চক্র বা প্রতারক এজেন্সি গুলো আপনাদের ধোকা দিতে না পারে।
জাপান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা
এখন জাপান সরকার একটি নতুন ভিসা চালু করতে যাচ্ছে যা বিদেশি সংস্থাগুলোর কর্মীদের দৃষ্টিতে বসবাস ও সহজ করে তুলবে। জাপানের অভিবাসন পরিষেবা সংস্থার বরাত দিয়ে শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) কে আত্মাদেশিয়ার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, ভ্রমণের পাশাপাশি উচ্চ দক্ষতা সম্পন্ন কর্মীদের ৬ মাস পর্যন্ত টেলিওয়ার্কিং ভিত্তিতে জাপানে কাজ করার অনুমতি মিলবে।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে আগামী মাসের মধ্যে এই কার্যক্রম চালু করার হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। জাপান “ডিজিটাল নোম্যাডদের” স্বাগত জানাতে প্রস্তুত রয়েছে। যারা যেকোনো জায়গা থেকে কাজ করতে আসতে পারবেন।
রিপোর্ট অনুসারে “ডিজিটাল নোম্যাড” যোগ্য হতে হতে আবেদনকারীদের বার্ষিক আয় অবশ্যই ১ কোটি ইয়ান বা ৬৮ হাজার মার্কিন ডলারের সমতুল্য হতে হবে।
এছাড়াও আবেদনকারীদের অবশ্যই সেই ৫০ টি দেশের এবং অঞ্চলের একটি নাগরিক হতে হবে, যাদের সঙ্গে জাপানের ভিসা মওকুফ চুক্তি রয়েছে এবং তাদের ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য বীমা রয়েছে। প্রতিবেদনটিতে আরো বলা হয়েছে, এই ভিসা দাড়িটা তাদের পরিবারের সদস্যদের ও জাপানে নিয়ে আসার অনুমতি পাবে। তবে এঁকেছে তাদের ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য বীমার আওতায় থাকতে হবে।
জাপানের এই “ডিজিটাল নোম্যাড” ভিসার অনুমতি পেতে হলে আপনাকে অবশ্যই হাই স্কিল এবং হাই প্রফেশনাল হতে হবে। একটি কোম্পানির সব থেকে বড় পোস্ট কোনগুলো সে পোষ্টের মধ্যে আপনাকে একটা এক কথায় বলতে পারেন টপ 7 বা টপ 10 আপনাকে হতে হবে। এবং এখানে সব থেকে বেশি অগ্রাধিকার পাবেন। আইটি সেক্টরে যারা রয়েছেন তারা। শুধু তাই নয় জাপানে এই “ডিজিটাল নোম্যাড” ভিসাটি পেতে হলে আপনাকে বার্ষিক হারে ৬৮ হাজার মার্কিন ডলার আয় থাকতে হবে। আপনাকে দেখাতে হবে যে আমি বার্ষিক ৬৮ হাজার মার্কিন ডলার অর্থাৎ ইউএসডি ইনকাম করে থাকি।
এছাড়াও এমন ৫০ টি দেশ বা ওই অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত হতে হবে যাদেরকে জাপান ফ্রি ভিসাতে তাদের দেশে যাওয়া আসার অনুমতি দেয়। আমাদের বাংলাদেশ থেকে কিন্তু ফ্রি ভিসায় যাওয়া যায় না। সুতরাং এই ভিসার জন্য আমাদের বাংলাদেশের এলিজিবিলিটি নেই কিন্তু কিছু প্রতারক এজেন্সি বা প্রতারক চক্র গুলো এই ভিসার নাম দিয়ে মানুষের সাথে প্রতারণা শুরু করে দিয়েছে।
জাপানে কোন কাজের চাহিদা বেশি
বিভিন্ন ধরনের কাজের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে প্রায় অধিকাংশ শ্রমিক জাপানে কাজের উদ্দেশ্যে রওনা দেই। তবে জাপান ভিসা আবেদন করার আগে অবশ্যই জাপানে কোন কাজের চাহিদা বেশি তা বিস্তারিত জেনে তারপর আবেদন করা উচিত। তাই এই অংশে জাপানে কোন কাজের চাহিদা বেশি সেগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো –
