বাংলায় ইনফো: বাংলা ভাষায় সবচেয়ে জনপ্রিয় বাংলা ব্লগ সাইট

ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে করবো-শিখবো? সফল ফ্রিল্যান্সার কত টাকা আয় করে

গত মাসে আমি বিভিন্ন মার্কেটপ্লেস ও লোকাল ক্লায়েন্টের কাজ করে বেশ ভালো অংকের টাকা ও রেমিটেন্স নিয়ে আসতে পারছি শুধু মাত্র আমার দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে ফ্রীল্যান্সিং এর মাধ্যমে। প্রতি মাসেই আমার কম বেশি অর্থ আসে আমার অ্যাকাউন্টে। তাই আপনি যদি সফল ফ্রিল্যান্সার থেকে জানতে চান ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে করবো! তাহলে এই পোস্টটি আপনি সম্পুর্ণ দেখুন ও জানুন ফ্রীল্যান্সিং করে মাসে লাখ টাকার থেকেও বেশি ইনকাম করা যায়।

আপনার মনে যদি এমন প্রশ্ন এসে থাকে যে ফ্রীল্যান্সিং কিভাবে শিখবেন? কোথায় শিখবেন? এবং কিভাবে করবেন? তাহলে এই পোস্টটি সম্পূর্ণ শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেখলে আপনার মনের কাঙ্ক্ষিত সকল উত্তর পেয়ে যাবেন বলে আমি আশা করি। এখানে আমি আপনার মত করে বুঝানোর চেষ্টা করেছি যে, আপনি কোথায় ফ্রিল্যান্সিংয়ের সঠিক গাইডলাইন পাবেন ও ট্রাস্টেড জায়গা থেকে ফ্রী এবং পেইড কোর্স সম্পর্কেও জানতে পারবেন। চলুন আর কথা না বাড়িয়ে মূল পর্বে চলে যায়~

ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে করবো ও এর মানে কি এবং কেন করবো!

ফ্রীল্যান্সিং করবেন কিন্তু এটার সঠিক ধারণা নিবেন না এটা তো হতে দেওয়া যায় না, আপনি যে ক্ষেত্রে কাজ করবেন নিজের দক্ষতা কাজে লাগাবেন ও কঠোর শ্রম দিবেন সে ক্ষেত্রের সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ ধারণা থাকাটা জরুরি। ফ্রীল্যান্সিং হচ্ছে মুক্ত পেশা, অর্থাৎ আপনি আপনার কাজে কোনো প্রকার নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া হবে না। আপনি আপনার সময়ে যখন খুশি কাজ করতে পারবেন, সেটা হতে পারে সকাল-সন্ধ্যা, রাত-দুপুর। 

ফ্রীল্যান্সিং কি! যদি এই প্রশ্ন আমাকে করেন তাহলে আমি আপনাকে বলবো যে, নিজ দেশে বা বাসায় বসে অন্য দেশের বা অন্য ব্যাক্তির কোনো কাজ বা সার্ভিস দিয়ে থাকেন এবং সেটার মুল্যে আপনি লোকাল কাজের চেয়েও তুলনামূকভাবে অর্থ বেশি পেয়ে থাকেন সেটাই ফ্রীল্যান্সিং। 

বর্তমানে এই ফ্রীল্যান্সিং বা মুক্ত পেশার জগতে নতুন নতুন উদ্যোক্তা, কিশোর কিশোরী সমান তালে আসতে চাচ্ছে। কারণ এখনকার সময়ে একটি নির্দিষ্ট চাকরি বা কাজের উপর সম্পূর্ণ পরিবার চলতে পারে না। এক্সট্রা টাকা ইনকাম করার জন্য এই পথে আসে বিভিন্ন পেশার লোকজন। যেমন, গতকাল একজন জুতা বিক্রেতার সাথে দেখা হয়, সে আধুনিকতার ছুয়াই অ্যান্ড্রয়েড ফোনের মাধ্যমে ফ্রীল্যান্সিং সম্পর্কে টুকটাক জানতে পারে। সে ব্যাক্তি আমাকে জিজ্ঞাসা করে যে ফ্রীল্যান্সিং কিভাবে করবো? 

