আপনি কি জানেন? কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সুবিধা ও অসুবিধা গুলো কি? জাপানি সহ পৃথিবী উন্নত দেশগুলোতে এখন কৃএিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন সংবাদ মাধ্যমগুলো বেশ জনপ্রিয় হয়ে গিয়েছে। বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো অর্থনৈতিক বিষয়গুলি দেখবাল করার জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পর্ণ মেশিন গুলোর উপর দায়িত্ব দিয়ে হাফ ছেড়ে বেঁচেছে। বিজ্ঞানীরা অনুমান করছে ২০৪৯ সালের মধ্যে রোবটের মাধ্যমে বেস্ট সেলার বই লেখা সম্ভব। যদিও জাপানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মেশিন দ্বারা রচিত ছোট ছোট উপন্যাস গুলো সাহিত্য পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হয়েছে।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালেয়র একদল বিজ্ঞানী তাদের মতামত ব্যক্ত করেছেন আগামী ১২০ বছরের মধ্য মানুষের প্রায় সব ধরনের কাজগুলো রোবট ধারা সম্পন্ন হতে পারে। মেশিন যখন মানুষের মত বুদ্ধিমত্তা দেখায় সেটি তখন বুদ্ধিমত্তা হিসেবে বিবেচিত হয়। যেমন: সর্বস্তর অবস্থানের পরিকল্পনা ঘটানো বা কোন বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার মত সামর্থ্য সম্পন্ন মেশিন হচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন মেশিন। উচ্চতর ক্ষমতা সম্পন্ন কম্পিউটার বা রোবট ও অন্যান্য যন্ত্র এর অন্তর্ভুক্ত।
সুইজারল্যান্ড ভিত্তি একটা নীতি গবেষণা কেন্দ্রে (world economic forum) জানিয়েছেন আগামী চার বছরের মধ্যে শুধু মাত্র রোবটের কারণে সারা বিশ্ব জুড়ে প্রায় সাড়ে সাত কোটি লোক চাকরি হারাবে। কথাটি শুনে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নাই সংস্থাটি এটিও বলেছেন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনের কারণে প্রায় ১৩ কোটি মানুষের কর্মসংস্থান হবে। যেমন : Data analysed, Software developer, Social media speciaist। এই ধরনের অনেক অনেক কাজের সুযোগ তৈরি হবে। এবার আসুন কৃএিম বুদ্ধিমত্তার সুবিধা ও অসুবিধা জানার আগে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কিভাবে কাজ করে তা আগে জেনে নিন।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কিভাবে কাজ করে?
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা Ai (Artificial intelligen) এখনও ভবিষ্যৎ কোন ধারনা নেই। Ai (Artificial intelligen) ক্ষমতা সম্পন্ন মেশিন গুলো এখন এমন এমন কাজ করে যা আগে মানুষের চিন্তা-ভাবনার ও বাইরে ছিল। মূলত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কম্পিউটারকে নিজে থেকে শিখতে বা চিন্তা করতে দেয়। একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য পূরণের জন্য প্রথমে Ai (Artificial intelligen) প্রোগ্রাম ডিজাইন করা হয়। কিভাবে সে লক্ষটির সর্বোচ্চভাবে পূরণ করতে হয় প্রাপ্ত ডেটা থেকে সেগুলোর উপর নিজেই নিজে প্রশিক্ষিত হওয়া শুরু করে। শিখতে শিখতে এটি যখন একটি নির্দিষ্ট স্তরে পৌঁছায় মানুষের হস্তক্ষেপ ছাড়াই স্বাধীনভাবে এটি গ্রহণ করতে পারে।
তারপরে সমস্ত ডাটা বিশ্লেষণ করার পরে Ai (Artificial intelligen) যা খুজে পাই তার ভিত্তি করে ভবিষ্যৎ বাণী করে। মজার বিষয় হচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যা শিখে সেগুলোর ব্যবহার করে তার কার্যপদ্ধতি উন্নত করতে গেলে নিজে নিজে ডেভেলপ হতে থাকে। অর্থাৎ আরও স্মার্ট থেকে অধিকার স্মার্ট হতে থাকে। যদিও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে মানুষের মতো ব্যাপক আলোচনা বা সমালোচনা চলছে কিন্তু ভবিষ্যতে পৃথিবীর সম্পর্কে জানতে তথ্যপ্রযুক্তির এই Revolution সম্পর্কে আপনার জ্ঞান থাকতেই হবে।
তাহলে এখন জেনে নেওয়া যাক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সুবিধা ও অসুবিধা গুলোর মধ্যে সুবিধা গুলো কি?
১. কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কখনো ভুল করে না?
মানুষ ভুল করতে পারে কিন্তু Ai (Artificial intelligen) প্রোগ্রাম যদি সঠিকভাবে করা হয় তাহলে কখনোই তা ভুল হওয়ার নয়। যেহেতু Ai (Artificial intelligen) সিদ্ধান্ত গুলির ডিজাইন করা অ্যালগোরিদম থেকে আসে তাই এর মধ্য কখনো ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। শেষ পর্যন্ত সঠিক তথ্য এবং সঠিক ফলাফলের কারণে আপনাদের সময় এবং অর্থ দুটি সঞ্চয় হওয়ার কারণে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কোম্পানির জন্য একটি উইন উইন পরিস্থিতি নিয়ে আসে।
২. দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুবিধা?
সচরাচর মানুষ সাধারণভাবে যে কোন সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগে অনেক কিছু চিন্তা-ভাবনা করা পরেও কেন যেন কনফিডেন্স পায় না। Ai (Artificial intelligen) সিস্টেম বিভিন্ন মেশিন লার্নিং এর মাধ্যমে মানুষের চাইতে অনেক দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে। যার ফলে একদিকে আপনার যেমন সময় বাঁচবে অন্যদিকে কাজগুলো দ্রুত সঞ্চালিত হবে। মজার বিষয় হচ্ছে এ Ai (Artificial intelligen) যখন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে টিক পরবর্তী সময় সিদ্ধান্ত করার জন্য সে নিজে থেকে ডেভেলপ্ট হয়ে যায়।
৩. একটানা ৭দিনে ২৪ ঘন্টা কাজ করা?
মানুষ কখনো একটানা ৭ দিনে ২৪ ঘন্টা কাজ করতে পারবে না। মানুষের শরীর ও মনের জন্য বিশ্রামের প্রয়োজন হয়। কিন্তু Ai (Artificial intelligen) যেহেতু একটা মেশিন তাই সাত দিনে ২৪ ঘন্টা কাজ করতে পারে। যার ফলে আপনার কোম্পানির প্রোডাক্ট ডিভিডি বৃদ্ধি পায়।
৪. ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করতে পারে?
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এর বিশাল বড় একটি সুবিধা হচ্ছে এটি এমন কিছু ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করতে পারে যা মানুষের পক্ষে করা অত্যন্ত বিপদজনক। যেমন : Ai (Artificial intelligen) সিস্টেম কইলার গহীনে গিয়ে কাজ করতে পারে, বোমা নিষ্ক্রিয় করতে পারে, এমনকি অগ্নেয়গিরিতে প্রবেশ করতে পারে।
৫. সংক্রিয় কাজে পুনরাবৃত্তি?
