বাংলাদেশে ই -পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে 2024

বর্তমানে বাংলাদেশ সমস্ত পাসপোর্ট অফিসগুলোতে ই পাসপোর্ট সেবা চালু হয়ে গেছে। এখন আপনি বাংলাদেশের যে কোন আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস থেকে একটি ই পাসপোর্ট পাওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন। তাই আপনার যদি পূর্বের কোন পাসপোর্ট না থাকে সম্পূর্ণ নতুন রূপে এখন একটি পাসপোর্ট করতে চান ই-পাসপোর্ট নিজস্ব ওয়েবসাইট থেকে প্রথমে আপনাকে ই-পাসপোর্ট করার জন্য আবেদন করতে হবে। তারপর পরবর্তী কাজ হচ্ছে ব্যাংকে 

পাসপোর্ট এর ভিসা বাবদ টাকা জমা দেওয়া। এখন বাংলাদেশের যেকোনো ব্যাংকে বা যেকোন ব্রাঞ্চে আপনি পাসপোর্ট এর ফি জমা দিতে পারবেন। এরপর পাসপোর্ট এর প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র সহ আপনাকে সশরীরে গিয়ে পাসপোর্ট অফিসে জমা দিতে হবে। আজকে পোস্টে বাংলাদেশে ই -পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে, কত টাকা লাগে, পাসপোর্ট সংশোধনবা রিনিউ আবেদন ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। তাই অবশ্য সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ুন। 

বাংলাদেশে ই -পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে

বাংলাদেশে ই -পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে

বর্তমানে ই- পাসপোর্ট করতে কি কি কাগজপত্র জমা দিতে হচ্ছে – 

  • ১. আবেদনপত্র সারাংশের প্রিন্ট কপি (অ্যাপয়েন্টমেন্ট সহ )
  • ২. সনাক্তকরণ নতি প্রিন্ট কপি (জাতীয় পরিচয় পত্র /জন্ম নিবন্ধন নং)
  • ৩. পেমেন্ট স্লিপ  
  • ৪. পূর্ববর্তী পাসপোর্ট এবং ডাটা পেজের প্রিন্ট কপি (যদি থাকে) 
  • ৫. সরকারি চাকরিজীবীর ক্ষেত্রে GO/NOC (যদি থাকে) 
  • ৬. তথ্য সংশোধনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র (যদি থাকে) 
  • ৭.  আবেদনপত্রের প্রিন্ট কপি 
  • ৮. পিতা-মাতা যাতে পরিচয়পত্র (শিশুদের ক্ষেত্রে আবশ্যক)
  • ৯. ০৬ বছর বয়সের নিম্নের আবেদনের ক্ষেত্রে (3R Size) সাইজের ছবি জমা করতে হবে 
ই-পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে? 

ই-পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে? 

ই- পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে তার আগে বেটে নিতে হবে আপনি কত পাতার পাসপোর্ট নিবেন, কত বছর মেয়াদের জন্য নিবেন এবং কত দিনে পাসপোর্ট ডেলিভারি নিবেন। এই তিনটি বিষয়ের উপর নির্ভর করে সাধারণত পাসপোর্ট এর ফ্রি নির্ধারিত হয়ে থাকে।  Bangladesh e‑Passport Online Portal এই গেলে দেখতে পাবেন পাসপোর্ট সংক্রান্ত ফি কি কি হতে পারে এবং বাংলাদেশে ই -পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে । 

৪৮ পৃষ্ঠা এবং ৫ বছর মেয়াদ সহ পাসপোর্ট 

  • নিয়মিত বিতরণ ৪,০২৫ টাকা 
  • জরুরী বিতরণ ৬,৩২৫ টাকা 
  • সুপার এক্সপ্রেস বা অতি জরুরী বিতরণ ৮,৬২৫ টাকা 

অতিব জরুরী পাসপোর্ট সাধারণত ফিঙ্গার দেওয়া ২ কার্য দিবসের মধ্যে আপনি পাসপোর্ট হাতে পেয়ে যাবেন। 

৪৮ পৃষ্ঠা এবং ১০ বছর মেয়াদ সহ পাসপোর্ট 

  • নিয়মিত বিতরণ ৫,৭৫০ টাকা 
  • জরুরী বিতরণ ৮,০৫০ টাকা 
  • সুপার এক্সপ্রেস বা অতি জরুরী বিতরণ ১০,৩৫০ টাকা 

যাদের বয়স ১৮ বছরের নিচে এবং ৬৫ বছরের মধ্যে তারা কিন্তু ৫ বছর মেয়াদের বেশি সময়ের জন্য ই -পাসপোর্ট আবেদন করতে পারবেন না। 

