আসসালামু অলাইকুম বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন । আশা করি সবাই ভালো আছেন । বাংলাদেশের বিপুল পরিমান বেকার জনগোষ্ঠী কাজের জন্য প্রতি বছর বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমায়। অনেক বেকার যুবক আর্থিক সংকটের কারনে বিদেশে যেতে পারছেনা। বিদেশের যাওয়ার আশায় বিভিন্ন ব্যাংকে লোনের জন্য ঘুড়ে বেড়ায়। এই সব বেকারদের বিদেশে কর্মসংস্থানের জন্য যে সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান এগিয়ে এসেছে তাদের মধ্যে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক অন্যতম।
বর্তমানে বাংলাদেশে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক বেশ ভালোই জনপ্রিয় । অনেক মানুষ এই ব্যাংক এ লোন নেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন কিন্তু লোন নেওয়ার প্রক্রিয়া বা কিভাবে লোন এর আবেদন করবেন জানেন না। আপনি ও যদি প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে লোন নিতে চান বা লোন নেওয়ার নিয়ম জানতে চান তাহলে আজকের আর্টিকেল টি আপনার জন্য । আজকের আর্টিকেলটিতে আমরা আলোচনা করবো প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন নিয়ে। চলুন জেনে নেই কি ভাবে পাওয়া যায় প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন।
তাহলে চলুন আর দেরি না করে শুরু করা যাক ।
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন:
বেকার লোকদের কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে লোন দিতে ২০১১ ইং সনে গঠন করা হয় প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক । ব্যাংকটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ১ লক্ষ লোকের ও বেশি বেকার দের লোন বিতরণ করেছে। তাই সহজ শর্তে বিনা জামানতে বিদেশে যাওয়ার জন্য পাওয়া যায় এই প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন।
কোন ব্যাংক প্রবাসীদের জন্য লোন দেয়:–
প্রবাসীদের জন্য বাংলাদেশের প্রায় সবকটি ব্যাংক কমবেশি আর্থিক সহায়তা দিয়ে থাকে। তার মধ্যে সবচেয়ে সহজ শর্তে লোন পাওয়া যায় প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে। যারা প্রবাসে যেতে ইচ্ছুক কিন্তু টাকার অভাবে বিদেশে যেতে পারছেন না তারা প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে বেদেশে যেতে পারবেন।
এছাড়া বাংলাদেশ কর্মসংস্থান ব্যাংকও প্রবাসীদের কল্যাণে কাজ করছে। তারাও প্রবাসীদের বা যারা নতুনভাবে বিদেশে যেতে চায় তাদের আর্থিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। আজ আমরা আলোচনা করব বাংলাদেশ প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন থেকে কিভাবে সুবিধা পাওয়া যায়।
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন নিয়ম ২০২৩
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন নিয়ম ২০২৩ আপনি কি প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে লোন নিতে চান? আমাদের মাঝে অনেক প্রবাসী ভাইয়েরা রয়েছেন যারা কিনা এই লোনটি নিতে চাই। কিন্তু প্রবাসী ভাই-বোনেরা জানে না যে এই লোনটি তারা কিভাবে নিবে আর আপনি হলেন তাদের মধ্যে একজন। তাই এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ে জেনে নিন এই প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন কিভাবে নিতে হয়।
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক সুদের হার কত?
বঙ্গবন্ধু অভিবাসী বৃহৎ পরিবার ঋণের ক্ষেত্রে মেয়াদ থাকবে সর্বোচ্চ ১০ বছর। এবং সুদের হারের ক্ষেত্রে পুরুষের জন্য ৯% এবং মহিলার ক্ষেত্রে ৭% হবে।
ব্যাঙ্ক থেকে কত টাকা পার্সোনাল লোন পাওয়া যায় এবং প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে সর্বোচ্চ কত টাকা লোন দেয়?
ব্যাঙ্ক এবং NBFC গুলি সাধারণত 10,000 টাকা থেকে 40 লক্ষ টাকা পর্যন্ত ব্যক্তিগত ঋণ দেয়৷
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক যে খাত গুলোতে লোন দিয়ে থাকে এই গুলো আগে জেনে নেই :
বঙ্গবন্ধু অভিবাসী বৃহৎ পরিবার ঋণ
পুনর্বাসন ঋণ এবং
অভিবাসী ঋণ প্রদান
এই চার ধরণের প্রকল্প অনুসারে আপনি প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে লোন নিতে পারবেন। এছাড়াও যেকোনো গ্রাহক ইচ্ছা করলেই এই ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে পারেন।
প্রবাসী লোন কোথায় পাওয়া যাবে?
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের মতো করেই ঋণের আবেদন করতে হবে। অগ্রণী ব্যাংক : তাদের প্রকল্পের নাম ‘প্রবাসী ঋণ প্রকল্প’। ঋণের পরিমাণ সর্বোচ্চ ৩ লাখ টাকা। ১৫ থেকে ১৮ মাসিক কিস্তিতে অর্থাৎ সোয়া বছর থেকে দেড় বছরের মধ্যে ঋণ পরিশোধ করতে হবে
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন নিতে কি কাগজপত্র প্রয়োজন?