তাই বলা যাই ফ্রিল্যান্সিংয়ের কদর সকলেই বুঝতে শুরু করছে। যদি এখনো আপনার মনে আসে যে আপনি কেনো ফ্রিল্যান্সিং করবেন! তাহলে এটাও জেনে নেন যে, আপনি আপনার অবসর সময়ে নির্দিষ্ট স্কিলকে কাজে লাগিয়ে নিজের পরিবার, সমাজ ও দেশের স্বার্থে ভূমিকা রাখতে পারেন।

ফ্রিল্যান্সিং শিখতে কি কি যোগ্যতা ও সরঞ্জাম লাগে?

কোনো একটি ক্ষেত্রকে কেন্দ্র করে কাজ করতে হলে ওই বিষয় বস্তর ওপর পূর্ণাঙ্গ দক্ষতা থাকা আবশ্যক। একটি বিষয় সঠিক জ্ঞান না থাকলে কাজ করেও শান্তি পাওয়া যায় না। তাই আপনি যদি ফ্রীল্যান্সিং শিখতে ও করতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই একটি নির্দিষ্ট কাজের ওপর দক্ষতা থাকতে হবে। কারণ যে যে বিষয়ের ওপর আপনি আপনার ক্লায়েন্টকে সার্ভিস বা সেবা দিবেন সেটার সম্পর্কে ধারণা না থাকলে ঠিক মত কাজটি সাবমিট করতে পারবেন না, যার ফলে আপনার ক্লায়েন্টের কাছে আপনার খারাপ ইম্প্রেশন পরবে।

যেমন আমি একজন সিএমএস ওয়েব ডেভেলপার তার সাথে SEO বিশেষজ্ঞ। এখন আমি web development ও SEO সম্পর্কে যেকোনো কাজ করতে পারবো কোনো প্রকার বাধা বিপত্তি ছাড়াই। কারণ আমার এই বিষয় সমূহের প্রায় ৩ থাকে ৪ বছরের পূর্বের অভিজ্ঞতা রয়েছে। যার ফলে আমার ক্লায়েন্টের কাজে কোনো সমস্যা হয় না। যার ফলে আমার ক্লায়েন্ট ও আমি উভয় খুশি থাকি। প্রত্যেক কাজের উপর অভিজ্ঞতা থাকা জরুরি বলে আমি মনে করি।

এখন কথা হচ্ছে আপনি ফ্রীল্যান্সিং শিখবেন কিন্তু ফ্রীল্যান্সিং করার জন্য আপনাকে অবশ্যই কিছু সরঞ্জাম বা জিনিসপ্রত্র থাকতে হবে, যেমন ভালো ভাবে শিখতে এবং প্র্যাকটিস করতে অবশ্যই আপনার ল্যাপটপ অথবা কম্পিউটার ম্যানেজ করতে হবে। কারণ হাতে থাকা মোবাইল ফোন দিয়ে সঠিক ভাবে ক্লায়েন্টের করতে কাজ হিমশিম খাইতে হয়। যেমন আপনি যদি আর মত হার্ড কাজ করেন তাহলে আপনার অবশ্যই একটি ডেক্সটপ অথবা ল্যাপটপ লাগবেই।

তার পাশাপাশি আপনার একটি ভালো ইন্টারনেট কানেকশন লাগবে, যাতে করে আপনার কাজ করার ক্ষেত্রে কোনো প্রকার হেম্পার না পরে। এইসব জিনিসপত্র আপনার ম্যানেজ হয় গেলে আর তেমন কিছু লাগবে না আপার কাজ করতে। তবে হে একটি কথা না বললেই নয়, ফ্রীল্যান্সিং করতে হলে আপনাকে একজন ধৈ্য্যশীল ব্যাক্তি হতে হবে পাশাপাশি আপনাকে রাত জেগে কাজ করার মন-মানসিকতা থাকতে হবে। কারণটি অবশ্যই বুঝতে পারছেন, এখনো না বুঝলে অবশ্যই বিনা মুল্যে কমেন্ট করতে পারেন।