৬৪ পৃষ্ঠা এবং ৫ বছর মেয়াদসহ পাসপোর্ট 

  • নিয়মিত বিতরণ ৬,৩২৫ টাকা 
  • জরুরী বিতরণ ৮,৬২৫ টাকা 
  • সুপার এক্সপ্রেস বা অতি জরুরী বিতরণ ১২,০৭৫ টাকা 

৬৪ পৃষ্ঠার পাসপোর্ট সাধারণত সবার জন্য না। যারা বেশি বেশি ভ্রমণ করেন যেমন খেলোয়ার, ডাক্তার, প্রবাসী এটি সাধারনত তাদের জন্য। 

৬৪ পৃষ্ঠা এবং ১০ বছর মেয়াদ সহ পাসপোর্ট 

  • নিয়মিত বিতরণ ৮,০৫০ টাকা 
  • জরুরী বিতরণ ১০,৩৫০ টাকা 
  • সুপার এক্সপ্রেস বা অতি জরুরী বিতরণ ১৩,৮০০ টাকা 

এখন নতুন একটি পাসপোর্ট এর জন্য এখন যে পরিমাণ ফি দেখতে পাচ্ছেন এটি সময়ের সাথে সাথে কম বা বেশি হতে পারে। 

পাসপোর্ট সংশোধন বা রিনিউ আবেদন 

সাধারণত পাসপোর্ট এর মেয়াদ শেষ হলে আমরা পাসপোর্ট রিনিউ করে থাকি। অনেকের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেও পাসপোর্ট রিনিউ করে থাকি। 

পাসপোর্ট রিনিউ করতে যা যা প্রয়োজন 

  • পাসপোর্টের ফটোকপি 
  • ব্যক্তির নিজের জাতীয় পরিচয় পত্র বা এনআইডি 
  • ব্যক্তির নিজে জন্ম নিবন্ধন (যাদের বয়স ১৯ বছরের নিচে) তাদের জন্ম নিবন্ধন প্রয়োজন। 

পাসপোর্ট এর ফটোকপি এবং এনআইডির ফটোকপি নিয়ে আপনি অনলাইনে আবেদন করবেন। 

পাসপোর্ট সংশোধনের নিয়ম 

কমবেশি আমাদের পাসপোর্টের ছোট বড় কিছু ভুল থাকে অথবা কোন ভুল আছে। ছোট ভুলের মধ্যে কারো নামে এক শব্দ অথবা ঠিকানায় ভুল হয়ে থাকে। সেগুলো সাধারণত নোটারি পাবলিক করে নিলেই হয়ে যায়। আর বড় ভুলগুলোর মধ্যে অনেকে পাসপোর্ট এর সাথে এনআইডি সাথে নামের অক্ষর অথবা জন্ম তারিখে ব্যবধান তারা 

  • সার্টিফিকেট (যদি থাকে) উচ্চ মাধ্যমিক অথবা মাধ্যমিকের সার্টিফিকেট, 
  • নাগরিকত্বের সনদ 
  • ব্যক্তির নিজে জন্ম নিবন্ধন 
  • পাসপোর্ট 
  • পাসপোর্ট সাইজের ছবি 
  • ব্যক্তির নিজের জাতীয় পরিচয়পত্র বা এনআইডি 

এই সকল কিছুর ফটোকপি এবং মূল কপি নিয়ে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে নোটারি করে নিবেন। নেটারি হয়ে গেলে অনলাইনে পাসপোর্ট এর আবেদন করবেন। আবেদন করা অবশ্যই আপনাকে সতর্ক থাকতে হবে। কেননা যদি ভুল সংশোধন করতে গিয়ে আবারো ভুল করেন তাহলে সেটা হয়তো আপনার জন্য ভালো হবে না। অনলাইনে  ই-পাসপোর্ট হয়ে গেলে পাসপোর্ট অফিসে সকল কাগজপত্র নিয়ে যেসব কাগজপত্র নিবেন তা হলো-

  • পাসপোর্ট 
  • ব্যক্তির নিজের জাতীয় পরিচয় পত্র বা এনআইডি 
  • সার্টিফিকেট (যদি থাকে) এবং নোটারি

এই সকল কাগজপত্রের মূলকপি এবং ফটোকপি নিয়ে যাবেন। পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে সাবমিট করবেন তারা এই সকল কাগজপত্র দেখবেন এবং যাচাই করবেন যদি কোন ভুল না থাকে তাহলে তারা আপনার কাগজপত্রগুলো রিসিভ করবে। রিসিভ করার পরে আপনার ফিঙ্গার নিবে, স্বাক্ষর নিবে সবশেষে আপনাকে একটা ডেলিভারি স্লিপ দিবে। সাধারণত সংশোধনের জন্য বড় ভুলগুলো কিছুদিনের মধ্যে হয়তো আপনার কাছে পুলিশ ভেরিফিকেশন আসবে। 