প্রত্যহিক জীবনে আমাদের এমনও অনেক কাজ থাকে যে কাজগুলি বারবার রিপিট করতে হয়। সাধারণ একজন মানুষকে দিয়ে রিপিটের কাজগুলো সর্বোচ্চ উপায়ে করানো সম্ভব হয় না। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এর মাধ্যমে পুনরায় বৃত্তি কাজগুলি নির্ভুলভাবে করা যায় এবং সর্বোচ্চ উপায়ে প্রোডাক্টিভিটি পাওয়া যায। এর ফলে একদিকে যেমন সময় বাঁচে অন্যদিকে আপনি অন্যান্য কাজগুলিতে প্রকাশ করার জন্য উন্মুক্ত থাকেন।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সুবিধা ও অসুবিধা মধ্য যেমন সুবিধায় হয়েছে তেমন অসুবিধা ও রয়েছে। আমরা সকলেই জানি ভালো এবং মন্দ দুটো নিয়ে আমাদের পৃথিবী গড়ে উঠেছে। তাই প্রত্যেক জিনিসের ভালো ও মন্দ দিক থাকবেই। তেমনি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সুবিধা ও অসুবিধা নিয়ে এটি তৈরি হয়েছে। আসলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এত সুবিধা আছে যে সেগুলোকে বলে শেষ করা যাবে না। তবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সুবিধা ও অসুবিধা ও রয়েছে এরপর আমরা জানবো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অসুবিধা সম্পর্কে।
আরো পড়ুন : Ai (Artificial intelligent) দিয়ে টাকা ইনকাম করার উপায় ২০২৪ এবং এর ৫ টি টুলস।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সুবিধা ও অসুবিধার মধ্য এখন আমরা অসুবিধাগুলো কি কি তা জানবো।
১. Ai (Artificial intelligen) সিস্টেম অত্যন্ত ব্যয়বহুল?
Ai (Artificial intelligen) সিস্টেম সব সময় Latas Alardwar, ও Latas Software সহ নিয়মিত আপডেট রাখার জন্য এবং কর্মীদের প্রশিক্ষণের জন্য কোম্পানিতে সব সময় মোটা অংকের পয়সা গুনতে হয়।
২. কর্মসংস্থান কমিয়ে দেয়?
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে পুনরায় বৃত্তিমূলক অনেক কাজে প্রতিস্থাপন করা গেলেও এটি কোম্পানির জন্য উপকারী তবে নিঃসন্দেহে কর্মসংস্থানকে প্রভাবিত করে। শুধুমাত্র তথ্য ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে দক্ষতার অভাবের সাধারণ মানুষগুলো তাদের গতানুগতি চাকরিগুলো হারাবে। এবং অধিকাংশ সাধারণ মানুষ বেকারত্বের দিকে ধাবিত হবে। যদিও উন্নয়নের উন্নতম চিত্র হিসেবে Ai (Artificial intelligen) সিস্টেমকে দেখানো হবে। কিন্তু সাধারণ শ্রমিকরা অনেক কাজের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হতে থাকবে।
৩. Ai (Artificial intelligen) সিস্টেমে সৃজনশীলতার অভাব?
হাই সিস্টেমের ব্যবহার করার অন্যতম একটি ঘাটতি হচ্ছে এটি নিজে থেকে কখনো কোন সৃজনশীল চিন্তাভাবনা করতে পারে না। বিশেষ করে যখন আপনার ব্যবসার জন্য কোন পণ্যে প্রচারণা করছেন তখন মার্কেটিং কৌশলের ক্ষেত্রে সে সৃজনশীল কোন চিন্তাভাবনা সে করতে পারছে না। যদিও ইমপুট করা ডেটা থেকে নিজেই নিজের শিখতে থাকে তারপরও এখনও পর্যন্ত Ai (Artificial intelligen) সিস্টেমটি নিজে থেকে আউট অফ দা বস চিন্তা করতে পারেনা বা নিজে থেকে কিছু ডিজাইন করতে পারে না ।
৪. আবেগ অনুভূতি অনুপস্থিতি?