ক্যারিয়ার হিসেবে ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষ্যৎ কি

ক্যারিয়ার হিসেবে ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষ্যৎ অপরিসীম। বাংলাদেশ সহ বিশ্বের সকল দেশ এই সেক্টরটিকে বিশেষ ভাবে গুরুত্ব দিয়েছেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের এই দেশে প্রতি নিয়ত এই প্রকল্পের ওপর ভালো ভালো পদক্ষেপ নিচ্ছে। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, সরকারি ভাবে ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ করার জন্য সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছে। 

একজন দিনমজুর থেকে শুরু করে সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তিগণ ও তাদের সন্তানদের ভবিষৎ নিশ্চিত করার জন্য এই ফ্রীল্যান্সিং কাজের প্রতি উৎসাহিত করছে এবং এর জন্য যা কিছু করার প্রয়োজন তারা করে যাচ্ছেন। কারণ তারা জানেন আজকের শিশু আগামী দিনের ভবষ্যৎ, যার ফলে ফ্রীল্যান্সিং এর ভিরাট সম্ভাবনাময় দিকে গভীর ভাবে গুরত্ব দিচ্ছে। যার ফলে ফ্রীলান্সিং এর প্রয়োজনীয়তা বাড়ছে দিন দিন।

এখন আপনার পালা, আপনার ভবিষৎ আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে। আপনি কোন পথে যাবেন এটা আপনার উপর নির্ভর যেহেতু আপনি এখন সিদ্বান্ত নিতে পারেন। কারণ এখন সমাজের দিকে তাকালে দেখা যায় প্রতি 3টি পরিবারে ১জন করে নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি হচ্ছে।

ফ্রিল্যান্সিং এর ১০টি সুবিধা ও অসুবিধা কি কি?

ফ্রিল্যান্সিং এর সুবিধা এবং অসুবিধা ওজন করা অনেক কঠিন। আপনি ইতিমধ্যেই জানেন যে, কখন আপনার চাকরি ছেড়ে উদ্যোক্তা হওয়ার সময়। কিন্তু আপনি আপনার নিজের ফ্রিল্যান্সিংশুরু করার আগে, আপনার সিদ্ধান্তের সুবিধা এবং অসুবিধা সম্পর্কে আপনার সচেতন হওয়া উচিত। সর্বোপরি, এই ধরণের সিদ্ধান্তের ইতিবাচক বা নেতিবাচক উপায়ে আপনার জীবন ও ভবিষ্যৎ পরিবর্তন করার সম্ভাবনা রয়েছে।

তাই আমি আপনার জন্য শীর্ষ ১০টি কারণ তুলে দরবো যে, ৯ থেকে ৫ জনকর্মচারীর পরিবর্তে একজন ফ্রিল্যান্সার হওয়ার শীর্ষ পাঁচটি ইতিবাচক এবং শীর্ষ পাঁচটি নেতিবাচক দিক রয়েছে।

ফ্রিল্যান্সার হওয়ার ৫টি সুবিধা

১। নমনীয় ঘন্টা – একজন ফ্রিল্যান্সার হওয়ার প্রথম সুবিধা হল আপনি যখন খুশি কাজ করতে পারেন। আপনি নিজের সময় বেছে নিতে পারেন। আপনি যদি দুপুর পর্যন্ত ঘুমাতে চান তবে আপনি তা করতে পারেন। আপনি যদি সপ্তাহান্তে ছুটি নিতে চান যাতে আপনি যে কোনও উপায়ে শহরটি ঘুরে দেখতে পারেন। একজন ফ্রিল্যান্সার হিসাবে, আপনি আসলে আপনার বেছে নেওয়া  সময়গুলিতে কাজ করতে পারেন।