পুলিশ ভেরিফিকেশনে আপনি আপনার কাগজপত্র গুলো অফিসার কে দেখাবেন। যদি আপনার কাগজপত্রে কোন ভুল না পাই তাহলে আপনাকে পজিটিভ রিপোর্ট দিবে। আর যদি আপনার ছোট ভুলগুলো হয় তাহলে নোটারি পাবলিক এরপরে আর কোন পুলিশ ভেরিফিকেশন নাও আসতে পারে। পুলিশ ভেরিফিকেশন শেষ হওয়ার পরে নির্দিষ্ট আমাদের মধ্যে আপনার পাসপোর্ট এর সংশোধনের কপি হাতে চলে আসবে। এভাবে পাসপোর্ট এর ভুলগুলো সংশোধন করার সহজ হয়ে যায়। 

ই-পাসপোর্ট ফি প্রদান আবেদন প্রিন্ট 

আপনারা আবেদন করা হলে প্রিন্ট করার জন্য আপনাকে ২টি পৃষ্টা আপনার সামনে আসবে। সেগুলো হলো:

  • অ্যাপ্লিকেশন সামারি 
  • অনলাইন রেজিস্ট্রেশন ফর্ম 

এ কাগজগুলো প্রিন্ট করে পাসপোর্ট অফিসে জমা দিতে হবে। এর সাথে আপনার লাগবে টাকা জমা দেওয়া স্লিপ, এনআইডি ফটোকপি, ( আগের পাসপোর্ট থাকলে তার ফটোকপি) 

শেষ মন্তব্য

আজকের পোস্টে আপনাদের বাংলাদেশে ই -পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে এবং ই-পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে? ইত্যাদি নিয়ে সম্পূর্ণ আলোচনা করেছি। এছাড়াও ই পাসপোর্ট চেক অনলাইন  সম্পর্কে জানতে চাইলে এই পোস্টটি ভিজিট করতে পারেন। ই পাসপোর্ট নিয়ে এমন আরও নতুন নতুন তত্ত্ব পেতে বাংলা ইনফোর সাথে যুক্ত হন। ধন্যবাদ সবাইকে এতক্ষন আমাদের সাথে থাকার জন্য। 

বাংলাদেশে ই -পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে 2024 এবং ই-পাসপোর্ট সংক্রান্ত আরো কিছু জানতে চাইলে নিচের উল্লেখিত ভিডিওটি দেখতে পারেন। 

বাংলাদেশে ই -পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে 2024 এবং ই-পাসপোর্ট আবেদন নিয়ে কিছু জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন

FAQ’s

১. বাংলাদেশে ই -পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে

পাসপোর্ট আবেদনের অনলাইন কপি 
আবেদন সামারি 
জাতীয় পরিচয়পত্র /জন্ম নিবন্ধন 
পাসপোর্ট পরিশোধের চালান রশিদ
নাগরিক সনদ  
পেশা প্রমানের ডকুমেন্ট 

২. ১০ বছর মেয়াদি ই পাসপোর্ট 2023 কত টাকা?

 ৪৮ পৃষ্ঠা এবং ১০ বছর মেয়াদ সহ পাসপোর্ট
নিয়মিত বিতরণ ৫,৭৫০ টাকা 
জরুরী বিতরণ ৮,০৫০ টাকা 
সুপার এক্সপ্রেস বা অতি জরুরী বিতরণ ১০,৩৫০ টাকা 
৬৪ পৃষ্ঠা এবং ১০ বছর মেয়াদ সহ পাসপোর্ট 
নিয়মিত বিতরণ ৮,০৫০ টাকা 
জরুরী বিতরণ ১০,৩৫০ টাকা 
সুপার এক্সপ্রেস বা অতি জরুরী বিতরণ ১৩,৮০০ টাকা 

৩. ১০ বছর মেয়াদি ই পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে?

জাতীয় পরিচয় পত্র
অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ (অপ্রাপ্তবয়স্ক হলে)
পাসপোর্ট Application Summery.
ই পাসপোর্ট আবেদন কপি
নাগরিক সনদ / চেয়ারম্যান সার্টিফিকেট
ইউটিলিটি বিলের কপি (বিদ্যুৎ / গ্যাস)
পেশাজীবী প্রমাণপত্র

Leave a Comment