বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক বাংলাদেশের একটি বিশেষায়িত ব্যাংক। এটি ১০০% সরকারি মালিকানাধীন বিশেষায়িত ব্যাংক। এটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৭৩ সালে। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ১০৩৮টি অনলাইন শাখা রয়েছে এবং এর সদর দপ্তর মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকা ঢাকা, বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ একটি কৃষি প্রধান দেশ। এদেশের উন্নয়নে কৃষির গুরুত্ব অপরিসীম এবং শতকরা ৮০ ভাগ লোক কৃষি কাজে নিয়োজিত। কৃষকদের সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা অর্থাৎ অর্থনৈতিক ভাবে সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে, কষ্ট কমিয়ে আনার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
কৃষকরা চাইলেই কম সময়ে অল্প মুনাফায় কৃষি ব্যাংক থেকে লোন নিতে পারে। আপনি বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক থেকে যে কোনো সুযোগ-সুবিধা নিতে চাইলে প্রথমে আপনার কৃষি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকা লাগবে।এবং
কৃষি ব্যাংক ডিপিএস রেট, তালিকা ও সুবিধাগুলোর জন্য সঠিক তথ্য জানতে হবে।চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক।
কৃষি ব্যাংক ডিপিএস রেট ২০২৪:
আপনি নির্দিষ্ট মেয়াদ পূর্ণ করলে 10% চক্রবৃদ্ধি হারে মুনাফা পাবেন। কিন্তু নির্দিষ্ট মেয়াদের আগে যেকোন সময় ডিপিএস বন্ধ করে টাকা উঠাতে চাইলে নিচের চার্ট অনুযায়ী ডিপিএস রেট দেওয়া হবে।
হিসাব বন্ধ করার সময় হিসাবের মেয়াদ | প্রাপ্য মুনাফার হার |
৬ মাস পর্যন্ত | কেবলমাত্র জমাকৃত মূল অর্থ ফেরত পাবেন |
৬ মাসের বেশি কিন্তু ৩ বছর পর্যন্ত | জমাকৃত অর্থের ওপর ৬% সরল মুনাফাসহ অর্থ ফেরত পাবেন |
৩ বছরের বেশি কিন্তু ৫ বছর পর্যন্ত | জমাকৃত অর্থের ওপর ৭.৫০% সরল মুনাফাসহ অর্থ ফেরত পাবেন |
৫ বছরের বেশি কিন্তু ১০ বছর পর্যন্ত | জমাকৃত অর্থের ওপর ৮.৫০% সরল মুনাফাসহ অর্থ ফেরত পাবেন |
১০ বছরের বেশি | জমাকৃত অর্থের ওপর ৯% সরল মুনাফাসহ অর্থ ফেরত পাবেন। |
মনে রাখবেন, মুনাফার চার্টটি যেকোন সময় পরিবর্তনশীল।
কৃষি ব্যাংক ডিপিএস রেট তালিকা 2024:
সর্বপ্রথম আপনাদের কৃষি ব্যাংক ডিপিএস চার্টটি দেখে নেওয়া উচিত। নিচে থেকে তালিকাটি দেখে নিতে পারবেন।
কৃষি ব্যাংক ডিপিএস রেট তালিকা 2024: | |
সময় কাল বছর | মুনাফার হার ১০% |
১০ বছর পর | মাসিক কিস্তি ৬,০৯০/- জমায় সুদের হার ৭% সুদে মোট প্রাপ্য ১০ লক্ষ টাকা |
০৭ বছর পর | মাসিক কিস্তি ৯,৭৭০/- জমায় সুদের হার ৬.৫% সুদে মোট প্রাপ্য ১০ লক্ষ টাকা |
০৫ বছর পর | মাসিক কিস্তি ১৪,৬০০/- জমায় সুদের হার ৬.২৫% সুদে মোট প্রাপ্য ১০ লক্ষ টাকা |
০৩ বছর পর | মাসিক কিস্তি ২৫,৮৩০/- জমায় সুদের হার ৬.০০% সুদে মোট প্রাপ্য ১০ লক্ষ টাকা |
সুদ কিভাবে নির্ধারিত হবে?