২। চাকরি এবং ক্লায়েন্টদের উপর নিয়ন্ত্রণ – আপনি যখন অন্য কারো জন্য কাজ করেন, আপনি তখন তাকে বাছাই করতে পাবেন না। সেক্ষেত্রে আপনি অপ্রফেশনাল বা অভদ্র ক্লায়েন্টদের সাথে আটকে যেতে পারেন। কিন্তু, আপনি যখন একজন ফ্রিল্যান্সার হন, আপনি কার সাথে কাজ করবেন তা বেছে নিতে পারেন। 

৩। আপনি যেখানে চান সেখানে কাজ করুন – আপনার কাজের পরিবেশের ক্ষেত্রে আপনি ধারাবাহিকতা পছন্দ করুন বা কিছু নাড়াচাড়া করুন, আপনি যেখানে চান সেখানে কাজ করতে বেছে নিতে পারেন, আপনার আশেপাশে থাকা কপিসপে গিয়ে ঘুরে আসতে পারেন। আপনি সবচেয়ে ভাল কাজ করার একটি জায়গা খুঁজুন। যেখানে আপনি আপনার পায়জামা পরা অবস্থায় পার্কে, লাইব্রেরিতে বা আপনার বসার ঘরে কাজ করতে পারবেন।

৪। আপনি আপনার বস – আপনাকে আর আপনার ক্লায়েন্ট এবং নিজেকে ছাড়া অন্য কাউকে উত্তর দিতে হবে না। আপনি আপনার ইচ্ছা মত কাজ করতে স্বাধীন, আপনি যখন খুশি. সমস্ত কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। আপনার দায়িত্ব ও কর্তব্য, আপনার সমস্ত কিছু আপনার নিজের হাতের উপর নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।

৫। আপনি সমস্ত লাভ রাখুন – আপনি ফ্রীল্যান্সিং করতে আপনার ব্যাবহারিত স্কিলড এর মাধ্যমে অর্জিত অর্থ সম্পূর্ণ আপনার। যা চাকরির ক্ষেত্রে ঘটে না। এখানে আপনি আপনার শ্রম ও সময় দিচ্ছেন যার ফলে আপনার বাহ্যিক কোনো টাকা খরচ করতে হচ্ছে না, সে জন্য আপনার উভয় দিক দিয়ে লাভ হলো। 

ফ্রিল্যান্সিং এর ৫টি অসুবিধা

১। স্থির বা নির্ভরযোগ্য কাজের চাপ নয় – দুর্ভাগ্যবশত, একজন ফ্রিল্যান্সার হওয়ার অর্থ হল আপনার আয় এবং আপনার কাজের চাপ অস্থির এবং অসামঞ্জস্যপূর্ণ। বেশিরভাগ সময়ে আপনি কোনও নিয়মিত কাজ, ক্লায়েন্ট বা লাভের উপর নির্ভর করতে পারবেন না। যেখানে আপনি একটি ঐতিহ্যগত চাকরিতে মাস শেষে সঠিক বেতন পাবেন। ফ্রীল্যান্সিং করলে কম বেশি হবেই।

২। কাজ এবং ব্যক্তিগত সময়ের মধ্যে পার্থক্য – আপনার নিজের বস হওয়া এবং আপনার বাড়ি থেকে কাজ করার অর্থ হল আপনার কাজের সময় এবং আপনার ব্যক্তিগত জীবনের মধ্যে পার্থক্য করা কঠিন। এর মানে এটা দাড়ায় যে আপনি দীর্ঘ সময় কাজ করতে পারেন এবং আপনার ব্যক্তিগত স্বার্থের জন্য সময় দিতে পারবেন না।

৩। প্রচুর লেগওয়ার্ক – আপনি যখন আপনার সমস্ত নিজস্ব ক্লায়েন্ট এবং কাজ গুলি করার দায়িত্বে নিয়েছেন। তখন আপনাকে ওই কাজটি সম্পূর্ণ করতে বিভিন্ন ফাইল বা ডকুমেন্ট হস্তান্তর করতে হবে। আর এটি করলে আপনার কাজের সময় বেড়ে যাবে। যার ফলে আপনার ও অন্যান্য ব্যাক্তির কাজের গতি কমে যাবে। তার ফলে আপনাকে বিভিন্ন বিপণন, বিজ্ঞাপন এবং বিক্রয় সহ অনেক টুপি পরতে হবে।