যদিও Ai (Artificial intelligen) সিস্টেম দ্রুত এবং ক্রমাগত উন্নত কাজ করতে পারে। কিন্তু তারা কখনোই কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় আবেগকে ফ্যাক্টর করতে পারেনা। এই সিস্টেম সব সময় যুক্তিবাদী এবং প্র্যাকটিক্যালি। তাই তারা মানুষের সাথে বন্ধন গরতে পারে না বা সত্যিকারের মানবিক সংযোগ তৈরি করতে পারেনা।
৫. এটি মানুষকে অলসতার দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়?
সংক্রিয় কাজ করা এবং ব্যাপক মাত্রায় ডিজিটাল এসিস্ট্যান্ট এর ব্যবহার করা মেশিনের প্রতি মানুষের নির্ভরতা বাড়ে। ধীরে ধীরে এটি মানুষকে ব্যাপক হারে অলসতার দিকে নিয়ে যায়। Ai (Artificial intelligen) সিস্টেম এর ওপর নির্ভর করার ফলে আমরা কোন কিছু মুখস্ত করতে, নতুন কলাকৌশল ও আবিষ্কার করতে এমনকি নিজেদের সমস্যাগুলো সমাধান করতে মস্তিষ্ককে ভালোভাবে ব্যাবহার করে না। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের উপর এটি ব্যাপক হারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তাহলে বুঝতেই পারছেন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সুবিধা ও অসুবিধা নিয়ে এটি তৈরি হয়েছে।
উপসংহার :
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সুবিধা ও অসুবিধা গুলো ততক্ষণ পর্যন্ত মানুষের উপকারে আসবে যতক্ষণ না পর্যন্ত এটি মানুষের পক্ষে কাজ করবে। আমরা আশা রাখি যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সুবিধা ও অসুবিধা নিয়ে জ্ঞান-বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তিতে পৃথিবী আরো উন্নত হবে। বিজ্ঞানীরা নতুন প্রযুক্তিকে কিভাবে নিয়ন্ত্রণ রাখতে হয় সেগুলো আবিষ্কার করে মানুষের জীবনকে সুন্দর ও স্বাচ্ছন্দ্যময় করবে। এভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সুবিধা ও অসুবিধা গুলো নিয়ে আমাদের জীবনধারার মান উন্নয়ন করবে। তাহলে এতক্ষণ বুঝতে পেরেছেন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সুবিধা ও অসুবিধা গুলো কি।
আরো জানতে হলে নিচের ভিডিওটি দেখতে পারেন –
FAQ:
১. কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার আবিষ্কারক কে?
জন ম্যাকার্থি (ইংরেজি John McCarthy)কৃত্রিম বুদ্ধিমতা ও প্রোগ্রামিং ভাষার লিম্পের জনক। তিনি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নামক পরিভাষার প্রচলন করেন। এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সুবিধা ও অসুবিধা নিয়ে এটিকে আবিষ্কার করেন।
২. কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সহজ কথায় কি বলে ?
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা হলো মানুষের মতো চিন্তা করতে পারে এমন একটি মেশিন যা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নামে পরিচিত। এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সুবিধা ও অসুবিধা নিয়ে গঠিত একটি Ai (Artificial intelligent) সিস্টেম মেশিন।
৩. সুপার Ai ( Artificial Intelligen) কি?
উচ্চ কার্যকরী সিস্টেম যা মানুষের বুদ্ধিমত্তাকে প্রতিলিপি এবং অতিক্রম করে শুধুমাত্র একটি উদ্দেশ্য। ASI সুপার Ai (artificial intelligen) বা সুপার ইন্টেলিজেন্ট নামেও পরিচিত।
৪.AI ( Artificial Intelligen) এর ব্যবহার কি?
AI ( Artificial Intelligent) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সুবিধা ও অসুবিধা প্রযুক্তিগত সিস্টেমগুলিকে তাদের পরিবেশ উপলব্ধি করতে বা মোকাবেলা করতে এবং একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনের জন্য কাজ করতে সক্ষম হয়। এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সুবিধা এবং অসুবিধা নিয়েই এটি গঠিত।