প্রদেয় সুদ বার্ষিক ভিত্তিতে হিসাব করা হবে। আপনি যদি ১০ বছরের জন্য এ স্কিমটি চালু করেন তবে আপনি সর্বোচ্চ সুদ হার অর্থাৎ ৭% মুনাফা পাবেন এবং যদি আপনি মাত্র ৩ বছর মেয়াদ স্কিমটি চালু করেন তবে জমা কিস্তির পরিমান বেশি হবে এবং সুদের হার কম হবে। ৩ বছর মেয়াদের ক্ষেত্রে ৬% মুনাফা পাওয়া যাবে।
BKB Millionaire Scheme – Bangladesh Krishi Bank –
বিকেবি মিলিয়নিয়ার স্কীম সেই ব্যক্তিদের জন্য একটি আকর্ষণীয় মাসিক আমানত স্কিম যারা প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ সঞ্চয় করতে চান যাতে আমানতের পরিপক্কতার উপর একক পরিমাণ অর্থ পাওয়া যায়। গ্রাহকের বড় সুবিধা হচ্ছে খুব দ্রুত ও সহজেই এই স্কিমটিতে অন্তর্ভূক্ত হওয়া যায়। মাত্র একটি ফরম পূরণ করেই এ স্কিম চালু করা যায় এবং কৃষি ব্যাংকে একাউন্ট না থাকলেও একটি ডিপিএস একাউন্ট খুলে স্কিমটি চালু হয়।
BKB Millionaire Scheme / বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক মিলিওনিয়ার স্কিম:
আজকের সঞ্চয় আগামী দিনের ভবিষ্যত তাই আজই আপনার মাসিক মোট আয় হতে কিছু অর্থ জমা করে নিন কৃষি ব্যাংক ডিপিএস রেট স্কিমে এবং তা যদি হয় মিলিওনিয়ার বা ১০ লাখপতি স্কিম তাহলে তো কথাই নাই। এ স্কিমটি চালু করতে আপনার বয়স ১৮ বছর হতে হবে এবং আপনাকে বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে।
মিলিওনিয়ার স্কিম খোলার জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট বা কাগজপত্র:
- যথাযথভাবে পূরণ করা অ্যাকাউন্ট খোলার ফর্ম।
- আবেদনকারীর দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের সাম্প্রতিক ছবি বিকেবির যেকোনো শাখায় অ্যাকাউন্ট আছে এমন একজন গ্রাহক/ব্যাংকার কর্তৃক যথাযথভাবে সত্যায়িত।
- আবেদনকারীর বৈধ জাতীয় পরিচয়পত্র/ বাংলাদেশ পাসপোর্ট/ ড্রাইভিং লাইসেন্সের সত্যায়িত কপি।
- আবেদনকারীর ইটিইন(আয়কর) সার্টিফিকেটের সত্যায়িত কপি।
- .নমিনীর এক কপি ছবি।
- নমিনীর বৈধ জাতীয় পরিচয়পত্রের সত্যায়িত কপি।
- অ্যাকাউন্ট খোলার ফর্মে উল্লিখিত শর্তাবলী অনুসারে সমস্ত প্রয়োজনীয় তথ্য।
মিলিওনিয়ার স্কিম বা ডিপিএস করলে কি এর বিপরীতে লোন নেয়া যাবে?
হ্যাঁ যাবে– আপনার মিলিওনিয়ার স্কিমটির মোট জমার ৮০% আপনি লোন নিতে পারবেন এবং লোনের সুদ আপনার ডিপিএস বা স্কিমের সুদ হতে ১% কম হবে। ডিপিএস এর বিপরীতে ব্যক্তিগত ঋণ অবশ্যই জামানত বিহীন ঋণ এবং যা খুব দ্রততম সময়ে প্রসেস হয়। যেকোনো প্রশ্নের জন্য আপনার নিকটস্থ কৃষি ব্যাংক শাখায় যোগাযোগ করতে পারেন।
আপনার কৃষি ব্যাংক ডিপিএস রেট এর মিলিওনিয়ার স্কিমের চাঁদা আপনি খুব সহজেই দেশের যে কোন ব্যাংক হতে অনলাইনে জমা করতে পারবেন। চাইলে BEFTN ফান্ড ট্রান্সফার সিস্টেম ব্যবহার করেও ডিপিএস চাঁদা জমা করা যাবে।
কৃষি ব্যাংকের সুযোগ-সুবিধা কি?
একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের যে সমস্ত সুযোগ সুবিধা রয়েছে, কৃষি ব্যাংক ডিপিএস রেট একাউন্টের একজন অ্যাকাউন্ট হোল্ডার হিসেবে আপনি যে সমস্ত সুবিধা উপভোগ করতে পারবেন, ঠিক একই রকম ভাবে কৃষি ব্যাংকের একজন গ্রাহক হিসেবেও আপনি এই সমস্ত সুযোগ সুবিধা উপভোগ করতে পারবেন।
তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে কোন কোন ব্যাংকের সুযোগ সুবিধা কিছুট৷ কম থাকে কিংবা অনেক ক্ষেত্রে কোন ব্যাংকে সুযোগ-সুবিধা কিছুটা বেশি থাকতে পারে।
কৃষি ব্যাংকের একজন গ্রাহক হিসেবে আপনি কৃষি ব্যাংকের যে সমস্ত সুবিধা উপভোগ করতে পারবেন, সেগুলো নিচে তুলে ধরা হলো:
১.লেনদেন করা।
২.ডিপিএস একাউন্ট তৈরি করা।
৩.নতুন একটি ব্যাংক একাউন্ট তৈরি করা
৪.ব্যাংক একাউন্ট দিয়ে পৃথিবীব্যাপী ব্যাংক একাউন্ট থেকে লোন নেয়া।
৫.ব্যাংক একাউন্টে টাকা ক্যাশ ইন করা।
৬.এটিএম কার্ডের সুবিধা ভোগ করা।
৭.ডেভিড এবং ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা।
৮.সার্বক্ষণিক হেল্পলাইন নাম্বার সাপোর্ট
পুরো বাংলাদেশে বিভিন্ন ব্রাঞ্চ থেকে সেবা গ্রহণ।
৯.পুরো বাংলাদেশের বিভিন্ন উপশাখা ইত্যাদি।
উপরে যে সমস্ত বিষয়ের কথা তুলে ধরা হয়েছে এই সমস্ত সুযোগ-সুবিধা ছাড়াও কৃষি ব্যাংক থেকে আপনি আরো নানামুখী সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারবেন।
তবে কৃষি ব্যাংকের অন্যতম একটি অসুবিধে হিসেবে
যে অসুবিধাটি বিদ্যমান রয়েছে সেটি হলো, ২০২৩সালের সর্বশেষ আপডেট তথ্য অনুযায়ী কৃষি ব্যাংক ডিপিএস রেট এ বর্তমান কোন মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাপ নেই। অর্থাৎ এরকম কোন অ্যাপ নেই যে অ্যাপের মাধ্যমে আপনি ঘরে বসে ব্যাংকিং কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারবেন। অনেকেরই জন্য, সেটা একটি অন্যতম বড় সমস্যা হতে পারে।
তবে অনেকের জন্য এটা স্বাভাবিক একটি বিষয়। এবং সেজন্য আপনি যদি কিছু ব্যাংক থেকে বিভিন্ন রকমের সুযোগ সুবিধা উপভোগ করতে চান এবং একই সাথে সাবলীল ভাবে ব্যাংকিং কার্যক্রম সম্পন্ন করতে চান, তাহলে কৃষি ব্যাংকে একটি একাউন্ট তৈরি করতে পারেন।
নিচের ভিডিও টি দেখলে আরও ভালোভাবে বুঝতে পারবেন সম্পুর্ন বিষয় :
শেষ কথা
আজ আমরা কৃষি ব্যাংক ডিপিএস রেট এর তালিকা সুবিধা এবং সম্পূর্ণ ডিপিএস সিস্টেম নিয়ে আলোচনা করলাম। আশা করি, আপনারা বুঝতে পেরেছেন। লেখাটি সম্পূর্ণ পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। বাংলায় ইনফো ফেজবুক পেইজ এর সাথেই থাকুন।
ব্যাংক ঋণ কত প্রকার?
সাধারণ উপভোক্তা ঋণগুলি হল, ঋণদান কার্ড, বিপণি কার্ড, গাড়ি কেনার পুঁজি, ব্যক্তিগত ঋণ (কিস্তি ঋণ), উপভোক্তার ধারাবাহিক ঋণ, পেডে লোন, খুচরো ব্যবসা ঋণ (খুচরো ব্যবসা কিস্তি ঋণ) এবং বন্ধকী ঋণ।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক কি সরকারি?
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক (বিকেবি) একটি শতভাগ রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বিশেষায়িত ব্যাংক।
বাংলাদেশের বর্তমান ব্যাংক রেট কত
২০২ ৪?
পলিসি রেট বাড়ানোতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক যে সুদের হারে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে ঋণ দিয়ে থাকে, তা ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসের হার ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ৬ শতাংশ হবে। উল্লেখ্য, এই সুদের হারকে ‘রেপো রেট’ বলা হয়।
কোন ব্যাংক সবচেয়ে বেশি সুদের হার দেয়?
2024 সাল পর্যন্ত, কানারা ব্যাংক 444 দিনের জন্য সর্বোচ্চ 7.25% সুদের হার অফার করে।