৪। অর্থপ্রদান না করা – বর্তমানে এমন পর্যায় এসে দাঁড়িয়েছে যে আপনি একজন ফ্রিল্যান্সার হওয়ার অর্থ হল আপনাকে অর্থ প্রদান না করার ঝুঁকিতে থাকা। ফ্রিল্যান্স বিশ্বে এটি মোটামুটি সাধারণ হলেও এর থেকে বাঁচার বিভিন্ন উপায়ও রয়েছে। কিন্তু ক্লায়েন্টের সাথে দীর্ঘ দিন সময় না হওয়া পর্যন্ত আপনি বুঝতে পারবেন না যে আপনি ঝুঁকিতে আছেন।

৫। কোন নিয়োগকর্তার সুবিধা নেই – স্বাস্থ্য সুবিধা ব্যয়বহুল। আপনার বর্তমান স্বাস্থ্যের উপর নির্ভর করে, ফ্রিল্যান্স লাইফস্টাইলে স্যুইচ করা আপনার সর্বোত্তম স্বার্থে নাও হতে পারে। এছাড়াও, প্রতিদিন আপনি কাজ পাবেন না, এমন একটি দিনও আসতে পারে যে আপনার কাজের বেতন আপনি পাবেন না।

মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো 

আমি কিছু দিন আগে কোরার মাধ্যমে পরীক্ষা করছিলাম এবং আমি প্রশ্নটি পেলাম, “আমি কি শুধু আমার স্মার্টফোন এবং ইন্টারনেট দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে পারি? কিভাবে?” এবং একই রকম আরো অনেক প্রশ্ন পেলাম। ওখানে এই প্রশ্নের উত্তরগুলি ঠিক সহায়ক বা ভেলুয়াবল ছিল না। বেশিরভাগ লোকেরা তাদের প্রতারণামূলক স্কিমগুলি বিক্রি করার চেষ্টা করে এবং কেউ কেউ দাবি করে যে এটি অসম্ভব। যে ব্যক্তি একটি স্মার্টফোন দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করে যথেষ্ট ভাগ্যবান হয়েছে, আমি মনে করি এটি কীভাবে করা যায় তা লোকেদের জানানোর জন্য যথেষ্ট কারণ রয়েছে।

প্রথমত, আমি এটা পরিষ্কার করতে চাই যে একটি পিসি বা ল্যাপটপ থাকা নিঃসন্দেহে একজন ফ্রিল্যান্সার হিসাবে কাজ করার সর্বোত্তম উপায়। কিন্তু আপনার যদি এখনও এটির জন্য সামর্থ্য না থাকে তাহলে কি হবে?

দুশ্চিন্তা করবেন না। আপনি আপনার দক্ষতা দিয়ে অর্থ উপার্জন করতে পারেন এখনও অনেক উপায় আছে। ফ্রীল্যান্সিং কাজ আপনি আপনার স্মার্টফোন দিয়ে করতে পারেন।

আরও পড়ুন: ছাত্রদের জন্য আয় করার সেরা উপায়

১। সামাজিক মাধ্যম ব্যবস্থাপক বা ম্যানেজমেন্ট

এটি ব্যবহারিকভাবে সবচেয়ে সহজ ফ্রিল্যান্স কাজ যা আপনি আপনার স্মার্টফোন দিয়ে করতে পারেন। সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার হিসাবে আপনার কাজ হল লোকেদের (ব্যক্তি এবং সংস্থা) তাদের সোশ্যাল মিডিয়া পেজ ও পোস্ট গুলো পরিচালনা করা, আরও ভাল কন্টেন্ট তৈরি করতে এবং তাদের গ্রাহকদের সাথে যোগাযোগ করতে সহায়তা করা৷