আবেদনকারীর সদ্য তুলা দুই কপি ছবি এবং জাতীয় পরিচয় পত্র এর ডকুমেন্ট প্রদান করতে হবে। এছাড়াও আবেদন কারী ব্যাক্তির স্থায়ী ঠিকানা এর ডকুমেন্ট প্রদান করতে হবে। আবেদনকারী জামিনদারের সদ্যতোলা দুই কপি ছবি এবং স্বত্বাধিকার সূত্রে জাতীয় পরিচয় পত্র এর ডকুমেন্ট। শারীরিক যোগ্যতার সার্টিফিকেট প্রদান করতে
হবে।
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন নিতে কি কি লাগে:
এই ব্যাংক থেকে লোন নিতে নিচের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং ছবি লাগবে
৩ কপি পাসপোর্ট সাইজের সত্যায়িত রঙিন ছবি লাগবে।
আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয় পত্র, পাসপোর্ট এবং পৌরসভা অথবা ইউনিয়ন পরিষদের সার্টিফিকেট লাগবে।
জামিনদারের দুই কপি ছবি এবং জাতীয় পরিচয় পত্র জমা দিতে হবে।
জামিনদারের ব্যাংক একাউন্ট এর চেক ৩ পাতা লাগবে।
শিক্ষাগত যোগ্যতা সত্যায়িত করতে হবে।
মেডিক্যাল সার্টিফিকেট জমা দিতে হবে।
লোন ফেরতে হলফ নামা এবং বিমানের ফটো কপি লাগবে।
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক কত টাকা লোন দেয় :
প্রবাসীদের সহায়তায় যেসব ঋণ রয়েছে এসব স্কিমের আওতায় কোন রকম জামানত ছাড়াই একজন প্রবাসে গমনেচ্ছু ব্যক্তি অন্তত দুই বছর মেয়াদে তিন থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ নিতে পারেন। বিদেশে গিয়ে কাজ করে এই ঋণের টাকা শোধ করা যায়।
আরো পড়ুন :কৃষি ব্যাংক ডিপিএস চার্ট 2024
এই লোনের সুবিধা:
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের লোন এর সুবিধা নিন্মরুপ-
বিদেশে গিয়ে এই লোন পরিশোধ করা যায়।
সুধের পরিমান কম তথা ৪ থেকে শুরু করে ৯% পর্যন্ত।
প্রবাসে থাকাকালীন কোন প্রবাসী সমস্যায় পড়লে এই ব্যাংক লোন প্রদান করে সাহায্য করে।
দেশে ফিরে আবার যেতে চাইলে এই ব্যাংক থেক লোন নিয়ে যেতে পারে।
দেশে ফিরে কোন ব্যবসা বাণিজ্য করতে চাইলে এই লোন সুবিধা পাওয়া যায়।
বিনা জামানতে ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লোনের সুবিধা রয়েছে।
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন অনলাইন আবেদন :
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে হলে আপনাকে অনলাইনে থেকে একটি আবেদন ফরম ডাউনলোড করতে হবে এবং প্রিন্ট করে সুন্দর এবং নির্ভুল ভাবে পূর্ণ করতে হবে। আশা করি বুঝতে পেরেছেন।
নিচের ভিডিও টি দেখলে আরও ভালোভাবে বুঝতে পারবেন
শেষ কথা–
বাংলাদেশী নাগরিকদের সহজ শর্তে লোন দিয়ে থাকে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক। তাই যে কোন নাগরিক শর্ত ও প্রয়োজনী ডকুমেন্টস জোগাড় করে এই প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন এর আবেদন করতে পারবেন।আজ আমরা প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন এরসম্পূর্ণ সিস্টেম নিয়ে আলোচনা করলাম। আশা করি আজকের আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমেপ্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন এর সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে সঠিক ধারণা পেয়েছেন।তার পরেও যদি প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন এরসম্পর্কে কোন বিষয় বুঝতে অসুবিধা হয়ে থাকে তাহলে আমাদেরকে কমেন্টের মাধ্যমে জানিয়ে দিতে পারেন। আপনার প্রশ্নটির উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করা হবে এবং আমাদের পোস্টটি যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই শেয়ার করবেন।আশা করি, আপনারা বুঝতে পেরেছেন। লেখাটি সম্পূর্ণ পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। বাংলায় ইনফো এর সাথেই থাকুন।
FAQ:
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন কত দিনে পাওয়া যায়?
মাত্র ০৩ দিনে অভিবাসন ঋণ মঞ্জুর করে থাকে এছাড়া বিদেশ ফেরত উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কর্মীকে পুনর্বাসন ঋণ প্রদানের মাধ্যমে কর্মসংস্থানে সহায়তা করেছে।
এক লাখ টাকার সুদ কত?
১লক্ষ টাকা ব্যাংক লোনের জন্য ১০ থেকে ১৪% হারে সুদ দিতে হতে পারে তা নির্ভর করছে ব্যাংকের উপর।
পোস্ট অফিসে সুদের হার কত?
পোস্ট অফিস এফডি স্কিমে আপনি 1 বছরে 6.9 শতাংশ সুদ, 2 বছরে 7.0 শতাংশ সুদ, 3 বছরে 7.0 শতাংশ সুদ ও 5 বছরে 7.5 শতাংশ সুদ পাওয়া যাবে।
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে কত টাকা লোন দেয়?
বিনা জামানতে ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লোনের সুবিধা রয়েছে।