- ফ্যাক্টরি
- কনস্ট্রাকশন
- ইলেকট্রনিক্স
- কম্পিউটার অপারেটর
- মেকানিক্যাল
- ক্লিনার
- হোম ডেলিভারি ম্যান
- ফুড প্যাকেজিং
- সেলসম্যান
- কৃষিকাজ
- মার্কেটিং ইত্যাদি।
জাপানী ভাষা শিক্ষা কেন্দ্র
বর্তমানে জাপানি ভাষা শিক্ষার জন্য অনুমোদিত কেন্দ্রগুলো হলো:
- বাংলাদেশ কোরিয়া টিটিসি (মিরপুর);
- শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব মহিলা টিটিসি (মিরপুর);
- বাংলাদেশ কোরিয়া টিটিসি (চট্টগ্রাম);
- প্রবাসী কল্যাণ ভবন (ঢাকা);
- চাঁপাইনবাবগঞ্জ টিটিসি;
- কুষ্টিয়া টিটিসি;
- গাইবান্ধা টিটিসি;
- রাঙামাটি টিটিসি;
- বান্দরবান টিটিসি;
- নোয়াখালী টিটিসি;
- ঝিনাইদহ টিটিসি;
- খুলনা টিটিসি;
- রাজশাহী টিটিসি;
- ব্রাহ্মণবাড়িয়া টিটিসি;
- যশোর টিটিসি;
- দিনাজপুর টিটিসি;
- মাদারিপুর টিটিসি;
- জয়পুরহাট টিটিসি;
- রংপুর টিটিসি;
- পাবনা টিটিসি;
- ময়মনসিংহ টিটিসি;
- নীলফামারী টিটিসি;
- নরসিংদী টিটিসি;
- মাগুরা টিটিসি;
- মৌলভীবাজার টিটিসি;
- জামালপুর টিটিসি;
- নেত্রকোনা টিটিসি;
জাপান যেতে কত টাকা লাগে
জাপানের যেতে হলে কি ধরনের খরচ হবে তা আসলে সে কে কোন ভিসায় আছে তার ওপর নির্ভর করে। তাই আজকে আমি আপনাদের সাথে লোকেশন ভিত্তিক না গড় ভিত্তিতে যে খরচটা হয়
তানিয়া আলোচনা করব। আপনার খরচটি নির্ভর করবে আপনি কোন ভিসার ক্যাটাগরিতে জাপান আছেন তার উপর এবং কোন এলাকায় আছেন তার ওপর। আজকে আপনাদের জব ভিসার নিয়ে কত টাকা খরচ হয় তা বলবো।
আপনি যখন জব ভিসায় ট্রান্সফার হবেন তখন খরচ অনেকটাই বেড়ে যায়। স্টুডেন্ট ভিসার যে খরচ তার থেকে প্রায় ৪,৫ গুণ খরচ বেশি হয়ে যায়। অর্থাৎ আপনার সব মিলিয়ে খরচ হবে ১ লক্ষ ৪১ হাজার টাকা।
জাপান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
- কমপক্ষে ছয় মাসের মেয়াদের একটি পাসপোর্ট।
- জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি।
- সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডে দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি।
- তারিখ সহ সঠিকভাবে পূরণকৃত স্বাক্ষরিত বিচার আবেদন পত্র।
- ছয় মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট।
- নির্দিষ্ট কাজের উপর দক্ষতার সার্টিফিকেট।
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট।
- জাপানের ভাষার শিক্ষার সার্টিফিকেট।
- করোনা ভ্যাকসিনের সার্টিফিকেট।
- যে কোম্পানিতে কাজের জন্য আবেদন করবেন সে কোম্পানির আবেদন লেটার।
- এছাড়া ও মাল্টা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা জানতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন।
- জাপানে যাওয়ার জন্য বিএমইটির টেকনিক্যাল ইন্টার্ন পরীক্ষা
- টেকনিক্যাল ইন্টার্ন হিসেবে যাওয়ার জন্য কি কি যোগ্যতা লাগবে তা নিচে দেওয়া হলো-
- প্রথমে আপনার জাপানি ভাষা শিখতে হবে মিনিমাম লেভেল ৫ পর্যন্ত।
- আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা লাগবে HSC পর্যন্ত।
- আপনার উচ্চতা হতে হবে ৫ ফুট ৩ ইঞ্চি প্রায়।
- এবং আবেদনকারীর বয়স হতে হবে সর্বনিম্ন ১৮ থেকে ৩০ পর্যন্ত।
- এরপর জাপানি ইন্টার্ন পরীক্ষাগুলো হলো
- টেকনিক্যাল ইন্টার্ন গণিত জাপানি বর্ণমালার পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে।
- শারীরিক সক্ষমতার বিষয়ক পরীক্ষা যেমন : সিট আপ, পুশ আপ দৌড়ানো ইত্যাদিতে অংশগ্রহণ করতে হবে।
এরপর IM Japan- এর একটি প্রতিনিধি দল প্রার্থীদের পরীক্ষা নিবেন ওই পরীক্ষা উত্তীর্ণের হওয়ার পর পরবর্তী প্রশিক্ষণের জন্য সুযোগ দেওয়া হবে।
এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর বাংলাদেশের জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর বিএমআইটি আওতাধীন কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এরপর ছয় মাস মেয়াদী প্রি ডিপারচার ট্রেনিং সম্পন্ন করতে হবে। এই ট্রেনিং সম্পন্ন করে উত্তীর্ণ হলে টেকনিক্যাল ইন্টার্ন হিসেবে প্রাথমিকভাবে তিন বছরের কর্মচুক্তিতে জাপানে যেতে পারবেন।
শেষ মন্তব্য
বর্তমান সময়ে কিছু প্রতারক চক্র বা প্রতারক এজেন্সি জাপান ওয়ার্ক পারমিট ভিসার কথা বলে অনেকের সাথেই প্রতারণা করছেন। যারা এজেন্সির মাধ্যমে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা আবেদন করবেন তারা সে ক্ষেত্রে সচেতন থাকুন। যার জাপান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কে জানেন না তারা এই পোস্টটি পড়লে তা বিস্তারিত জানতে পারবেন।
এছাড়াও মাল্টা কাজের ভিসা ২০২৪ সম্পর্কে জানতে চাইলে এই পোস্টটি ভিজিট করতে পারেন। এমন আরো ভিসা সংক্রান্ত নতুন নতুন তথ্য পেতে বাংলা ইনফোর সাথে যুক্ত হন। ধন্যবাদ।
জাপান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৪ | জাপান ভিসা প্রসেসিং সংক্রান্ত আরো কিছু জানতে চাইলে নিজের লিখিত ভিডিওটি দেখতে পারেন।
জাপান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা এর সাধারণ কিছু জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন
FAQ’s
১. জাপান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেতে কত দিন লাগে?
সাধারণত জাপান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা প্রক্রিয়াকরণের পাশ থেকে ১০ দিনের মধ্য হয়ে থাকে। তবে কাজের বিচার জন্য যোগ্যতার প্রশংসাপত্র পাওয়ার প্রক্রিয়াটি তিন মাস পর্যন্ত সময় নিতে পারে।
২. জাপানি ভাষা কোন ভাষার সাথে সম্পর্কিত?
অনেকে বলেন জাপানিদেরকে দক্ষিণ এশিয়ার ভাষা গোষ্ঠীর সাথে সম্পর্কিত। যেমন অস্ট্রেনেশিয়ান অস্ট্রোএশিয়াটিক।
৩. জাপান কাজের ভিসার দাম কত?
সরকারিভাবে জাপানে যেতে ৫০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ১ লক্ষ টাকা খরচ হবে কিন্তু বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যমে ওয়ার্ক ভিসা যেতে ৮ থেকে ১২ লক্ষ টাকা খরচ হবে।
৪. জাপানি ভাষার নাম কি?
জাপানের সরকারি ভাষার নাম জাপানি ভাষা।
৫. জাপান ওয়ার্ক ভিসা কবে চালু হবে?
বর্তমানে সরকারিভাবে সরকারিভাবে বাংলাদেশের জন্য জাপানের সকল প্রকার ভিসা কার্যক্রম চালু রয়েছে।