আপনাকে শুধু সোশ্যাল মিডিয়া বুদ্ধিমান ও দ্রুত ব্যাবহার করা যায় টা জানতে হবে। পাশাপাশি জানতে হবে কিভাবে ফলোয়ার বাড়াতে হয়, রিচ, ভিউ বাড়াতে হয় এবং বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ব্যস্ততা বাড়াতে সাহায্য করতে হয়।

২। লেখক হিসেবে মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করুন

আপনি আপনার মোবাইল ফোন দিয়ে ক্লায়েন্টদের জন্য নিবন্ধ, ব্লগ পোস্ট, ওয়েবসাইটের বিষয়বস্তু, ইবুক ইত্যাদি লিখতে পারেন। আপনার যা দরকার তা হল একজন দুর্দান্ত গল্পকার, দ্রুত টাইপিস্ট এবং লেখা লেখির জন্য বিভিন্ন অ্যাপস ইউজড করা।

সবচেয়ে ভালো দিক হল এই অ্যাপগুলির বেশিরভাগই বিনামূল্যে এবং Google এবং Apple Playstore উভয়েই পাওয়া যায়। ফ্রিল্যান্স লেখক হিসাবে আপনার যাত্রা শুরু করার জন্য এখানে কিছু দুর্দান্ত লেখার অ্যাপ রয়েছে:

  • Google ডক্স
  • WPS অফিস
  • মাইক্রোসফট অফিস ওয়ার্ড

৩। ভার্চুয়াল সহকারী:

ভার্চুয়াল সহকারী হিসাবে, আপনার কাজ হল পেশাদার প্রশাসনিক, প্রযুক্তিগত বা সৃজনশীল (সামাজিক) সহায়তা প্রদান করা। এর মধ্যে কলের উত্তর দেওয়া এবং করা, ইমেল পাঠানো, সোসিয়াল মিডিয়া পেজ ও পোস্ট গুলো পরিচালনা করা ইত্যাদ এই সমস্ত কাজ একটি মোবাইল ফোন দিয়ে করা যায়। সুতরাং, আপনার চান্স আছে এখানে কাজ করার, কারণ উপরের সবগুলোই মোবাইল দিয়ে করা যায়।

৪। গ্রাফিক্স: ডিজাইনার/ইলাস্ট্রেটর

মোবাইলে ডিজাইন করার আশ্চর্যজনক বিষয় হল যে আপনাকে কোরেল ড্র এবং অ্যাডবি ইলাস্ট্রেটরের মতো ডেস্কটপ অ্যাপগুলি কীভাবে ব্যবহার করতে হয় তা জানতে হবে না। আপনি ক্যানভা, একটি ওয়েব এবং মোবাইল ডিজাইন অ্যাপ্লিকেশন দিয়ে সুন্দর ডিজাইন তৈরি করতে পারেন। ব্যক্তিগতভাবে, আমি আমার স্মার্টফোনে ডিজাইন করতে Autodesk Sketchbook Pro এবং Canva ব্যবহার করি।

৫। অনলাইন টিউটর:

আপনি আপনার মোবাইল ফোনে অনলাইনে লোকেদের টিউটর করতে পারেন। আপনাকে যা করতে হবে তা হল আপনার দক্ষতার ক্ষেত্রটি জানুন, তারপর আপনার জ্ঞানের প্রয়োজন এমন লোকেদের সঠিক শিক্ষা দেন।

আপনার স্মার্টফোন দিয়ে, আপনি ভিডিও, অডিও পাঠ বা এমনকি নিবন্ধ লিখতে এবং আপনার ছাত্রদের পাঠাতে পারেন।

ফ্রিল্যান্সিং করে কত টাকা আয় করা যায়?

বাংলাদেশে অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং থেকে আপনি মাসিক যে পরিমাণ আয় করতে পারেন তা আপনার দক্ষতার স্তর এর ওপর নির্ভর করে। আপনি যে আপনার নির্দিষ্ট দক্ষতার সেবা বা সার্ভিস গুলি অফার করেন এবং স্থানীয় বা লোকাল বাজারে সেই সার্ভিসগুলির চাহিদার উপর নির্ভর করে। 

যেমন আপনি দেশের কোনো ক্লায়েন্ট এর কাজ বা সার্ভিস দিলে আপনার আর্নিং তুলনামূলক কম হয় বাহিরের দেশের ক্লায়েন্টদের তুলনায়, বিশেষ করে ইউএসএ, ইউকে, কানাডা, অস্টেলিয়া ইত্যাদি। যার ফলে আপনার মাসিক আয়ের একটি সাধারণ হিসাব প্রদান করা কঠিন।

তারপর ও বিভিন্ন মার্কেটপ্লেস ওডেস্ক এবং ফ্রিল্যান্সারদের সাথে কথা বলে জানা যায়, একজন নতুন ফ্রিল্যান্সার মাসে ৮০০০ হাজার থেকে শুরু করে ৭৫০০০০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করে থাকে। তবে খুব নতুন হলে প্রথম কয়েক মাস কাজের অপেক্ষায় থাকতে হয় বেশিরভাগ নিউ ফ্রিলান্সারদের। নতুন অবস্থাটাই হচ্ছে ফ্রীল্যান্সিং জগতের সবচেয়ে কঠিন সময় বলে মনে করি আমি। কারণ এখানে সবকিছু সামলাতে সময় লাগে সময় দিতে হয়। পৃথিবীতে এমন কোনো ফ্রিল্যান্সার নাই যারা রাতারাতি হাজার হাজার টাকা আয় করে মাসে।

আরও পড়ুন: কপি-পেস্ট করে অনলাইনে ইনকাম করার সেরা উপায়

তবে বেশিরভাগ ফ্রিল্যান্সার মাসে প্রায় $1,000-$5,000  উপার্জন করার আশা করতে পারে। শীর্ষ 10% ফ্রিল্যান্সাররা মাসে $10,000-$20,000 উপার্জন করে এবং শীর্ষ 1%-এর সর্বোচ্চ সেলিং প্রায় $50,000 মাসে। এই বিশাল ফ্রিল্যান্সিং অ্যাকাউন্টগুলি বেশিরভাগ এজেন্সির হয়ে থাকে। যেমন বাংলাদেশের টপ ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সির মধ্যে অন্যতম খালিদ ফারহানের এজেন্সি। এখানে ক্লিক করে দেখে নিতে পারেন সে নিজে এবং তার এজেন্সি কত টাকা আয় করে মাসে।

কেন ফ্রিল্যান্সিং বেকারত্ব দূরীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে

প্রবাদ বাক্যে আছে যে, একটি জাতি যত বেশি প্রযুক্তিতে দক্ষ, সে জাতি তত বেশি উন্নত। তাই আমাদের উচিত কম্পিউটার দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে আমাদের এই বিশাল দেশের জনগোষ্ঠীকে কাজে লাগানো। বর্তমানে বিশ্বের অনন্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ফ্রিল্যান্সিংয়ের জনপ্রিয়তা বেড়েই চলছে। এখন অনেকেই ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে মাসে হাজার হাজার টাকা আয় করতেছে। 

যাইহোক, আমাদের দেশে ফ্রিল্যান্সিং-এ অনেক প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হয়। এর মধ্যে প্রথম সমস্যা হচ্ছে, উন্নত মানের ডিভাইস(ল্যাপটপ, কম্পিউটার ইত্যাদি) সম্পর্কিত সমস্যা। ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য যে ধরনের যন্ত্রপাতি প্রয়োজন তা অনেকের হাতের নাগালের বাইরে। তাই অনেকে ফ্রিল্যান্সিং শিখতে চাইলেও ডিভাইসের কারণে কাজ করতে পারে না।

তারপরও একটি আসার কথা হচ্ছে, এখন সরকার কর্তৃক প্রদক্ষেপ এর ফলে দক্ষ ও ধৈর্য্যশীল ফ্রিল্যান্সার তৈরির জন্য বিনামূল্যে কোর্সের ব্যবস্থা করেছেন। বাংলাদেশের সরকারি অর্থায়নে ‘লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং’ ফ্রি কোর্সে দক্ষ ফ্রিল্যান্সার হওয়ার পাশাপাশি নগদ অর্থ ও সার্টিফিকেটের পাশাপাশি কোর্সের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যার ফলে এখন শিক্ষিত বেকাররা ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে নিজ উদ্যোক্তা ও আত্মকর্মসংস্থানে উৎসাহিত হচ্ছে। বর্তমানে আমাদের দেশের শিক্ষিত বেকারদের ফ্রিল্যান্সিং এর সুবিধার মাধ্যমে কাজে লাগানোর সুবর্ণ সুযোগ হয়েছে। 

একজন কনটেন্ট ক্রিয়েটর এবং SEO স্পেশালিস্ট হিসেবে কয়েক বছর থেকে কাজ করে আসছেন। ২০১৭ থেকে ডিজিটাল মার্কেটিং এর নানান কাজের সাথে যুক্ত। মূলত তিনি Affiliate, YouTubing, Bloging, Free & Paid Marketing এই সব বিষয়ে অনেক বছর থেকে খুবই সাফল্যের সাথে কাজ করে যাচ্ছেন।

Related Posts

আশা এনজিও লোন ফরম

আশা এনজিও লোন পদ্ধতি। আশা এনজিও লোন ফরম ২০২৪

বেসরকারি এনজিও গুলোর মধ্যে বর্তমানে বাংলাদেশের জনপ্রিয় প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্য আশা এনজিও অন্যতম। এই এনজিও গ্রাম অঞ্চলের দরিদ্র মানুষদের থেকে শুরু করে কৃষক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, মাঝারি ব্যবসায়ী সব…

কন্টেন্ট রাইটিং শেখার উপায়

2024 – এ কন্টেন্ট রাইটিং শেখার উপায় ও সেরা কিছু টিপস বাংলাতে

কন্টেন্ট রাইটিং কি? কন্টেন্ট রাইটিং শেখার উপায় জানার আগে কন্টেন্ট রাইটিং কি তা আগে জানতে হবে কন্টেন্ট রাইটিং হচ্ছে যখন আমরা কোন সার্চ ইঞ্জিনে গিয়ে কোন কিছু…

গ্রাফিক্স ডিজাইন কি? 2024- এ কিভাবে শুরু করবেন?

গ্রাফিক্স ডিজাইন কি? 2024- এ কিভাবে শুরু করবেন?

গ্রফিক্স ডিজাইন কি? গ্রাফিক্স ডিজাইন এই ডিজিটাল দুনিয়ার সবচেয়ে জনপ্রিয় এক নাম অনলাইন অথবা অফলাইন বর্তমানে প্রায় সব সেক্টরে গ্রাফিক্সের ব্যবহার হয়। তাই যত দিন যাচ্ছে এর…

ফ্রিল্যান্সিং -এর সম্পূর্ণ গাইডলাইন [2023]

ফ্রিল্যান্সিং কি? ২০২৪ এর সম্পূর্ণ গাইড লাইন ।

ফ্রিল্যান্সিং শব্দের অর্থই হচ্ছে মুক্ত পেশা। অর্থাৎ কোনো নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির আদেশ অনুযায়ী কারো কাজ না করাকেই ফ্রিল্যান্সিং বলে। ফ্রিল্যান্সিং কি? মূলত যারা এ ধরনের কাজ…

অনলাইন থেকে আয়ের সেরা পাঁচটি ওয়েবসাইট

অনলাইন থেকে আয়ের সেরা ৫টি ওয়েবসাইট

অনলাইন থেকে আয় করার জন্য বিভিন্ন সাইড ও প্লাটফর্ম রয়েছে সেখান থেকে আপনি বিভিন্ন সাইড এর মাধ্যমে আয় করতে পারেন। বর্তমানে অনলাইন হচ্ছে ঘরে বসে আয় করার…

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *